বিভিন্ন গ্রামের জলখাবার। ছবি: সংগৃহীত।
পুজোর ক’টা দিন বন্ধুদের সঙ্গে হয় দুপুরে নয় রাত্রে বাইরে খাওয়ার পরিকল্পনা করা রয়েছে। দু’বেলা রেস্তরাঁর খাবার খেলে সকালটা হালকা কিছু খাওয়াই ভাল। কিন্তু পুজোর ক’দিন সেই দুধ-কর্নফ্লেক্স, না হয় দুধ-ওট্স খেতে কারই বা ভাল লাগে? অনেক বাড়িতেই সকালের জলখাবারে রুটি কিংবা টোস্ট খাওয়ার চল রয়েছে। পুজোর ছুটি কম থাকতে পারে, ঠাকুর দেখতে না-ও যেতে পারেন। কিন্তু খাবারে বৈচিত্র থাকতেই হবে। অষ্টমীতে বাংলার লুচি-ছোলার ডাল তো আছেই, অন্য দিনগুলিতে দেশের বিভিন্ন প্রদেশের গ্রামের বিখ্যাত সব খাবার কিন্তু জলখাবারে থাকতেই পারে।
১) বাংলার লুচি-আলুর দম
উৎসব-অনুষ্ঠান তো বটেই, লুচি খেতে বাঙালির কোনও কারণ লাগে না। গরম, ফুলকো লুচির সঙ্গে নিরামিষ আলুর দম কিংবা ছোলার ডাল একেবারে অমৃত। পুজোর একটা দিন থাকতেই পারে জলখাবারে।
২) পাঞ্জাবের পরোটা
লুচি এবং পরোটা— এক গোত্রের হলেও তাঁদের নিয়ে খাদ্যরসিকদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব রয়েছে। তবে প্রচুর তেলে ভাজা ময়দার পরোটার বদলে যদি আলু, ফুলকপি, পালং শাক কিংবা পনিরের পুর ভরা পরোটা তন্দুরে সেঁকে নিতে পারেন, খেতে দিব্য লাগবে। পাঞ্জাবে সাধারণত এই পরোটা খাওয়া হয় টক দই এবং আচার দিয়ে।
কেরলের বিখ্যাত খাবার পুত্তু থাকতে পারে সকালের জলখাবারে। ছবি: সংগৃহীত।
৩) কেরলের পুত্তু
দক্ষিণী খাবার মানেই দোসা, ইডিলি নয়। কেরলের বিখ্যাত খাবার পুত্তু থাকতে পারে সকালের জলখাবারে। চালের গুঁড়ো এবং নারকেল কোরা মেখে বাঁশের মতো নলাকার একটি পাত্রে ভরে ভাপিয়ে তৈরি করা হয় এই খাবার। সঙ্গে থাকে কাবুলি ছোলা বা কলা দিয়ে তৈরি সব্জি।
৪) মহারাষ্ট্রের পোহা
কোথাও চিঁড়ের পোলাও, কোথায় পোহা— চিঁড়ে দিয়ে তৈরি এই খাবার দেশের সর্বত্রই পাওয়া যায়। তবে মহারাষ্ট্রেই পোহা খাওয়ার চল বেশি। হজমে সহায়ক, ক্যালোরির দিক থেকেও নিরাপদ। তাই সকালের জলখাবারে পোহা খাওয়া যেতেই পারে।
আসামের গ্রামাঞ্চলে জলখাবার হিসাবে খুবই জনপ্রিয় হল জলপান। ছবি: সংগৃহীত।
৫) আসামের জলপান
আসামের গ্রামাঞ্চলে জলখাবার হিসাবে খুবই জনপ্রিয় হল জলপান। মুড়ি কিংবা চিঁড়ের সঙ্গে বাড়িতে পাতা দই মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই খাবার। সঙ্গে কেউ চিনি, কেউ আবার গুড় মিশিয়ে নিতে পছন্দ করেন। স্বাদ আরও বাড়িয়ে তুলতে নারকেল কোরাও দেন অনেকে। পুজোর একটা দিন স্বাদ বদল করতে এই খাবার খাওয়া যেতেই পারে।
৬) গুজরাতের থেপলা
ধোকলার মতোই গুজরাতের আরও একটি বিখ্যাত খাবার হল থেপলা। টক দই, বিভিন্ন মশলা, মেথি শাক এবং আমচুর পাউডার, আটা কিংবা বেসনের সঙ্গে মিশিয়ে মণ্ড তৈরি করা হয়। রুটির মতো বেলে চাটুতে সেঁকে নিয়ে একপিঠে ঘি মাখিয়ে নিলেই তৈরি থেপলা। টক দই বা আচার সহযোগে এই থেপলা খেতে মন্দ লাগে না।
৭) বিহারের ছাতুর শরবত
সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি আগুনের সামনে যেতে ভাল না লাগে, ছাতুর শরবত খেতেই পারেন। সামান্য নুন, চিনি এবং লেবুর রস দিয়ে ছাতুর শরবত খাওয়া হয় দেশের বিভিন্ন জায়গায়। তবে বিহারে এই ছাতুর শরবত পেঁয়াজ কুচি, কাঁচা লঙ্কা, ভাজা মশলা এবং লেবুর রস সহযোগে ছাতু খাওয়ার চল রয়েছে বিহারে। প্রচলিত ছাতুর শরবত না খেয়ে এক বার বিহারের এই পানীয়ে চুমুক দেওয়া যেতে পারে।