বাজার থেকে খাঁটি গুড়ই কিনছেন তো? ভেজাল ধরার উপায় বলল এফএসএসএআই। ফাইল চিত্র।
শীত মানেই ঘরে ঘরে নলেন, ঝোলা, পাটালি গুড়ের রমরমা। দুধে-চালে ফুটিয়ে হোক বা শেষপাতে রুটির উপরে, শীতের ক’দিন রসনারাজ্যে গুড় যেন রাজমুকুটের মধ্যমণি। পায়েস থেকে সন্দেশ, রসগোল্লা, পিঠেপুলিতে নতুন গুড়ের স্বাদ বশ করে রেখেছে গোটা একটা জাতিকে। ভোরবেলায় রসবোঝাই হাঁড়ি নামিয়ে তৈরি হয় সুগন্ধি গুড়। গনগনে কাঠের আঁচে রং বদলে লালচে হয়ে ওঠা খেজুরের রসের মনমাতানো গন্ধে থমকে দাঁড়ান না, এমন রসিক মেলা ভার! তবে এখন আর সেই খাঁটি গুড় কোথায়! পাড়ার দোকান বা বাজার থেকে যে গুড় কিনে আনছেন তা আদৌ খাঁটি তো?
বেশির ভাগ খাদ্যদ্রব্যেই এখন ভেজাল। সে দুধ, ঘি, মাখন, পনির থেকে শুরু করে মশলাপাতি— বাদ যাচ্ছে না কিছুই। এমনকি চিনি, মধু ও গুড়েও মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে চকের গুঁড়ো, বেকিং পাউডার বা কাপড় কাচার সাবান। দেশের খাদ্যদ্রব্যের গুণমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বা ‘এফএসএসএআই’ ) জানিয়েছে, বাজার থেকে কেনা গুড় খাঁটি কি না তা যাচাই করে নিতে পারবেন নিজেই। কিছু পদ্ধতিও শিখিয়ে দিয়েছে এফএসএসএআই।
গুড়ের রং
গুড়ের রং সাধারণত মেটে কিংবা কালচে বাদামি হয়। যদি দেখেন, গুড়ের উপরিভাগ হলদেটে কিংবা সাদাটে দেখাচ্ছে, তা হলে বুঝতে হবে তাতে রাসায়নিক মেশানো আছে।
স্পর্শ
সামান্য একটু গুড় নিয়ে হাতের তালুতে ঘষে দেখুন। যদি তেলতেলে ভাব থাকে, তা হলে বুঝতে হবে তাতে ভেজাল মেশানো হয়েছে। সাধারণত মিনারেল অয়েল মিশিয়ে দেওয়া হয় গুড়ে। সে জন্যই তেলতেলে ভাব থাকে, খাঁটি গুড়ে যা থাকে না।
স্বাদ ও গন্ধ
গুড় কেনার সময়ে চেখে দেখুন। যদি হালকা নোনতা স্বাদ পান, তা হলে বুঝবেন তাতে ভেজাল মেশানো আছে। খাঁটি গুড় নরম হয়, তাড়াতাড়ি ভেঙে যায়। চটচটেও হয়। কিন্তু যদি দেখেন কেনা গুড় খুব শক্ত, তা হলে বুঝতে হবে তাতে চিনি বা কোনও রাসায়নিক মেশানো আছে। আসল খেজুরের গুড়ের সুবাস আনতে নানা রকম রাসায়নিক মেশানো হয় নকল গুড়ে। যাঁরা আসল গুড়ের গন্ধ চেনেন, তাঁরা ধরতে পারবেন ব্যাপারটা।
হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড টেস্ট
এফএসএসএআই খুব সহজ একটি পরীক্ষা দেখিয়েছে। এক চামচের মতো গুড় নিয়ে তাতে দুই থেকে তিন ফোঁটা হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড মেশান। যদি দেখেন, গুড় থেকে ফেনা উঠছে তা হলে বুঝতে হবে তাতে ভাল রকম রাসায়নিক মেশানো আছে। খাঁটি গুড়ে তেমন হবে না।
জলের পরীক্ষা
এক গ্লাস জল নিয়ে তাতে এক চামচ গুড় মেশান। যদি গুড়ে চকের গুঁড়ো মেশানো থাকে, তা হলে তা জমা হবে গ্লাসের তলায়। খাঁটি গুড়ে তেমন হবে না।