বর্ষাকালে হঠাৎ গরম আবার ঠান্ডার কারণে কখনও কখনও শরীর ঘামে ভেজা থাকে। ভিজে থাকার কারণে আর্মপিটের চারপাশে ঘামাচি, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, ডার্মাটোফাইটস জাতীয় নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়৷
ভেজা আর্মপিট ভাল ভাবে না মুছলে, স্যাঁতসেতে জামাকাপড় পরলে বা ভিজে থাকা তোয়ালে ব্যবহার করলেও এ ধরনের রোগ হতে পারে বলে জানালেন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ সন্দীপন ধর। তিনি আরও বললেন, ‘‘যাঁদের ওজন বেশি, ঘাম হয় খুব এবং পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সচেতন নন, তাঁদের এই রোগ হতে দেখা যায়। যাঁদের শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, ডায়াবিটিস, থাইরয়েড বা ক্যানসারে আক্রান্ত কিংবা দীর্ঘ দিন ধরে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খাচ্ছেন, তাঁদেরও এই রোগের সম্ভাবনা বেশি।’’
ছত্রাকে আক্রান্ত স্থানটি একটু লালচে হয়ে যায় এবং চুলকাতে থাকে, জ্বালাও করে। তবে সংক্রমণটির মূলে ব্যাকটিরিয়া দায়ী হলে চুলকানি না হয়ে, ফোস্কা বা ফোঁড়া হয়ে পুঁজ বেরোয়। সঙ্গে দুর্গন্ধও থাকতে পারে। এ ছাড়া আর একটি বিশেষ ধরনের ব্যাকটিরিয়া এরিথ্রাজ়মাতে আক্রান্ত হলে কোনও উপসর্গই দেখা দেয় না। শুধুমাত্র ওই অংশে লাল প্যাচ দেখা দেয়। এ ছাড়া কখনও অ্যালার্জি থেকেও আর্মপিটে চুলকানি বা অন্য সমস্যা হতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ ও মলম লাগালেই দু’-তিন সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠবেন রোগী। ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণ হলে অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে। অ্যালার্জি থেকে সমস্যা হলে, স্টেরয়েড জাতীয় মলম লাগাতে ও অ্যান্টি অ্যালার্জিক ওষুধ খেতে দেওয়া হয়। কিন্তু সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে এবং আরও বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে পড়লে, ব্যথা বাড়লে, পুঁজ বেরোলে, গ্ল্যান্ড ফুলে উঠলে, জ্বর হলে বিষয়টি চিন্তার কারণ হতে পারে।
সমস্যা থেকে দূরে থাকার জন্য ডা. ধরের পরামর্শ, কখনও শরীরে ঘাম বসতে দেবেন না। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন নিজেকে। দিনে দু’বার স্নান করতে পারলে ভাল, কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিক সাবান বা জেল দিয়ে নয়। এগুলো শরীরের ভাল ব্যাকটিরিয়াকে ধংস করে। নিয়মিত তোয়ালে কাচবেন আর অন্যের ব্যবহৃত তোয়ালে, রুমাল, চাদর ব্যবহার করবেন না। ডিয়োডোরেন্ট ব্যবহার করতে পারেন, কারণ তা শরীরের সেই অংশকে শুকনো রাখে। তবে দূরে থাকুন ট্যালকম পাউডার, আয়োডিন ইত্যাদি থেকে।