বিরল চিকিৎসা পদ্ধতিতে ক্যানসারমুক্তি। ছবি- পিএ মিডিয়া
২০২০ সালে হঠাৎই কাঁধে গুরুতর যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে যান বছর ৫১-র রবার্ট গ্লিন। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে তাঁকে জানান, তিনি পিত্তনালির বিশেষ এক ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত। পেশায় ঝালাইকর্মী রবার্ট যে বিগত দু’বছর ধরে নিজের শরীরে ক্যানসারের মতো মারণরোগকে বয়ে বেড়াচ্ছিলেন, যে সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারণাই ছিল না। ঠিক তাঁর ৪৯তম জন্মদিনের আগের দিন চিকিৎসকরা রবার্টকে জানান, ক্যানসারের প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছেন তিনি এবং ইতিমধ্যেই তা শরীরের বিভিন্ন গ্রন্থিতে ছড়িয়ে পড়েছে। খুব বেশি হলে আর এক বছর, এর বেশি সময় রবার্টের হাতে নেই।
হঠাৎ পাওয়া এমন দুঃসংবাদে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার কথা ছিল। কিন্তু বিন্দুমাত্র হতাশ না হয়ে রবার্ট একটি অনামী ‘ইমিউনোথেরাপি ড্রাগ’ পরীক্ষামূলক চিকিৎসা পদ্ধতিতে যোগ দেন। চিকিৎসা শেষে দেখা যায়, তাঁর লিভারে থাকা টিউমারটি আকারে অনেকটাই সঙ্কুচিত হয়েছে। এর পরই তড়িঘড়ি তাঁর অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা হয়।
অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে হতবাক চিকিৎসকরাও। কারণ, কোথাও টিউমারের চিহ্নমাত্র নেই। তার জায়গায় পড়ে রয়েছে শুধুমাত্র কিছু মৃত কোষ। সুস্থ হওয়ার পর রবার্ট বলেন, “যখন শুনলাম যে এই রকম একটি গবেষণায় আমি অংশ নিতে পারি, সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি। আমি অত্যন্ত ভাগ্যবান যে দু’বছর ধরে এমন একটি রোগ আমার শরীরে থাকলেও, কোনও অসুবিধা হয়নি।”
অস্ত্রোপচারের পর আর কোনও চিকিৎসার প্রয়োজন পড়েনি রবার্টের। ক্যানসার ফিরে আসছে কি না, তা নিশ্চিত করার জন্য প্রত্যেক তিন মাস অন্তর শুধু স্ক্যান করে দেখে নেওয়া ছাড়া আর বিশেষ কিছুই করতে হয় না।
পরীক্ষামূলক এই চিকিৎসা ব্যবস্থার কাণ্ডারি ছিলেন অধ্যাপক জুয়ান ভাল্লে। তিনি বলেন, “এই পরীক্ষামূলক গবেষণায় রবার্ট দারুণ ভাবে সাড়া দিয়েছেন। এ ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রে এই চিকিৎসা পদ্ধতি কাজ না করার আশঙ্কাই ছিল বেশি। কিন্তু সকলকে অবাক করে তাঁর অদম্য ইচ্ছাশক্তি এবং মনের জোর ক্যানসারকে হারিয়ে দিয়েছে।”