কেউ কেউ নিজের প্রয়োজন মেটাতে ফোন করতেন। কেউ আবার তাঁর সহকর্মীদের উদ্দেশে পার্টি রাখতেন। ওই পার্টির জন্য যৌনকর্মীদের চাইতেন অনেকে। প্রতীকী ছবি।
রাত কাটালেই বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়া যায়। কখনও ঘণ্টা-হিসাবে, কখনও বা সারা রাতের পারিশ্রমিক। শরীরের খেলায় মেতে থাকার বিনিময় তাঁদের আয়ও হয় অনেক।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের তরফে দাভোস শহরে একটি ৫ দিনের সভার আয়োজন করা হয়েছিল। ওই সভায় বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পপতি থেকে শুরু করে বহু নামী সংস্থার মালিক উপস্থিত ছিলেন। এই অতিথিদের থাকার ব্যবস্থাও হয়েছিল নজরকাড়া। দাভোসের বিলাসবহুল হোটেল এবং রিসর্টে উঠেছিলেন তাঁরা। পাশাপাশি তাঁদের জন্য হোটেলগুলিতে বেড়ে গিয়েছিল যৌনকর্মীদের আনাগোনা।
লিয়ানা নামের এক যৌনকর্মী এই প্রসঙ্গে স্থানীয় এক সংবাদপত্রে মুখ খোলেন। লিয়ানা বলেন, ‘‘আমি দামি জামাকাপড় পরে শিল্পপতিদের ভিড়ে মিশে গিয়েছিলাম। মাঝেমধ্যেই আমেরিকা থেকে আসা এক অতিথিকে পরিষেবা দিতে হত আমায়। তাঁর সঙ্গে এক ঘণ্টা কাটানোর জন্য ৭৫০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৬০ হাজার টাকা) পারিশ্রমিক দিতেন তিনি। কখনও কখনও সারা রাত থাকতে হত তাঁর সঙ্গে। তখন প্রায় আড়াই হাজার ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় দু’ লক্ষ টাকা) হাতে পেতাম।’’
দাভোস শহর থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আরাগাউ শহর। আরাগাউ শহর থেকেও যৌনকর্মীদের হোটেলে যেতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা। তিনি কয়েকজন যৌনকর্মীকে নিয়ে একটি এসকর্ট সার্ভিস চালাতেন। ওই মহিলার বক্তব্য, ‘‘শুরুর দিকে একসঙ্গে ১১ জন যৌনকর্মীকে চাওয়া হয়েছিল। তার পর আরও ২৫ জন খোঁজ নিয়েছিলেন যে, কোনও যৌনকর্মীকে পাওয়া যাবে কি না।’’
তবে এখানেই শেষ নয়, দিন দিন এই সংখ্যা বেড়েই চলেছিল বলে জানিয়েছেন ওই মহিলা। তিনি বলেন, ‘‘কেউ কেউ নিজের প্রয়োজন মেটাতে ফোন করতেন। কেউ আবার তাঁর সহকর্মীদের উদ্দেশে পার্টি রাখতেন। ওই পার্টির জন্য যৌনকর্মীদের চাইতেন অনেকে।’’
জার্মানির এক যৌনকর্মী স্যালোমে বালথাস তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার কথা টুইট করে জানিয়েছেন। স্যালোমে লিখেছেন, ‘‘রাত ২টোর সময় নিরাপত্তারক্ষীরা হোটেলের করিডরে ঘোরাফেরা করছিলেন। পরে তাঁদের সঙ্গে রেস্তরাঁ থেকে বিনামূল্যে পাওয়া চকোলেট খেয়েছি এবং হোটেলে উপস্থিত অতিথিদের নিয়ে সমালোচনা করেছি।’’
দাভোসের কাছাকাছি একটি হোটেলে উঠেছিলেন স্যালোমে। কিন্তু তিনি যাঁদের সঙ্গে রাত কাটিয়েছেন, তাঁদের পরিচয় উল্লেখ করতে চান না। বরং তিনি টুইট করে লেখেন, ‘‘রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কেউ যৌনকর্মীদের প্রতি আগ্রহ দেখান না। তাঁদের শরীরের খিদে নেই, সময়ও নেই। মাদক, যৌনতা এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক তৃতীয়টি। জীবনে অন্য কোনও বিষয়ে আগ্রহ জাগার মতো সময় দেয় না মানুষকে। বরং ভিতর থেকে সেই মানুষটিকে সম্পূর্ণ খেয়ে ফেলে।’’