চুলের গোড়া মজবুত করতে ‘হট অয়েল ট্রিটমেন্ট’-এর জুড়ি মেলা ভার। ছবি: শাটারস্টক
খোঁপা হোক কিংবা খোলা চুলের ফ্যাশন, কোনওটাই জমবে না চুলের সঠিক যত্ন না নিলে। বিয়েবাড়ি হোক বা পার্টি, চুল বাঁধনের কেরামতিতেই বদলে যেতে পারে আপনার সম্পূর্ণ লুক। বেশ খানিকটা সময় ধরে চুলে স্ট্রেটনিং করালেন, ভাবলেন পার্টিতে চমকে দেবেন সকলকে! কিন্তু কয়েক ঘণ্টা যেতেই চুল যেন কাকের বাসা! ফ্যাশনও টিকল না বেশিক্ষণ, তার উপর চুলেরও বারোটা বাজল।
ত্বকের মতোই সারা বছর ধরে চুলের যত্ন নেওয়া ভীষণ জরুরি। শীত কিংবা বর্ষাকালে আমরা চুলের বাড়তি যত্ন নিলেও বছরের বাকি সময়টায় তেমন গুরুত্ব দিই না! প্রথমেই একটি বিষয় না মেনে উপায় নেই যে, চুলের বৃদ্ধি আর ঘনত্ব ব্যক্তিভেদে পৃথক হয়। তাই ইচ্ছে করলেই মাথা ভরা চুল গজিয়ে উঠবে, এমনটা কিন্তু নয়। কিন্তু নিয়মিত যত্ন নিলে যতটুকু আছে, তার স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব। রুক্ষ চুলেই জট পড়ে বেশি। তাই প্রথমেই আপনাকে আর্দ্রতার জোগানের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রচুর জল ও তরল পানীয় খান– তা আপনার ত্বক আর চুল দুটোই ভাল রাখবে। সপ্তাহে দু’ থেকে তিন দিন আমরা শ্যাম্পু করি, কন্ডিশনার লাগাতেও ভুলি না। কিন্তু তেল? নিয়ম করে সপ্তাহে অন্ততপক্ষে দু’দিন তেল কিন্তু লাগাতেই হবে। চুলের গোড়া মজবুত করতে ‘হট অয়েল ট্রিটমেন্ট’-এর জুড়ি মেলা ভার। এমনকি, চুলের প্রকৃতি তৈলাক্ত হলেও তার যত্ন নিতে ভরসা রাখুন হট অয়েল মাসাজের উপরেই। শুষ্ক চুলে প্রাণ ফেরানো থেকে শুরু করে চুল পড়া রোধ, সবেতেই তেলের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
আরও পড়ুন:ঠোঁটের কালচে দাগ কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না! ভরসা রাখুন এই সব ঘরোয়া উপায়ে
প্লাস্টিক নয়, ব্যবহার করুন কাঠের চিরুনি।
আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কী কী রয়েছে তার উপরেও কিন্তু চুলের গ্রোথ নির্ভর করে। খাদ্যতালিকায় যেন সঠিক মাত্রায় ফ্যাট, প্রোটিন, ভিটামিন আর মিনারেল থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখবেন। সম্ভব হলে রাতে ঘুমোনোর সময় চুলটা আলগা করে বেঁধে নিন, তা না হলে বালিশে ঘষা লেগে তার স্বাস্থ্যহানি হবে। খুব ভাল হয় সিল্ক বা স্যাটিনের বালিশের কভার ব্যবহার করলে। অনেকেই রাতে বেলায় বাড়ি ফিরে শ্যাম্পু করেন, আর সেই ভেজা চুল নিয়েই শুয়ে পরেন। এমনটা একেবারেই করা ঠিক নয়।এমনিতেই ভেজা চুল চট করে ভেঙে যায়, তার উপর বালিশে দীর্ঘক্ষণ ঘষা খেলে তার অবস্থা আরও খারাপ হবে। লম্বা চুল রাখতে অনেকেই পছন্দ করেন। লম্বা চুলের আশায় দীর্ঘদিন চুলে কাটিং করান না অনেকেই। আর সেখানেই করে বসেন মস্ত ভুল। ডগার দিকটা রুক্ষ হয়ে গেলে ছেঁটে ফেলুন সবার আগে। তা হলে চুলের বৃদ্ধিও দ্রুত হবে আর চুলের স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে। চুলের সুস্বাস্থ্য চাইলে অবশ্যই দূরে থাকবেন হিট স্টাইলিং থেকে।
আরও পড়ুন:এ বার বাড়িতেই সেরে ফেলুন নেল আর্ট, জেনে নিন সহজ উপায়
চুলের যত্ন নিতে পার্লারে গিয়ে হরেক নামের ও হরেক দামের ‘হেয়ার স্পা’ করান। এতে সময় আর টাকা দুটোই ব্যয় হয় অনেকখানি। বাড়িতেই বানিয়ে ফেলতে পারেন এমন ঘরোয়া প্যাক, যা চুলকে নরম, মসৃণ রাখতে সাহায্য করবে। জট পড়া এড়াতে চুলে প্যাক লাগান সপ্তাহে অন্তত একদিন। আমন্ড তেল, মধু আর দইয়ের প্যাক চুলের রুক্ষতা দূর করতে বিশেষ কার্যকর। লেবুর রস আর ডিমের কুসুম মিশিয়ে নিয়েও লাগাতে পারেন। এই প্যাক ফিরিয়ে আনতে পারে চুলের হারানো জেল্লা। তোয়ালে দিয়ে চুল পেঁচিয়ে মাথার উপর তুলে রাখার অভ্যেস থাকলে অবিলম্বে সেটি ত্যাগ করুন। পুরোনো ও নরম টি শার্ট দিয়ে আলতো হাতে চুলের জল শুকিয়ে নিন। চুল শুকিয়ে এলে মোটা দাঁড়ার চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াবেন। সে ক্ষেত্রে প্লাস্টিক নয়, ব্যবহার করুন কাঠের চিরুনি ।