পোষা বিড়ালের ডায়েট কেমন হলে তার পুষ্টির ঘাটতি হবে না? ছবি: ফ্রিপিক।
পোষ্যকে কী খাওয়াবেন আর কী নয়, এই নিয়ে চিন্তায় থাকেন অনেকেই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বাড়িতে রান্না করা ডাল-ভাত বা দই-ভাতই অনেকে খাওয়াচ্ছেন পোষ্য কুকুর বা বিড়ালকে। মাছ বা মাংস হয়তো সপ্তাহে দু’দিন বা তিন দিন দিচ্ছেন। এমন খাদ্যাভ্যাস কি ওদের জন্য স্বাস্থ্যকর?
প্রোটিন পোষা কুকুর ও বিড়ালের জন্য খুবই জরুরি। পশু চিকিৎসক চন্দ্রকান্ত চক্রবর্তীর মতে, মানুষের যেমন ওজনের প্রতি কিলোগ্রামের হিসেবে ১ গ্রাম করে প্রোটিন দরকার হয় রোজই, কুকুরদের ক্ষেত্রে তা আরও বেশি। তাদের দেহ ওজনের প্রতি কিলোগ্রামের হিসেবে দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা ২.২ গ্রামের বেশি, বিড়ালদের তা প্রায় ৪.৫ গ্রাম। কাজেই রোজের খাদ্যতালিকায় প্রোটিন দিতেই হবে পোষা বিড়ালকে। কেবল দুধ-ভাত বা দই-ভাত মেখে দিলে তাদের দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হবে না। ফলে পুষ্টির ঘাটতি থেকে যাবে।
বিড়ালের পুষ্টির জন্য জরুরি ৪৩ রকম ‘মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট’ যার মধ্যে বিভিন্ন রকম ভিটামিন, খনিজ, অ্যামাইনো অ্যাসিড ও ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। বিড়ালের হার্ট ভাল রাখতে ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত খাবার রোজ দিতেই হবে। মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। বিড়ালের শরীরে ওমেগা-৩ এর ঘাটতি হলেই নানা প্রদাহজনিত রোগ, চর্মরোগের ঝুঁকি বাড়বে।
পোষ্য বিড়ালের ডায়েট এমন হবে, যাতে পর্যাপ্ত ভিটামিন ও প্রোটিন থাকে। এই ভারসাম্য বিগড়ে গেলে হার্টের স্বাস্থ্যও বিগড়ে যাবে, রক্তাল্পতার লক্ষণ দেখা দেবে। তাই রোজই পোষ্যের খাবারে মাছ, মাংস বা ডিম ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে রাখতেই হবে। ভাতের সঙ্গে ডিম সেদ্ধ বা ডিমের সাদা অংশ খাওয়াতে পারেন । চিকেন দিলে তেল ছাড়া সেদ্ধ চিকেনই ভাল। সঙ্গে সব্জি থাকতে পারে। নিরামিষের মধ্যে সয়াবিন, মটরে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট ভাল পরিমাণে থাকে। গাজর সিদ্ধ করে বা চটকে খাওয়াতে পারেন। এতে প্রোটিনের পাশাপাশি বিটা-ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ-র চাহিদাও পূরণ হবে। পোষা বিড়ালকে কাঁচা মাছ না দিয়ে বরং রান্না করে দিলেই ভাল। কাঁচা মাছ বা মাংসে এমন জীবাণু জন্মায় যা ওদের শরীরে সংক্রমণজনিত রোগের কারণ হতে পারে।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। পোষ্য কোন প্রজাতির, তার
ওজন কত, শারীরিক অবস্থা কেমন সব দেখেশুনেই ডায়েট ঠিক করতে হবে। এই বিষয়ে পশু
চিকিৎসকের মতামত নেওয়া জরুরি।