উপহার দেওয়ার মধ্যে আন্তরিকতা এবং আবেগ জড়িয়ে থাকে। —ফাইল চিত্র।
উৎসব-পার্বণে বাঙলি যত না নিজের জন্য কেনাকাটা করে, তার চেয়েও বেশি উপহার দেওয়ার ভাবনা থাকে। ঘাড়ের কাছে নিশ্বাস ফেলছে দুর্গাপুজো। সপ্তাহখানিক পরেই পুজোর বাদ্যি বেজে উঠবে। মহা সমারোহে শুরু হবে উৎসব। তবে এমন উৎসবমুখর সময়ে নিজেদের জন্য জমিয়ে কেনাকাটার পাশাপাশি বন্ধুবান্ধব, চেনা-পরিচিতদের হাতেও উপহার তুলে দিতে মন চায়। উৎসব মানেই একে-অপরের মুখে হাসি ফোটানো। আর উপহার পেলে সকলের মুখের হাসিই চওড়া হয়। উপহার যে সব সময়ে বহুমূল্যের হতে হবে, তার কোনও মানে নেই। উপহার দেওয়ার মধ্যে আন্তরিকতা এবং আবেগ জড়িয়ে থাকে। তাই উপহার দেওয়াটাই আসল। তবে পুজোর সময়ে যেহেতু, তাই বাজেটের একটা বিষয় তো থাকেই। অনেক সময়ে উপহার দেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সাধ্য সঙ্গ দেয় না। তবে ৫০০ টাকার মধ্যেও পুজোয় দারুণ কিছু উপহার হয়ে যাবে।
পুজো সংখ্যা
উপহার হিসাবে বইয়ের কোনও বিকল্প নেই। তবে পুজোর সময়ে উপহার হিসাবে যদি বই দেওয়ার কথা ভেবেই থাকেন, তা হলে পুজো সংখ্যা দেওয়াই ভাল। উপহারে পুজোর গন্ধও মিশে থাকবে। বই পড়তে যাঁরা ভালবাসেন, সারা বছর পুজো সংখ্যাগুলির জন্য তাঁরা মুখিয়ে থাকেন। প্রকাশিত হলেই ঝাঁপিয়ে পড়েন। বন্ধু হোক কিংবা সহকর্মী, উপহারের বাজেট যদি হয় ৫০০ টাকা, তা হলে অন্তত দু’টো পুজো সংখ্যা হয়ে যাবেই। কলেজ স্ট্রিট থেকে কিনলে নির্ধারিত দামের উপরে খানিকটা ছাড়ও পেয়ে যাবেন।
ড্রাইফ্রুটস হ্যাম্পার
বন্ধু যদি স্বাস্থ্যসচেতন হন কিংবা সারা বছরই ডায়েটে থাকেন, সে ক্ষেত্রে পুজোর সময়ে উপহার হিসাবে ড্রাইফ্রুটস হ্যাম্পার কিন্তু মন্দ নয়। উপহারও দেওয়া হল, একসঙ্গে উৎসবের মরসুমে বন্ধুর শরীরেরও খেয়াল রাখলেন। কাজু, কিশমিশ, আখরোট, খেজুর, কাঠবাদাম অল্প অল্প করে কিনে সুন্দর একটি ট্রেতে সাজিয়ে দিতে পারেন। তবে দোকানেও এমনি রেডিমেড হ্যাম্পার পেয়ে যাবেন। ৫০০ টাকার মধ্যে হয়ে যাবে আপনার উপহার।
পুজোর উপহারে ভালবাসার পাশাপাশি থাক আলোর ছোঁয়া। ছবি: শাটারস্টক।
ব্যাগ
নিজের কাছে গাদাখানেক ব্যাগ থাকলেও নতুন একটি হলে অখুশি হন না কেউই। ফলে ব্যাগ দিলে বন্ধু রাগ করবেন না কি না, তা নিয়ে না ভেবে কিনেই ফেলুন। পোশাকের সঙ্গে মানানসই ব্যাগ নিতে পছন্দ করেন অনেকেই। ৫০০ টাকার মধ্যে ডিজাইনার ব্যাগ না হলেও একেবারে মন্দ কিছুও হবে না। পার্স, স্লিং ব্যাগ, বটুয়া, ছোট ক্লাচ হয়ে যাবে ৫০০ টাকার মধ্যেই। অনলাইনে এই দামে আরও অনেক ভাল কিছু পেয়ে যেতে পারেন।
আতর
উৎসবের রূপ-রস-গন্ধ আরও খানিক জমকালো করে তুলতে উপহার হতে পারে আতর। সাজগোজ সম্পূর্ণ হয় সুগন্ধির ব্যবহারে। সাজ যদি খুব জমকালো না হয়, সুগন্ধি পারে আলাদা জেল্লা আর সতেজতা ধরে রাখতে। আলোর রোশনাই, উৎসবের সানাই আর প্রিয়জনের দেওয়া সুগন্ধি— এর চেয়ে ভাল উদ্যাপন আর কিছু হতে পারে না। ৫০০ টাকার মধ্যে পছন্দসই পারফিউম হবে কি না, তা নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে চিৎপুরে গেলে ৫০০ টাকার মধ্যেই বেল, জুঁই, গোলাপ, রজনীগন্ধা, চন্দনের আতর পেয়ে যাবেন।
ল্যাম্পশেড
পুজোর উপহারে ভালবাসার পাশাপাশি থাক আলোর ছোঁয়া। ৫০০ টাকার মধ্যে যদি উপহার খোঁজেন, তা হলে ল্যাম্পশে়ড পেলে খুশি হবেন বন্ধু। পুজোর সময়ে ঘরের সাজ নিয়ে একটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলেই। সেই সৌন্দর্যে অন্য মাত্রা যোগ করতে ল্যাম্পশেডের জুড়ি মেলা ভার। উৎসবের মরসুমে ল্যাম্পশেডের মায়াবী আলোয় ঘর ভরে উঠবে। টেরাকোটার ল্যাম্পশেড, হ্যাঙ্গিং ল্যাম্পশেড, বাঁশের তৈরি ল্যাম্পশেড, চাইনিজ ল্যাম্পশেড— ল্যাম্পশেডের মধ্যে বৈচিত্র্যের অভাব নেই। তবে বাজেটের মধ্যে বাহারি ল্যাম্পশেড পেতে হলে অনলাইন ভরসা। তবে কম দামে ল্যাম্পশেড কিনতে ঢুঁ দিতে পারেন চাঁদনি মার্কেটে।