বাড়ির দেওয়ালকেই করে তুলুন ক্যানভাস। পছন্দ মতো ছবি কিংবা আর্ট ইনস্টলেশনের মাধ্যমেও বৈচিত্র আনতে পারেন অন্দরসাজে
Home Decor

Room Decoration: দেওয়ালেরও প্রাণ আছে

দেওয়াল জুড়ে ভারী কাজ করাতে পারেন বা ছিমছাম ইনস্টলেশন। দেওয়ালের আয়তন এবং আপনার বাজেটের উপরে নির্ভর করবে ডিজ়াইন।

Advertisement

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:১২
Share:

দেওয়াল যখন ক্যানভাস

ঝাড়গ্রামের কাছে খোয়াবগাঁয়ের কথা এখন অনেকেরই জানা। সেখানকার আদিবাসীরা গোটা গ্রামটাই রং তুলির মাধ্যমে সাজিয়ে তুলেছেন। বাড়ির দেওয়াল, উঠোন জুড়ে যেন রঙের উৎসব। ঘরের দেওয়ালে ছবি আঁকা আদিবাসীদের বিশেষত্ব। গ্রামের মাটির বাড়িগুলোর কথাই ধরা যাক। দেওয়ালে আলপনা, উঠোন ভরে খড়িমাটির আঁক... এই ট্রেন্ডই এখন আর্বান ইন্টিরিয়রের নতুন স্টাইল। ঘরের দেওয়াল জুড়ে রঙিন ছবি আঁকা বা ঘরের একটি নির্দিষ্ট কোণে মোটিফ আঁকার ঝোঁক দেখা যাচ্ছে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে।

Advertisement

ওয়াল আর্টের নানা রকম আছে। ফোটোফ্রেম, ওয়াল হ্যাঙ্গিং, ওয়াল প্লেট... এ ধরনের অন্দরসজ্জা নতুন নয়। ছক ভাঙার জন্যই এখন অনেকে বেছে নিচ্ছেন ওয়াল পেন্টিং। ঘরের দেওয়ালে রঙিন ছবি বা কারুকাজের ট্রেন্ড জনপ্রিয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইন্টিরিয়র সংস্থা বা পেন্ট প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো স্টিকার আর্ট নিয়ে এসেছে। এ ছাড়াও রয়েছে ওয়াল ইনস্টলেশন। আপনার ঘরের আয়তন, বাজেট এবং রুচি মতো বেছে নিন দেওয়ালসজ্জা।

দেওয়াল জুড়ে ছবি-কথা

Advertisement

পেশাদার শিল্পীদের দিয়ে ছবি আঁকাতে পারেন, আর যদি নিজে রং-তুলিতে পারদর্শী হন, তা হলে তো কথাই নেই। বাড়িতে ঢোকার মুখে সদর দরজার পাশ দিয়ে আঁকতে পারেন। আপনার বাড়ি স্বতন্ত্র পরিচয় বহন করবে। ড্রয়িংরুমের একটি দেওয়াল কিংবা একটা নির্দিষ্ট কোণ, বেড রুমে কোনও দেওয়াল ছবি এঁকে সাজিয়ে তুলতে পারেন। প্রথমে ঠিক করে নিন কী আঁকবেন। দেওয়ালের লম্বা-চওড়া মাপ নিয়ে আঁকার কাজ শুরু করতে হবে। মধুবনী, পটচিত্র স্টাইলে কিছু আঁকতে পারেন অথবা দেওয়াল জুড়ে বাগান বসিয়ে দিতে পারেন। মুরাল, অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্টও ড্রয়িং রুমে ভাল লাগবে।
গ্রাফিতি বা ডুডল আর্টও মন্দ হবে না। টিনএজারের রুমে এই স্টাইল ভাল মানাবে। স্টাডি বা কাজের জায়গার ব্যাকগ্রাউন্ডেও ডুডল আর্ট করতে পারেন। নিজস্ব ছাদ থাকলে সেখানকার দেওয়ালে পছন্দমতো ছবি আঁকতে পারেন। সামনে বসার জায়গা বা দোলনা রাখলে চমৎকার বৈঠকী মেজাজ আসবে। বাড়ির বারান্দাতেও আঁকা যায়। যদি নিজের হাত পাকাতে চান, তা হলে ছাদ বা বারান্দার দেওয়াল দিয়ে শুরু করুন।

