বর্তমানে উত্তর-পূর্ব স্পেনের ওলোট শহরে পরিবারের সঙ্গে থাকেন মারিয়া। ফাইল চিত্র ।
মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা। মঙ্গলবার ১১৮ বছর বয়সে ফরাসি সন্ন্যাসিনী লুসিল রাঁদোঁর মৃত্যুর পর ১১৫ বছর বয়সি মারিয়াই নাকি এখন বিশ্বের প্রবীণতম মানুষ। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় যে, জীবদ্দশায় এক দিনের জন্যও নাকি হাসপাতাল বা চিকিৎসাকেন্দ্রের মুখ দেখেননি শতায়ু মারিয়া। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই তাঁকে নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
বুধবার গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের আধিকারিক রবার্ট ডি ইয়ং জানিয়েছেন, মনে করা হচ্ছে মারিয়া বর্তমানে বিশ্বের প্রবীণতম মানুষ। মারিয়া সম্পর্কে সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখার পরে এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পরই আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁকে বিশ্বের প্রবীণতম মানুষ বলে ঘোষণা করা হবে।
বর্তমানে উত্তর-পূর্ব স্পেনের ওলোট শহরের পরিবারের সঙ্গে থাকেন মারিয়া। মারিয়ার কনিষ্ঠ কন্যা, ৭৮ বছর বয়সি রোসা মোরেট বলেন, ‘‘আমার মাকে আজ পর্যন্ত কখনও কোনও অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়নি। মায়ের শরীরে কোনও হাড় কখনও ভাঙেনি। এই বয়সেও উনি সম্পূর্ণরূপে সুস্থ।’’ মায়ের দীর্ঘ আয়ুর জন্য পূর্বপুরুষ সূত্রে পাওয়া জিনকেই কৃতিত্ব দিয়েছেন মোরেট।
মারিয়ার পূর্বপুরুষরা স্পেনের বাসিন্দা হলেও তাঁর জন্ম আমেরিকায়। ২০০৭ সালের গোড়ার দিকে তাঁর বাবা-মা মেক্সিকো থেকে আমেরিকায় চলে আসেন। ওই বছরেই ৪ মার্চ সান ফ্রান্সিসকোতে জন্ম হয় মারিয়ার। ১১৫ বছরের জীবনে ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু মহামারি, দুই বিশ্বযুদ্ধ এবং স্পেনের গৃহযুদ্ধের সাক্ষী হয়েছেন তিনি।
১৯১৫ সালে অর্থাৎ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আবহে মারিয়ার পরিবার স্পেনে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। জাহাজে আমেরিকা থেকে স্পেন যাওয়ার পথে মারিয়ার বাবা যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়েছিল তাঁর মৃতদেহ। মায়ের সঙ্গে স্পেনে ফিরে আসেন মারিয়া। ১৯৩১ সালে এক জন চিকিৎসককে বিয়ে করেন।
মারিয়ার তিন সন্তান, যার মধ্যে এক জন ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন। ১১ জন নাতি-নাতনি এবং ১১ জন পুতি রয়েছে তাঁর।
মারিয়ার মেয়ে মোরেটের দাবি, অতিমারি আবহে করোনা আক্রান্তও হয়েছিলেন মারিয়া। তবে ঘরের মধ্যে নিভৃতবাসে থেকেই নাকি তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।