মহারাষ্ট্রের পালঘরেও রয়েছে দিল্লির শ্রদ্ধা-কাণ্ডের ছায়া। ছবি: সংগৃহীত।
কারও সঙ্গে একত্রবাসের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কি মেয়েদের আর একটু সতর্ক হওয়া প্রয়োজন? ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দুই তরুণীর খুনের ঘটনায় এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দু’টি ঘটনার একটি হয়েছে দিল্লিতে, অন্যটি মহারাষ্ট্রের পালঘরে। দু’টি ঘটনাতেই রয়েছে দিল্লির শ্রদ্ধা-কাণ্ডের ছায়া। শ্রদ্ধার মতো দু’টি ঘটনাতেই খুন হয়েছেন সঙ্গিনী। যাঁরা খুন করেছেন, তাঁদের ভরসাতেই বাবা-মায়ের বাড়ি ছেড়েছিলেন এই দুই কন্যাই। এক জনের দেহ পাওয়া গিয়েছে ফ্রিজের ভিতর। অন্য জনের দেহ ঢুকিয়ে রাখা ছিল বিছানার গদির ভিতরে। দ্বিতীয় ঘটনাটিই ঘটেছে মহারাষ্ট্রের পালঘরে।
লিভ ইন সম্পর্কই কি কাল হল তবে?
‘লিভ ইন’। আধুনিক দুনিয়ায় খুবই চেনা শব্দ। বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানে যাঁরা বিশ্বাস করেন না কিংবা বিয়ের আগে সঙ্গীকে যাঁরা আরও ভাল করে চিনতে চান, তাঁদের অনেকেই লিভ ইন করতে শুরু করেন। লিভ ইনে যেমন বিবাহিত জীবনের রোজনামচাও মেলে, তেমনই আবার ধরাবাঁধা ছকে বাঁধা না পড়ে স্বাধীন ভাবে সংসার পাতা যায়। এই প্রজন্মের অনেকই তাই ব্যস্ততার জীবনে বিয়ের চেয়ে লিভ ইন বেশি পছন্দ করেন।
তবে হঠকারিতার চোটে লিভ ইনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললে পরে পস্তাতে হয়। তখন ফেরার উপায় থাকলেও জীবন অহেতুক জটিল হয়। তাই সঙ্গী ও আপনি দু’জনেই লিভ ইন করতে চাইলে মনে রাখুন কিছু জরুরি বিষয়। একত্রবাসের আগে কী কী বিষয় মাথায় রাকবেন?
১) কেন লিভ ইন করতে চাইছেন, এর ব্যাখ্যা এক এক জনের কাছে এক এক রকম হতই পারে। তাই দু’জনেই পরস্পরের কাছে নিজেদের ভাবনা ও মত নিয়ে স্বচ্ছ থাকুন। স্রেফ নতুন কিছুর স্বাদ নিতে চেয়ে জীবন নিয়ে পরীক্ষা করবেন না।
২) লিভ ইন সম্পর্কে থাকতে চাইলে অর্থনৈতিক ও অন্যান্য দায়িত্ব ভাগ ঠিক বিয়ের মতো হয় না। তাই কোন দায়িত্ব কে নেবন, আর্থিক দিকেও কার কতটা অবদান থাকবে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকুক প্রথম দিন থেকেই। পরবর্তী সময়ে কিন্তু অর্থনৈতিক কারণেও দু’জনের মধ্যে সমস্যা হতে পারে।
সঙ্গীর পরিচয় সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় যাচাই করে নিয়ে তবেই লিভ ইনের দিকে পা বাড়ান। ছবি: সংগৃহীত।
৩) জীবনে অতিরিক্ত দায়দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত না হলে লিভ ইনে যাওয়ার কথা ভাববেন না। বিয়ের পরেও কিছু কিছু অভ্যাস নতুন করে তৈরি হয়, কিছু অভ্যাসে রাশ টানতে হয়, বাড়ির অনেক দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিতে হয়। লিভ ইনের বিষয়টিও তেমন। তবে ছেড়ে যাওয়ার কোনও আইনি জট এই ধরনের সম্পর্কে থাকে না বলে অনেকেই এ নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। সঙ্গী বা আপনার মনে তেমন কোনও চিন্তা থাকলে সিদ্ধান্তের আগে আরও একটু ভাবুন।
৪) একসঙ্গে থাকতে শুরু করা মানে কিন্তু অবশ্যই সব কিছু আগের মতোই চলবে, এমন নয়। নানা আপস, নানা অপছন্দও সারি বেঁধে এসে দাঁড়াবে খুব পছন্দ আর তীব্র ভালবাসার মধ্যে। তাই সম্পর্কের বাঁধন লিভ ইনেও আছে, তবে সেটি স্বীকৃতি পায়নি ফারাক শুধু ওইটুকুই। প্রচণ্ড স্বাধীনচেতা বা কথায় কথায় সম্পর্ক ভেঙে বেরিয়ে যেতে চান, এমন মানুষের সঙ্গে লিভ ইনে জড়াবেন না। ওতে জটিলতা ও অশান্তি বাড়বে বই কমবে না।
৫) ইদানীং লিভ ইন সম্পর্ক নিয়েও নানা আইনি বিষয় তৈরি হয়েছে। লিভ ইনে যাওয়ার আগে এই সব আইনের খুঁটিনাটি জেনে তবেই সে পথে পা বাড়ান। সঙ্গীর পরিচয় সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় যাচাই করে নিয়ে তবেই লিভ ইনের দিকে পা বাড়ান। নিজে কোথায় থাকছেন, সে ঠিকানা পরিবারকে জানিয়ে রাখুন। পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগে থাকুন।