খেলাধূলার বয়সে শিশুর উপর বাড়তি বোঝা চাপাচ্ছেন না তো?
ইদানীং অনেক বাবা-মা মনে করেন, শিশুদের পড়াশোনা যত কম বয়স থেকে শুরু করা যায়, ততই ভাল। এক সময় পাঁচ বা ছয় বছর বয়সে বাচ্চারা প্রথম স্কুলে যাওয়া শুরু করত। তার আগে বাড়িতেই চলত তাদের লেখাপড়ার প্রস্তুতিপর্ব। আজকাল বেশির ভাগ শিশুর বাবা-মা দু’জনেই কর্মরত। তাই অভিভাবকদের মধ্যে তিন, দুই এমনকি দেড় বছর বয়সেও বাচ্চাকে স্কুলে ভর্তি করানোর প্রবণতা তৈরি হয়েছে। শুধু স্কুলে ভর্তি করিয়েই শান্ত হচ্ছেন না অভিভাবকরা, বাড়িতেও চলছে শিশুদের টিউশন ক্লাস। অল্প বয়সে শিশুদের টিউশন শুরু করানো কি আদৌ সঠিক সিদ্ধান্ত? কী মনে করেন বিষেশজ্ঞরা?
এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হল আপনার শিশুর বয়স। ইদানীং অনেক অবিভাবক তাঁদের আড়াই-তিন বছরের সন্তানদের জন্য বাড়িতে একজন শিক্ষক নিয়োগ করেন। তাঁরা চান, তাঁদের সন্তান যেন লেখাপড়ার প্রতিযোগিতার দৌড়ে সব সময় প্রথম হয়। তবে এই বয়সে খেলাধূলা বা সামগ্রিক বিকাশকে দূরে সরিয়ে রেখে পড়াশোনার বিষয় অতিরিক্ত কড়াকড়ি কিন্তু মোটেই ভাল নয়।
প্রতীকী ছবি।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পাঁচ বছর বয়সে শিশুদের মস্তিষ্কের ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত বিকাশ ঘটে যায়। শিশুর বিকাশকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। মানসিক বিকাশ, স্নায়ুগত বিকাশ এবং বিভিন্ন কাজের মধ্যে যোগসূত্র বুঝতে পারার ক্ষমতা। তিন বছর বয়স থেকে শিশুদের এই তিনটি ক্ষমতার বিকাশ ধীরে ধীরে হতে শুরু করে। শিশুরা এই বয়সে খুব তাড়াতাড়ি শিখতে শুরু করে। এই বয়সে শিশুদের স্মৃতিশক্তিও বেশ ভাল থাকে। তাই এই বয়স থেকেই খেলার ছলে শিশুদের মানসিক বিকাশ তৈরির উপর জোর দিতে হবে। তবে তার জন্য প্রাইভেট টিউটরের প্রয়োজন নেই। বাড়ির সদস্যদের মধ্যে থেকেই এমনটা করা সম্ভব। বাড়িতে দাদা-দিদি, ঠাকুমা-দাদুর কাছে তারা যে ভাবে আত্মপ্রকাশ করতে পারবে, বাইরের কোনও শিক্ষকের সামনে এমনটা হবে না।
তাই আর পাঁচজন কী করছে সেটা ভেবে নয়, আপনার শিশুর কি আদৌ এই বয়সে শিক্ষকের প্রয়োজন আছে, তা মাথায় রেখে তবেই শিক্ষক নিয়োগ করুন।