ভালবাসার কাছে বয়স যে তুচ্ছ — তা আরও এক বার প্রমাণ করেছে অভিনেতা দীপঙ্কর দে ও দোলন রায়ের জুটি। নিজস্ব চিত্র।
বয়স সংখ্যামাত্র। প্রেমের সঙ্গে এর কোনও লেনদেন নেই।
বয়স বেড়ে গেলেই বাড়ি থেকে চাপ আসতে শুরু করে, ‘এ বার তো বিয়েটা কর! আর কত দিন এ ভাবে চলবে!’ এমন অনেক কথা ভেসে আসে। বাড়ির চাপে অনেকে বিয়ে করেও ফেলেন। তবে পছন্দের সঙ্গী পান কি? সেই সম্পর্ক কত দিন টিকবে, তা নিয়েও থেকে যায় প্রশ্ন!
তাই হাতে সময় নিয়ে সঙ্গীকে ভাল করে বুঝে তাঁকে বিয়ে করাই বুদ্ধিমানের কাজ নয় কি? প্রেমের যে কোনও বয়স হয় না, বার বার তা প্রমাণ করেছেন প্রভাবীরা। এমন অনেক তারকাই আছেন, যাঁরা প্রেম খুঁজে পেয়েছেন একটু দেরিতে। বিয়ের পিঁড়িতেও বসেছেন একটু দেরি করেই। অথচ দিব্যি চলছে তাঁদের সাংসারিক জীবন। বলি-টলি পাড়ায় এমন সম্পর্কের উদাহরণ অজস্র।
নীনা গুপ্তের কথাই ধরা যাক। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার ভিভ রিচার্ডসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক। বিবাহিত এক পুরুষের সন্তানের জন্ম দিয়ে হাজার বিতর্কের মুখে পড়তে হয় অভিনেত্রীকে। অথচ সেই সম্পর্ক টেকেনি। এর পর নানা পুরুষের কাছ থেকে আসে নানা রকম কুপ্রস্তাব। নীনার প্রথম স্বামীর নাম অম্লানকুসুম ঘোষ। সেই বিয়েও বেশি দিন টেকেনি। ৫৪ বছর বয়সে ফের নতুন জীবন শুরু করেন অভিনেত্রী। পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বিবেক মেহরাকে বিয়ে করেন নীনা। এখন তাঁদের সুখী দাম্পত্যের চর্চা সর্বত্রই। পর্দায় একের পর এক সাহসী চরিত্রে অভিনয় করছেন নীনা। খোলামেলা পোশাকেও এখনও নজর কাড়ছেন ভক্তদের। বেশ কিছু সাক্ষাৎকারে শোনা যায় তাঁর সুখী দাম্পত্যের কাহিনি। দাম্পত্য সুখ তাঁর হাবভাবে স্পষ্ট। সম্পর্কের বাঁধন মজবুত না হলে এই বয়সে এতটা সুখী হওয়া যায় না, এমনই বক্তব্য নীনার।
পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বিবেক মেহরাকে বিয়ে করেন নীনা। এখন তাঁদের সুখী দাম্পত্যের চর্চা সর্বত্রই। ছবি: সংগৃহীত
সইফ-করিনাকেই দেখুন। ২০০৪ সালে অমৃতা সিংহের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর একাধিক নায়িকার সঙ্গে নাম জড়ায় সইফ আলি খানের। তার পর করিনা কপূরের সঙ্গে চার বছরের প্রেম। পরে সেই সম্পর্ক গড়ায় বিয়েতে। সৈফের তখন বয়স চল্লিশ পেরিয়েছে। সাধারণের চোখে বিয়ের জন্য তা বেশ দেরিই। কিন্তু এখন দুই ছেলে তৈমুর আর জহাঙ্গিরকে নিয়ে তারকা জুটির সুখের সংসার। সইফের প্রথম পক্ষের সন্তারদের সঙ্গেও করিনার বেশ বন্ধুর মতো সম্পর্ক। এই জুটির বয়সের ফারাক প্রায় ১০ বছর। বয়সকে তুড়ি মেরে সমাজের পরোয়া না করেই সুখী জীবন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
বয়সকে তুড়ি মেরে সমাজের পরোয়া না করেই সুখী জীবন কাটাচ্ছেন সইফ ও করিনা। ছবি: সংগৃহীত
৩৬ বছর বয়সে আদিত্য চোপড়ার সঙ্গে বিয়ে করেন রানি মুখোপাধ্যায়। আদিত্যর বয়স তখন ৪৩। কত জনে যে তার আগে বলে ফেলেছেন, রানির আর বিয়েই হল না! এখন আদিত্যের সঙ্গে চুটিয়ে সংসার করছেন তিনি। তাঁদের সম্পর্কেও বয়স কোনও বাঁধা হয়নি। আদিত্যের যদিও এটি দ্বিতীয় বিয়ে। নানা কারণে প্রথম বিয়ে না টিকলেও রানির সঙ্গে বেশ সুখেই আছেন আদিত্য। মেয়ে আদিরা আদিত্যের প্রাণ।
নানা কারণে প্রথম বিয়ে না টিকলেও রানির সঙ্গে বেশ সুখেই আছেন আদিত্য। ছবি: সংগৃহীত
টলিপাড়াতেও এ রকম প্রেমের উদাহরণ মিলবে। পাত্র ৭৫, পাত্রী ৪৯....তাতে কী ? ভালবাসার কাছে বয়স যে তুচ্ছ — তা আরও এক বার প্রমাণ করেছে অভিনেতা দীপঙ্কর দে ও দোলন রায়ের জুটি। বহু বছর ধরেই লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন দীপঙ্কর-দোলন। ২০২০ সালে বিবাহ-বন্ধনে বাঁধা পড়েন এই তারকা-জুটি। দীপঙ্কর যেমন দোলনকে শাষণ করেন, তেমন সোহাগও করেন। বয়সের আঁচ কিন্তু তাঁদের রসায়নকে বিন্দুমাত্র ফিকে করেনি।