পোকামাকড় থেকে জন্তু-জানোয়ারের নানা রকম বিচিত্র অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ— পারলে সবই খেয়ে নেয় মানুষ। এক একটি দেশের খাবার শুনলে গা গুলিয়ে উঠবে।
এক একটি দেশের আচার-বিচার যেমন এক এক রকম, তেমনই বিচিত্র সব খাদ্যাভ্যাস। হয়তো কোনও পদ কোনও দেশের সবচেয়ে প্রিয় খাদ্য, অথচ সেটাই আপনি কোনও দিন মুখে তোলার কথা ভেবেই দেখবেন না। দেখে নেওয়া যাক তেমনই কিছু অদ্ভুত খাবারের তালিকা।
ট্যারান্টুলা ভাজা, কম্বোডিয়া: ভাতের সঙ্গে মাকড়সা ভাজা খাওয়ার কথা তো সচারচর কেউ ভাববেন না। কম্বোডিয়ায় ট্যারান্টুলা খাওয়ার চল শুরু হয়েছিল চরম দারিদ্র্য থেকেই। কিন্তু ধীরে ধীরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই খাবার। শোনা যায় অনেকটা কাঁকড়ার মতোই খেতে নাকি!
বালুট, ফিলিপিন্স: হাঁসের নিষিক্ত ডিম জ্যান্ত অবস্থায় ভেজে ফেলা হয়। তাকেই বলে বালুট। নুন, সস আর ভিনিগার দিয়ে পরিবেশন করা হয়। প্রথমে সামান্য ফাটিয়ে নিয়ে তরলটা গিলে ফেলতে হয়। তার পর বাকিটা খাওয়ার রীতি। ভ্রূণ যদি খানিক পরিণত হয়ে যায়, তা হলেও সবটা খেয়ে ফেলারই কথা।
টুনা মাছের চোখ, জাপান: টুনা মাছের চোখ আকারে বেশ বড়। তাই আলাদা করে বাজারে বিক্রি হয়। বিভিন্ন রেস্তরাঁয়ও এগুলি সয়া সস দিয়ে ভাপিয়ে রান্না করা হয়। খেতে অনেকটা স্ক্যুইডের মতো।
শিরাকো, জাপান: শিরাকো মানে ‘সাদা সন্তান’। মাছের শুক্রাণুর থলি দেখতে অনেকটা মস্তিষ্কের মতো, কিন্তু খেতে নাকি মিষ্টি কাস্টার্ডের মতো!
সাদা পিঁপড়ের ডিমের স্যুপ, লায়োস: পিঁপড়ের ডিম, কিছু পরিণত ভ্রূণ এবং কিছু সাদা পিঁপড়ে নিয়ে এই স্যুপ তৈরি হয়। নিঃসন্দেহে দুনিয়ার সবচেয়ে অদ্ভুত স্যুপগুলির মধ্যে অন্যতম। খেতে নাকি বেশ সুস্বাদু!
হরিণের নাক, কানাডা: হরিণের মাংস অনেক জায়গাতেই খাওয়া হয়। কিন্তু নাক নিয়ে সাধারণত বেশি কেউ ভাবেন না। কানাডায় অবশ্য অন্য ব্যাপার! মুসের (এক ধরনের হরিণ) নাক প্রথমে সিদ্ধ করে সব চুল সরিয়ে ফেলে মশলা মাখিয়ে রান্না করা হয়। তার উপর একটি ঝোল সামান্য জমিয়ে একটা জেলির মতো তৈরি করা হয়। খেতে কতটা সুস্বাদু হয়, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
আইরাগ, মঙ্গোলিয়া: ঘোড়ার দুধ পচিয়ে খেয়েছেন কখনও? মঙ্গোলিয়ায় এটি এমন কিছু অবাক করার মতো খাবার নয়। ঘোড়ার দুধ পচিয়ে মদের মতো তরল তৈরি করা হয়। ঠান্ডা করে বাটিতে পরিবেশন করা হয়।
মুকটুক, গ্রিনল্যান্ড: গ্রিনল্যান্ডের ইনুয়িটরা এই খাবার প্রায়ই খেয়ে থাকেন। তিমি মাছের চামড়া এবং চর্বি দিয়ে তৈরি এই খাবার কাঁচাই খেতে হয়। বড়জোর সামান্য আচার লাগানো থাকে। খেতে নাকি অনেকটা হেজেলনাটের মতো!
হকার্ল, আইসল্যান্ড: কী করে এই খাবার আইসল্যান্ডের জাতীয় পদ হয়ে গেল কেউ জানেন না। কিন্তু আইসল্যান্ডের হাঙর ধরে মাথা কেটে ফেলা হয়। তার পর বালি এবং পাথরে পুঁতে রাখা হয় দু’-তিন মাস। তার পর আবার বার করে রোদে শুকনো হয় আরও কিছু মাস। শোনা যায়, প্রথম বার যাঁরা খান, তাঁদের পক্ষে খুব একটা সুখকর হয় না অভিজ্ঞতাটা।
পুরনো ডিম, চিন: কোনও ডিম পচে গেলে কি আপনি খাবেন? চিনে কেউ খেয়েছিলেন। এবং তার পর হঠাৎই এই খাবার দেশের অন্যতন সেরা পদ হয়ে যায়! ছাই এবং মাটি মাখিয়ে ডিম রাখা হয় অনেক দিন। কুসুম পচে যখন সবুজ হয়ে সালফারের কড়া দুর্গন্ধ বেরোবে, তখন নাকি পরিবেশন করা হয়!