(বাঁ দিকে) সিমা গ্যালারিতে আয়োজিত হল শিল্প সমালোচক ঋতা দত্তের স্মরণে সভা। ঋতা দত্ত (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
শিল্প সমালোচক ছিলেন। সে কথা অনেকেই জানেন। সাহিত্য থেকে টেনিস, নাটক থেকে পশ্চিমি সঙ্গীত— সে সবেও যে ছিল সমান মন, তা হয়তো জানাই হত না ঋতা দত্তের গুণে মুগ্ধদের। শনিবার, দক্ষিণ কলকাতার সিমা গ্যালারি তাঁর স্মরণ অনুষ্ঠান এমন নানা কথা তুলে আনল।
বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন ঋতা। মে মাসের ৩১ তারিখ জীবনাবসান ঘটে। সে সময়ে তিনি ভর্তি ছিলেন শহরের এক হাসপাতালে। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৪।
ঋতা দত্তকে নিয়ে নানা কথা ভাগ করে নিলেন শিল্পী শ্রেয়সী চট্টোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
নব্বইয়ের দশক থেকেই সিমা গ্যালারির নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ঋতা। শনিবার সিমা গ্যালারিতে আয়োজন করা হয়েছিল শিল্প সমালোচকের স্মৃতিতে এক অনুষ্ঠান। শিল্প জগতের বিশিষ্টদের পাশাপাশি, ঋতার পরিবারের সদস্য এবং সহকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। গ্যালারির অধিকর্তা রাখী সরকার জানান, সব সময়েই নতুন কাজ নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করতেন ঋতা। তিনি বলেন, ‘‘অনেক কিছু নিয়ে ভাবনাচিন্তা ছিল ঋতার। ওঁর ভাবনা আগামী দিনেও আমাদের অনুপ্রেরণা জোগাবে।’’ শিল্পী যোগেন চৌধুরী, পরেশ মাইতি তাঁর স্মৃতিতে বার্তা পাঠান। তা পাঠ করা হয় অনুষ্ঠানে। শিল্পী শ্রেয়সী চট্টোপাধ্যায়ের মনে পড়ে, কী ভাবে শিল্পের মাধ্যমে রাজনীতি বুঝতেন ও তার ব্যাখ্যা করতেন ঋতা। সকলের সঙ্গে সে সব কথাই ভাগ করে নিলেন তিনি।
সহকর্মী থেকে আত্মীয়— ঋতা দত্তের স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন অনেকেই। — নিজস্ব চিত্র।
ঋতা লোরেটো হাউজ়ের ছাত্রী ছিলেন। পরে ইতিহাস পড়িয়েছেন বালিগঞ্জ শিক্ষাসদন স্কুলে। সহকর্মীদের স্মৃতিতে উঠে এল শিক্ষিকা ঋতার কথা। স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে নাটক করাতে যে বিশেষ উৎসাহী ছিলেন তিনি, মনে পড়ল সহকর্মী রত্নাবলী ঘোষের।
ঋতার পরিবার যুক্ত ছিল সংবাদের জগতের সঙ্গে। ইংরেজি, হিন্দি এবং বাংলা ভাষায় সংবাদপত্র প্রকাশ করতেন তাঁরা। তুষারকান্তি ঘোষের নাতনি এবং প্রাক্তন মন্ত্রী তরুণকান্তি ঘোষের কন্যা ছিলেন ঋতা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর ভাই অমৃত ঘোষ এবং ভাগ্নি তানিয়া ঘোষ। ঋতার স্মরণে কয়েক কলম লিখেছেন পিসি শ্রীলেখা বসু। সে লেখা পাঠ করেন তানিয়া। সাহিত্যের প্রতি ঋতার বিশেষ ঝোঁকের কথা উঠে এল তাতে। ভাই অমৃত আবার পশ্চিমি গান আর টেনিস খেলার প্রতি টানের কথা উল্লেখ করেন। এত সব কথা জোড়া রইল রোহিনী রায়চৌধুরীর গানে। নানা জনের টুকরো টুকরো স্মৃতিতে নতুন করে চেনা হল শিল্প সমালোচককে। কথার শেষে বেজে উঠল তাঁরই প্রিয় এলভিস প্রেসলির গান।