প্রতীকী ছবি।
তিন জনের সঙ্গে প্রেম। তার মধ্যেই রিনার সঙ্গে আলাপ হয় আকাশের। বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন দু’জনে। প্রথমে সব ঠিকই ছিল। কিন্তু কিছু দিন পর থেকে শুরু হয় সমস্যা। রিনা মেনে নিতে পারেন না আকাশের বাকি প্রেমিকাদের। সংসারের অশান্তি বাড়তে থাকায় জীবনের ছন্দ কাটে। মনোবিদের কাছে যান আকাশ। কথা হয় রিনার সঙ্গেও। তার পর থেকে আরও বেড়ে যায় দু’জনের মানসিক চাপ।
কেন এমন হল?
কথায় কথায় রিনা জানান, আকাশকে প্রথমেই মনোবিদ বলেছেন যে তাঁর ভাবনা এবং চলাফেরা ঠিক নয়। সমাজে থাকতে গেলে চলতে হয় সামাজিক নিয়ম মেনে। তিনি রিনার প্রতি অপরাধ করেছেন। এ দিকে আকাশ বলেন, ‘‘আমি রিনাকে ভালবাসি। ওর ক্ষতি কখনওই চাইনি। সে কথা রিনাও জানে।’’ রিনার বক্তব্য, এ ভাবে তাঁদের দু’জনের জীবনে সমস্যা বেড়েছে। কমেনি।
প্রতীকী ছবি।
মনোবিদের কাছে গিয়ে এমন সমস্যায় পড়ার ঘটনা শুধু আকাশ আর রিনার জীবনেই হয়নি। আরও অনেকেরই এমন অভিজ্ঞতা আছে। মনোবিদের কাছে গিয়ে মানসিক সঙ্কট উল্টে বেড়ে গিয়েছে। রোগীর জীবনধারা, জীবনবোধ নিয়ে এমন কিছু প্রশ্ন তুলেছেন মনোবিদ যে, মন আরও অস্থির হয়ে গিয়েছে। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার কোয়েল রায়ের কথাই ধরা যাক না। অবসাদে ভুগছিলেন কয়েক মাস ধরে। যখন মনোবিদের কাছে গেলেন, তখন আশা ছিল সুস্থ হয়ে ওঠার। কিন্তু মনোবিদ বললেন, যেহেতু তিনি বিবাহিতা, তাই এ সব ছোট ছোট সমস্যা নিয়ে তাঁর আগে যাওয়া উচিত নিজের স্বামীর কাছে। কোয়েল বলেন, ‘‘স্বামীর সঙ্গে কথা বলেই যদি সমস্যার সমাধান করার হতো, তা হলে আমি মনোবিদের কাছে যেতাম না। আর তা ছাড়া আমি বিয়ে করেছি মানেই যে সব সময়ে স্বামীর কাছে সাহায্য চাইতে হবে, তা তো হয় না। এমন কথা বলে যেন আমার মধ্যে অপরাধবোধ বাড়িয়ে দিচ্ছিলেন মনোবিদ। এতে আমার অবসাদও বেড়ে গিয়েছিল।’’
ঠিক একই কথা বলেন স্কুল শিক্ষিকা অনন্যা দাশগুপ্ত। তাঁর জীবনধারা, চলাফেরার সময় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মনোবিদ। অনন্যা বলেন, ‘‘আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না, সে কথা জানতে চান মনোবিদ। আমাকে তিনি বলেছিলেন যে, রোজ পুজো করতে হবে। তা হলে মন শান্ত হবে। সংসারে মানিয়ে নিতে সুবিধা হবে।’’ এই কথা শুনে তিনি আরও ভেঙে পড়েন বলে দাবি অনন্যার।
অনন্যার স্বামী রাজীব অযৌন। বিয়ের আগে সে কথা বুঝতে পারেননি তিনি। ধীরে ধীরে দু’জনের মধ্যে সমস্যা বাড়ে। অনন্যা টের পান, আসল অসুবিধার জায়গাটি ধরা পড়ছে না। রাজীবের তা বুঝতে আরও সময় লাগে। শেষে যখন অস্বস্তির মাত্রা বাড়ে, তখন তিনি মনোবিদের সাহায্য চান। রাজীব বলেন,‘‘মনোবিদ আমার সঙ্গে কথা বলে বোঝাতে থাকেন অযৌন মানুষের ভাবনা-চিন্তার গতি আলাদা হয়। আমি অনন্যাকে বিয়ে করে অপরাধ করেছি, সে কথাও বলেন মনোবিদ। আমার এমনিতেই অনন্যার জন্য খুব খারাপ লাগছিল। এর মধ্যে মনোবিদ এ কথা বলায় আমার অপরাধবোধ বেড়ে যায়।’’
এমন সমস্যার কথা আরও অনেকেই বলে থাকেন। কিন্তু এর সমাধান কোথায়? মনোবিদের কাছেই কি আছে? কী মনে করেন মনোবিদেরা?