ট্রি মোটিফ ইনস্টলেশন। ডান দিকে, ছোটদের ঘর

ছোটদের ঘরে এই সজ্জা ভাল মানায়। ঘরের একটা দেওয়ালে অ্যাকোয়ারিয়াম বা সমুদ্রের মতো এফেক্ট এঁকে দিতে পারেন। কিংবা ওদের পছন্দের কোনও কার্টুন চরিত্র। ঘরের সিলিং জুড়ে গ্যালাক্সি আঁকা থাকলে ছোটদের পছন্দ হবে। ‘ক্ষীরের পুতুল’ কিংবা ‘আবোল তাবোল’-এর চরিত্র আঁকালেও বেশ অন্য রকম হবে। তবে সবচেয়ে জরুরি ভাল রং ব্যবহার করা। নয়তো কিছু দিন পরেই উজ্জ্বলতা কমে যাবে।

স্টিকার স্টাইল

দেখে মনে হবে ছবি, কিন্তু আসলে স্টিকার। অনলাইনেই এ ধরনের স্টিকার পাওয়া যায়। বিভিন্ন মোটিফের থ্রি-ডি স্টিকারও রয়েছে। রং প্রস্ততকারক সংস্থাগুলোও তাঁদের ক্যাটালগে এখন স্টিকার ডিজ়াইন নিয়ে এসেছে। বিশেষ ধরনের আঠা দিয়ে এটি দেওয়ালে আটকে দেওয়া হয়। তুলে ফেলাও সহজ। হিট গান দিয়ে আঠা গলিয়ে ধীরে ধীরে টেনে স্টিকার তুলে ফেলা যায়। এতে দেওয়ালের ক্ষতিও হয় না।

আর্ট ইনস্টলেশন

দেওয়াল জুড়ে ভারী কাজ করাতে পারেন বা ছিমছাম ইনস্টলেশন। দেওয়ালের আয়তন এবং আপনার বাজেটের উপরে নির্ভর করবে ডিজ়াইন। মেটাল, সেরামিক, গ্লাস... নানা জাতীয় ইনস্টলেশন আর্ট করতে পারেন। থ্রি-ডি ইনস্টলেশন ডেকরের চাহিদাও খুব বেশি। অনলাইনেই বেছে নিতে পারেন পছন্দ মতো সজ্জা। সাধারণত বসার ঘর বা শোয়ার ঘরেই এই ধরনের কারুকাজ মানায়। ভারী আর্টওয়ার্ক হলে সেটি দেওয়ালে ঠিক মতো বসাতে হবে। ছোটখাটো আর্টওয়ার্ক জোরালো আঠার সাহায্যেই ফিট করা যায় এখন। তবে এ ধাঁচের অন্দরসজ্জায় পেশাদারের সাহায্য নেওয়া উচিত।
খেয়াল রাখবেন, দেওয়ালে ছবি আঁকালে ঘরের বাকি আসবাব যেন তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। আঁকার রঙের সঙ্গে মিলমিশ করেই ঘরের বাকি অংশ সাজান। ওই আর্টওয়ার্কই আপনার ঘরের স্টেটমেন্ট। তাই সেটি যাতে অন্য আসবাবে আড়াল না হয়ে যায়, সে দিকে খেয়াল রাখুন। লাইটের ব্যবহারে বৈচিত্র আনতে হবে। সুন্দর করে সাজালেন, কিন্তু সেখানে যদি আলো কম হয়ে যায়, তা হলে সাজটাই মাটি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement