‘হোয়েন হ্যারি মেট সান্তা’ বিজ্ঞাপনের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
সান্তা বুড়োর ঠিকানা নাকি উত্তর মেরুতে। সেখানে তার সংসারে কে আছে, তা নিয়ে খুব একটা কৌতূহল কারও নেই বললেই চলে। প্রত্যক বড়দিনে ঘরে ঘরে শিশুরা তার কাছ থেকে উপহার পেলেই খুশি। সান্তার স্ত্রীর কথা কোনও কোনও লোকগল্পে শোনা গেলেও, তার ব্যক্তিগত জীবনকে কেউ সে ভাবে পাত্তা দেন না। দুনিয়াজুড়ে বাচ্চারা সারা বছর কতটা দুষ্টুমি করল, তা খেয়াল রেখে সেই বুঝে উপহার দেওয়াই যেন সান্তার মূল লক্ষ্য। কিন্তু নরওয়ের ডাক বিভাগ এ বছর সেই কাজ থেকে সান্তাকে খানিকটা হলেও ছা়ড় দিয়েছে। বাড়ি বাড়ি উপহার না পৌঁছে সান্তা এ বারের বড়দিন কাটাবে তার নতুন বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে!
সান্তার বয়ফ্রেন্ড। ছবি: সংগৃহীত
১৯৭২ সাল থেকে সমকামিতা আর অপরাধ বলে গণ্য করা হয় না নরওয়েতে। ২০২২ সালে ৫০ বছর পার হবে এই ঘটনার। তারই উদ্যাপনে একটি বিজ্ঞাপন বানিয়েছে নরওয়ের ডাক বিভাগ। প্রায় সাড়ে তিন মিনিটের এই বিজ্ঞাপন যেন আস্ত একটি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি! গল্প অনেকটা বিখ্যাত ইংরেজি রোমান্টিক কমে়ডি ‘হোয়েন হ্যারি মেট স্যালি’র আদলে। তাই এই বিজ্ঞাপনের নামও ‘হোয়েন হ্যারি মেট সান্তা’। এক রাতে উপহার রাখতে গিয়ে সান্তাকে দেখে ফেলে হ্যারি। তার পর থেকেই তাদের দেখা-সাক্ষাৎ এবং কথোপকথন শুরু হয়। কিন্তু বছরের একটি দিনেই তা সীমিত। বড়দিনের আগের রাতে সান্তা আসে এবং খানিক গল্প করে যায়, কখনও উপহারও রেখে যায়। কিন্তু বেশি ক্ষণ সময় দিতে পারে না। কারণ অন্য বাচ্চাদেরও উপহার পৌঁছতে চলে যেতে হয়। কিন্তু এ বছর হ্যারি একটি চিরকুটে লিখে দেয়, ‘এ বছর বড়দিনে শুধু তোমাকে চাই’। সেই ইচ্ছা রাখে সান্তা। ছবির শেষে তাদের দু’জনের চুম্বন দেখে মন আনন্দ ভরে যায় দর্শকের।
এই বিজ্ঞাপন খুব তা়ড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে নেটমাধ্যমে। অনেকেই ইউটিউবে মন্তব্য করেছেন, সত্যিই এই নিয়ে পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি হওয়া উচিত। সমকামী সান্তা, এমনকি সান্তার প্রেম জীবন নিয়েও এর আগে কেউ ভেবেছেন কি না, জানা নেই। কিন্তু নরওয়ের ডাক বিভাগের এই প্রয়াশ যে মানুষের মন ছুঁয়ে গিয়েছে, তা নিয়ে কোনও দ্বিধা থাকবে না নেটমাধ্যমে মন্তব্যগুলি পড়লে। ছবির শেষে একটি সুন্দর বার্তাও লক্ষ্যণীয়, ‘৫০ বছর ধরে যাকে ইচ্ছা ভালবাসার অধিকার পেয়েছে নরওয়ে’।