ব্যথার ওষুধ খাওয়ার আগে পরামর্শ নেওয়া যাক চিকিৎসকের।
অসহ্য ব্যথায় ওষুধ খেতেই হবে। কিন্তু মাথাব্যথা একটু হল কি হল না, তাতে ওষুধ খেয়ে নেওয়ার প্রবণতা থাকে অনেকের। এ কাজ ঠিক নয়। তাতে উল্টে বিপদ ঘটতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথার ওষুধ না খাওয়াই ভাল। ব্যথা যদি সামান্য হয়, তবে তা কমাতে আগেই ওষুধ কেন? কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে দেখা যাক না।
কিন্তু এত কথা হচ্ছে কেন? ব্যথার ওষুধে কি ক্ষতি হয়?
খোলা বাজারে যা সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়, তার মধ্যে প্রধান হল এনসেড বা নন-স্টেরয়ডাল অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি গোত্রের ওষুধ৷ যেমন ডাইক্লোফেনাক, অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন ইত্যাদি৷ ব্যথা কমানোর পাশাপাশি ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহও কমায় বলে এই সব ওষুধে চটজল্দি কাজ হয়৷ অ্যাসিটামিনোফেন বা প্যারাসিটামল ব্যথা কমালেও, প্রদাহ কমাতে পারে না। তা সবচেয়ে নিরাপদ হলেও কার্যকারিতা এনসেড-এর চেয়ে কম৷
এ বার আসা যাক ক্ষতির কথায়৷ এনসেড গোত্রের ওষুধ পেটের গোলমাল ঘটাতে পারে৷ বদহজম, পেটব্যথার মতো সমস্যা হয়৷ কারও কারও গ্যাসট্রাইটিস হয়৷ আলসার এবং পাকস্থলি ও অন্ত্রে রক্তপাত হয় কিছু ক্ষেত্রে৷ নিয়মিত ডাইক্লোফেনাক খেলে কারও কারও হার্ট ও রক্তনালির অসুখ হতে পারে বলেও জানা গিয়েছে৷
বয়স যাঁদের ৬৫-র বেশি, ব্যথার ওষুধ থেকে তাঁদের সমস্যা হতে পারে। আলসার, গ্যাস্ট্রাইটিস থাকলেও এ ধরনের ওষুধ বেশি থাওয়া সঙ্কটজনক। যাঁরা রক্ত পাতলা রাখার ওষুধ, স্টেরয়েড বা এসএসআরআই গ্রোত্রের অবসাদ কমানোর ওষুধ খান, তাঁদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত ব্যথার ওষুধ খাওয়ার আগে৷ হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা যাঁদের রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে ব্যথার ওষুধ বেশ বিপজ্জনক। কিডনির সমস্যা থাকলেও তা-ই।
খেয়াল রাখা ভাল, কার কখন কী থেকে সমস্যা হবে, তা আগে থেকে বলা যায় না৷ কাজেই, নিতান্ত প্রয়োজন না হলে ব্যথার ওষুধ না খাওয়াই ভাল৷ ব্যথা কমানোর অন্য পন্থা, যেমন বিশ্রাম, সেঁক বা ফিজিওথেরাপির সাহায্য নেওয়া যায়৷ নিতান্ত প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো নিয়ন্ত্রিত মাপের ওষুধ খাওয়া ভাল৷