পেটের ভিতর কেক নিজেই পরিণত অ্যালকোহলে
মদ স্পর্শ করেন না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সামান্য মদও তাঁর জন্য প্রাণঘাতী হয়ে যেতে পারে। তারপরেও শুধুমাত্র কেক খেয়েই মাতাল হয়ে গেলেন ইংল্যান্ডের এক ব্যক্তি। নিক কারসন নামের ৬২ বছরের এই ব্যক্তি জটিল এক সমস্যায় আক্রান্ত। যার নাম ‘অটো ব্রিউয়ারি সিনড্রমস’। এমনটাই বলছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা।
কী হয় এই অদ্ভুত সমস্যায়? কারও এই সমস্যা হলে, তিনি যদি চিনি বা শর্করা জাতীয় খাবার খান, তা হলে সেটাই তাঁর অন্ত্রে ফারমেনটেশন ঘটায়। এবং নিজে থেকেই অ্যালকোহল উৎপাদন করে। ফলে এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি এক ফোটা মদ্যপান না করেও মাতাল হয়ে যেতে পারেন। চিকিৎসক শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘অন্ত্রে কিছু অস্বাভাবিক ফাংগাস জমা হলে এমন সমস্যা হয়। তখনই শর্করা জাতীয় খাবার পেটে গেলে আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এমন কাণ্ড ঘটতে পারে।’’
নিক কারসনের ক্ষেত্রেও এমনটাই ঘটেছিল। দীর্ঘ ২০ বছর আগে এমন এক পরিবেশে তিনি কর্মরত ছিলেন, যেখান থেকে তাঁর অন্ত্রে কিছু অদ্ভুত ফাংগাসের সংক্রমণ হয়। শর্করা জাতীয় খাবার খেলেই অস্বস্তি টের পেতেন তিনি। কয়েক বছর আগে তাঁর স্ত্রী এক টেলিভিশন শো দেখে এই অদ্ভুত সমস্যা সম্পর্কে জানতে পারেন। চিকিৎসা করিয়েও বিশেষ লাভ হয়নি তাঁর ক্ষেত্রে। শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘এই সমস্যায় আক্রান্তরা শর্করা জাতীয় খাবার থেকে যত দূরে থাকেন, ততই ভাল। পাশাপাশি অ্যান্টি-ফাংগাল চিকিৎসাও চালিয়ে যেতে হবে।’’ নিকও জানিয়েছেন, তিনি কেটো ডায়েট-ই মেনে চলেন। কিন্তু প্রায় সব খাবারেই অল্পবিস্তর কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা থাকে। ফলে কখন এই সমস্যা দেখা দেবে, তা আগে থেকে টের পাওয়া কঠিন।
ভুল করে এক টুকরো ভিক্টোরিয়া স্পঞ্জ কেক খেয়ে ফেলেছিলেন নিক। তারপর সম্পূর্ণ নেশাগ্রস্ত হয়ে যান। ভুল বকতে থাকেন, এক জায়গায় গোল-গোল ঘুরতে শুরু করেন। তাঁকে হাসপাতালে পাঠাতে হয়। ‘‘এই সমস্যা দেখা দেওয়ার সময় আক্রান্ত ব্যক্তি যদি গাড়ি চালান, বা ভারী কোনও যন্ত্র নিয়ে কাজ করেন, তা হলে সেই সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে’’, বলছেন শাশ্বত। তাঁর পরামর্শ, প্রচণ্ড সচেতন থাকতে হবে এই ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন: সপ্তাহে তিন দিন সয়াবিন খেলে কী উপকার হবে জানেন?
আরও পড়ুন: কোণে আছে মনখারাপের ওষুধ! কী বলছেন মনোবিদরা