আমেরিকার জনপ্রিয় ব্যান্ডের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ শুরু সব্যসাচীর।
আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা নিয়ে হইচই কাটতে না কাটতেই আবারও খবরের শিরোনামে এসেছেন তিনি। ডিজাইনার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায় এ বার দ্বিতীয় দফায় পাড়ি দিচ্ছেন নিউ ইয়র্কের এক অতি নামী ব্র্যাডের সঙ্গে কাজ করতে। সেখানকার বিলাসবহল বিপণি বার্গডর্ফ গুডম্যানে আবারও সব্যসাচীর সৃষ্টি দেখা যাবে জেনে উত্তেজনা ছড়িয়েছে সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের মধ্যে। কিন্তু এ দেশে কেন এত হইচই, সব্যসাচীর পোশাক-গয়না তো পাওয়া যায় গোটা দুনিয়া জুড়েই? ডিজাইনারের ইনস্টাগ্রাম পোস্ট দেখলেও চোখে পড়বে, ওই বিপণিতে কী ধরনের কাজ দেখাবেন তিনি, তার ছবিতেই ভরে গিয়েছে অ্যাকান্টটি। ব্র্যান্ড সব্যসাচীই বা এত উত্তেজিত কেন এই নতুন সম্পর্ক নিয়ে?
এই উত্তেজনার কারণ লুকিয়ে আছে বার্গডর্ফ গুডম্যানের ইতিহাসে। ১২২ বছরের পুরনো এই বিপণি এখনও নিউ ইয়র্ক তথা গোটা আমেরিকার ফ্যাশন জগতে অতি গুরুত্বপূর্ণ নাম। ১৮৯৯ সালে হারম্যান বার্গডর্ফ নামে এক সাহেব নিউ ইয়র্ক শহরের মিডটাউন ম্যানহ্যাটন এলাকার ফিফথ অ্যাভিনিউয়ে এই বিপণিটি খোলেন। পরবর্তী কালে এর দায়িত্ব নেন অ্যান্ড্রু গুডম্যান নামে আর এক সাহেব। দিনে দিনে নিউ ইয়র্কের ফ্যাশন পাড়ায় নাম ছড়িয়ে পড়ে এই বিপণির। সেখানকার উচ্চবিত্তের খুবই পছন্দের জায়গা হয়ে ওঠে বার্গডর্ফ আর গুডম্যানদের এই দোকান। দেশ-বিদেশের রকমারি ফ্যাশন সামগ্রী পেতে এখানে জড়ো হতেন গোটা আমেরিকার তাবড় নামী পরিবারের সদস্যেরা। বিলাসবহুল সাজসজ্জায় মাততে চাইলে এখানে এক বার না গেলে মন উঠত না নিউ ইয়র্কের বিত্তবানেদের।
গোটা দুনিয়ায় যে সব জায়গায় প্রথম রেডিমেড পোশাক বিক্রির চল হয়, এই বিপণি তার মধ্যে প্রথম সারির। এখন গোটা বিশ্বের সব নামী ব্র্যান্ড মুখিয়ে থাকে এখানে নিজেদের কাজ প্রদর্শনের জন্য। এর ফলে বিশ শতকের মাঝামাঝির মধ্যে এই বিপণি হয়ে ওঠে নিউ ইয়র্কের সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রও। সে শহরের মানুষজন, জীবনযাপন নিয়ে নানা কথায় উঠতে থাকে এই বিপণির নাম। বার্গডর্ফ গুডম্যানের প্রসঙ্গ উঠতে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন ‘সেক্স অ্যান্ড দ্য সিটি’, ‘ওশেনস্ ৮’, ‘দ্যাট টাচ অব মিঙ্ক’-এর মতো হলিউডের জনপ্রিয় সব ছবিতে।
আগামী ১৮ তারিখ থেকে এক মাস সেই ঐতিহাসিক বার্গডর্ফ গুডম্যানেই দেখা যাবে সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের শিল্প। সব্যসাচী জানিয়েছেন, আগের দফায়, গত বছরের শেষের দিকে শুধু নিজের গয়না প্রদর্শন করেছিলেন তিনি। এ বার সেই বিপণিতে তাঁর শাড়ি, লহেঙ্গাও থাকছে। সঙ্গে মিলবে সাজের বিভিন্ন আনুষঙ্গীকও।
ভারতীয় ডিজাইনারদের সচরাচর দেখা যায় না এই বিপণিতে। ফলে এখানে নিজের কাজ দেখানোর সুযোগ পেয়ে খুবই উত্তেজিত সব্যসাচী। তিনি বলেন, ‘‘আশা রাখি, এর পরে আরও অনেক ভারতীয় ডিজাইনার এখানে নিজেদের কাজ দেখাতে পারবেন।’’