গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
সে তো বটেই৷ যে কোনও রোগ-শোকের সঙ্গেই মনের যোগ নিবিড়৷ কিন্তু তা বলে কি আর চাইলেই চাপ কমানো যায় এই পরিস্থিতিতে! চাপ তো চাপ, একে একে আরও কত উপসর্গই তো এসে ভিড় করছে—
• চরম উদ্বেগ
• মাথায় যেন দশমনি বোঝা চাপিয়েছে কেউ
• কড়া নজর, এই বুঝি একটু নাক কি চোখ চুলকালো, কি একটা হাঁচি এল বা শুরু হল খুশখুশে কাশি, গা কি একটু গরম লাগছে
• মেজাজ খিটখিটে
• গ্রাস করেছে অস্থিরতা, ভয়
• স্বাভাবিক ব্যথা-বেদনাও মনে হচ্ছে ভাইরাসের কারণে হচ্ছে
• নির্ঘুম রাতে সঙ্গী যত অযৌক্তিক ভাবনা৷
আরও পড়ুন: করোনা-ভয় ঠেকাতে জিমে যাওয়ায় নিষেধ করল ‘হু’! শরীরচর্চার সময় সংক্রমণ এড়াতে মেনে চলুন এ সব
ভালই বুঝতে পারছেন যে এর হাত থেকে মুক্তি না পেলে রোগের আশঙ্কা আরও বাড়বে৷ কারণ ওষুধহীন, প্রতিষেধকহীন ভাইরাসটির বিরুদ্ধে লড়ার হাতিয়ার বলতে আছে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা৷ মানসিক চাপ বেড়ে গেলে শরীরে এত ক্ষতিকর রাসায়নিকের রমরমা হয় যে তার দাপটে যোদ্ধাটি চলে যায় ব্যাকফুটে৷ তার উপর অশান্তি বাড়লে ঘুম কমে যায়, খাদ্যাখাদ্য বিচার থাকে না, আগ্রহ থাকে না ব্যায়ামে৷ সবে মিলে প্রতিরোধ ক্ষমতার আরও অবনতি হয়৷ কাজেই যে কোনও উপায়ে মানসিক চাপ লাঘব করতে হবে৷ কী ভাবে কী করতে হবে তা জানিয়েছেন মনোচিকিৎসক শিলাদিত্য মুখোপা্ধ্যায়৷ আসুন দেখে নেওয়া যাক৷
আরও পড়ুন: মাল্টিভিটামিন খেলেই কি করোনা-সংক্রমণ এড়ানো যাবে?
মানসিক চাপ কমানোর উপায়
• সারা দিন-রাত যে স্রোতের মতো দুঃসংবাদ ভেসে আসছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, টিভিতে, কাগজে, তাতে গা ভাসাবেন না৷ তার চেয়ে মোবাইলে বা টিভিতে সিনেমা বা সিরিয়ালই না হয় দেখুন৷ বেশি খবর জেনে কী করবেন? আপনার তো শুধু তিনটে কাজ, একটু গৃহবন্দি থাকা, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা ও ক্ষণে ক্ষণে হাত ধোওয়া৷ তারপর যা হবে, হবে৷ চরম খারাপ বলতে রোগ হওয়া৷ সে হলেও ৯৭-৯৮ শতাংশ সম্ভাবনা পুরোপুরি সুস্থ্ হওয়ার৷ কাজেই টেনশন করবেন না৷
• তাও টেনশন হচ্ছে?বাস্তববাদী ও বুদ্ধিমান মানুষের সঙ্গে আলোচনা করুন৷ মন হালকা হবে৷
• উদ্বেগপ্রবণ মানুষের সঙ্গে খুব বেশি মেলামেশা করার দরকার নেই৷ করলে ভয় দ্বিগুণ-তিনগুণ হয়ে যাবে৷
• ভাবছেন, ঘরে তো বন্দি, আলোচনা বা মেলামেশার হবে কীভাবে?হবে ওই ফোনে৷ যাকে নিয়মিত ভেজা টিসু্ দিয়ে পরিষ্কার করছেন আপনি৷
• মন হালকা হচ্ছে না? পাগল পাগল লাগছে? বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলুন৷ মনোবিদ বা মনোচিকিৎসক আপনার উদ্বেগের উৎস বুঝে সঠিক পথ দেখাতে পারবেন৷
• শরীর-স্বাস্থ্যকে অবহেলা করবেন না৷ প্রোটিনসমৃদ্ধ সুষম খাবার খান৷ হালকা ব্যায়াম করুন৷ ভাল করে ঘুমোনোর চেষ্টা করুন৷ ঘুম না এলে কী করবেন, তা বিশেষজ্ঞের কাছে জেনে নিন৷ রোগের বিরুদ্ধে এরাই কিন্তু শক্তি যোগাবে৷
• মানসিক চাপ কমাতে রিল্যাক্সেশন এক্সারাসাইজ করুন৷ যোগা, মেডিটেশন, ডিপ ব্রিদিং৷ যা করলে মন হালকা থাকে, তাই করুন৷ তা সে বই পড়া হোক কী গান শোনা, বাগান করা হোক কী নাচ-গান করা৷
• বেশি মদ খাবেন না৷ এতে আরও বেশি অবসাদ গ্রাস করবে৷
• মহামারির জন্য কাউকে দোষারোপ করে লাভ নেই৷ শান্ত মনে ব্যাপারটা মেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন৷
• বিপদ কোথা থেকে আসতে পারে তা বুঝে সামলানোর চেষ্টা করুন৷ প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন৷