ত্বকের চিকিৎসায় কাজে লাগতে পারে জোঁক। ছবি: সংগৃহীত
পেশায় চিকিৎসক। কিন্তু মানুষ নয়। তার পরেও এই চিকিৎসক পারে অনেক অসুখ সারিয়ে দিতে। যদিও তাকে দেখলে তো বটেই, তার নাম শুনলেও অনেকের গা ঘিনঘিন করে ওঠে।
এই চিকিৎসকের নাম জোঁক।
আয়ুর্বেদে জোঁকের মাধ্যমে চিকিৎসার কথা বলা আছে। সেই শতাব্দী প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিই হালে আবার জনপ্রিয় হয়েছে। দেখে নেওয়া যাক, কী ভাবে জোঁকের মাধ্যমে চিকিৎসা হয়।
আয়ুর্বেদে এর কথা বলা থাকলেও, হালে যে জোঁকে চিকিৎসা হয়, তা মূলত ইউরোপের। হাঙ্গেরি এবং সুইডেনে এই ‘চিকিৎসক’ জোঁক উৎপাদন করা হয়।
কী ভাবে চিকিৎসা হয় এদের মাধ্যমে? কোনও ব্যক্তির আক্রান্ত অঙ্গের ত্বকের উপর এই জোঁক বসিয়ে দেওয়া হয়। তারা ভিতর থেকে রক্ত টেনে বের করতে থাকে। আধ ঘণ্টা এ ভাবে রাখা হয়। তাতে মাত্র কয়েক মিলিলিটার রক্তই বেরোয় শরীর থেকে। আর তাতেই ওই স্থানের ব্যথা থেকে শুরু করে নানা ধরনের সমস্যা মেটে। ডায়াবিটিস বা অন্য সমস্যার কারণে যাঁদের অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়, তাঁদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসার পরিমাণ বাড়ছে।
কী কী সমস্যায় এখন কাজে লাগানো হচ্ছে জোঁক? দেখে নেওয়া যাক।
• হৃদরোগের ক্ষেত্রে: যাঁদের শরীরে অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়, কিন্তু হৃদযন্ত্রের আশপাশে কোনও কারণে ব্যথা হচ্ছে, যার ফলে হৃদযন্ত্রের পেশির ক্ষতি হচ্ছে— তাঁদের চিকিৎসা হতে পারে জোঁকের মাধ্যমে।
• ক্যানসারের চিকিৎসায়: রক্তের ক্যানসার বাদ দিয়ে অন্য বেশ কয়েকটি ক্যানসারের প্রাথমিক চিকিৎসায় জোঁককে কাজে লাগানোর কথা ভাবছেন চিকিৎসকেরা। এই নিয়ে গবেষণাও চলছে। দেখা গিয়েছে, জোঁকের লালারসে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা ক্যানসার বৃদ্ধির গতি কমাতে পারে।
ব্যথা কমাতে কাজে লাগে জোঁক।
• ডায়াবিটিস কমাতে: রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতেও এই পদ্ধতিতে চিকিৎসার প্রচলন হচ্ছে।
• মুখের ত্বকে: নানা কারণে মুখের ত্বকে রক্ত জমাট বাঁধে। অস্ত্রোপচার করে সেই সমস্যার সামাধান করা যায়। কিন্তু সবচেয়ে সহজ সমাধান হতে পারে জোঁকের সাহায্যে চিকিৎসা।
তবে মনে রাখতে হবে, সব ধরনের রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যায় এটি ব্যবহার করা যায় না। তা ছাড়া যাঁদের অটো ইমিউন জাতীয় সমস্যা আছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতিতে চিকিৎসায় নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।