একাকিত্বের সমস্যায় ভুগছে পোষ্যরা। ছবি: সংগৃহীত
ক্রমশ একটু একটু করে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে জীবন। কিন্তু তারই মধ্যে ভয় দেখাচ্ছে ডেলটা বা ডেলটা প্লাসের মতো প্রজাতি। এই অবস্থায় কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার চেষ্টা করছে অফিসগুলি। ফলে অল্প করে হলেও অফিসে যাচ্ছেন কর্মীরা। এই অবস্থায় মানসিক চাপে ভুগছে পোষ্যেরা।
বেলেঘাটার অপরূপা বসুর ক্ষেত্রেও এমন হয়েছে। তাঁর বাড়িতে রয়েছে বছর আটেকের গোল্ডেন রিট্রিভার জাতের কুকুর। ‘‘এত দিন বাড়ি থেকেই অফিসের কাজ চলছিল। ফলে সব সময়েই আমার পোষ্যটি আমায় দেখতে পেত। এখন আমায় সপ্তাহে একদিন করে অফিস যেতে হচ্ছে। ওই দিনগুলো ওকে নিয়ে খুব সমস্যা হচ্ছে।’’
প্রায় বছর ১৫ ধরে কুকুরকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ করেন পরিতোষ হাজরা। পেশার কারণেই বিধাননগর থেকে সোদপুর— নানা জায়গায় ছুটতে হয় তাঁকে। ‘‘এই নিয়ে পর পর দু’বছর কুকুরদের ক্ষেত্রে এই ধরনের সমস্যা হচ্ছে। গত বছরের শেষে এসেও যখন লকডাউন শিথিল হয়ে গেল, বাড়ির সবাই আবার কর্মক্ষেত্রে গিয়ে কাজ করতে শুরু করলেন, পোষ্যদের মধ্যে তীব্র একাকিত্বের সমস্যা হচ্ছিল। চলতি বছরে এখন আবার এই সমস্যা হচ্ছে। টানা এক রকম ভাবে চলতে থাকলে অসুবিধা হয় না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিষয়টা বারবার পরিবর্তন হওয়ায়, মানিয়ে নিতে কষ্ট হচ্ছে ওদের,’’ বলছেন পরিতোষ।
কী জাতীয় সমস্যা হয় পোষ্যদের? দিনের পর দিন পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে সারা দিন বাড়িতে থাকতে থাকতে অভ্যাস হয়ে যায়। তার পরে একদিন বাড়িতে কেউ না থাকলেই প্রচণ্ড ভয় পেতে শুরু করে ওরা। বিমানবন্দর এলাকার বাসিন্দা অপূর্ব রায়চৌধুরীর বাড়িতে গত ১০ বছর ধরে ল্যাব্রাডর রিট্রিভার জাতের কুকুর রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘সপ্তাহে একদিন যদি অফিসে যাই, ফিরে এসে প্রতিবেশীদের থেকে শুনছি, সারা দিন কান্নাকাটি করেছে। ঘরে এটা-সেটা ভাঙা, ছেঁড়া— এগুলোও দেখছি।’’
পোষ্য বিড়ালও ভুগছে একই ধরনের সমস্যায়
এই অবস্থা আপাতত সামাল দেওয়ার জন্য কেউ কেউ খোঁজ করছেন কুকুরকে সারা দিন দেখাশোনা করার মতো কাউকে। ‘‘কুকুরের পরিচর্যা করার মতো লোকজন তাও পাওয়া যায়। সমস্যা বেশি বিড়ালকে নিয়ে,’’ মত পরিতোষের।
কুকুরের প্রশিক্ষণের কাজই বেশি করেছেন। কিন্তু বিড়াল সম্পর্কে তাঁর স্বল্প অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে পরিতোষের মত, ‘‘যা বুঝেছি, বিড়াল খুব স্বাধীনচেতা হলেও, ওরাও চায়, পরিবারের সদস্যরা কাছাকাছির মধ্যে থাকুক। একাকিত্বে ভুগলে ওরা খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিতে পারে।’’