(বাঁ দিকে) মা তনুজার সঙ্গে দুই কন্যা কাজল ও তানিশা। ছবিতে দৃশ্যমান জন্মদিনের বিশেষ কেক (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
মা, তনুজার ৮১তম জন্মদিন উদ্যাপন করলেন দুই কন্যা, কাজল ও তানিশা। সমাজমাধ্যমে সেই ছবি ভাগ করে নিয়েছেন কাজল। একটি ছবিতে মায়ের সঙ্গে দুই মেয়ে ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন। আর একটি ছবিতে দৃশ্যমান, জন্মদিনের বিশেষ কেক। সেই কেক নজর কেড়েছে অনুরাগীদের। কেকের উপর শোভা পাচ্ছে গোলাপি ও ক্রিম রঙের গোলাপ, ব্যবহার করা হয়েছে সিনে-জগতের জিনিসপত্রের ক্ষুদ্র সংস্করণ। তবে তাতে অন্য মাত্রা যোগ করেছে, কেকের উপরে তনুজার যৌবনের ছবি।
এমন কেক নিয়ে চর্চাও শুরু হয়েছে সমাজমাধ্যমে। অনেকেই কেক দেখে কৌতূহলী। যে মানুষটি কেক কাটবেন, তাঁকে খুশি করার প্রয়াসে কেক নিয়েও এখন ভাবনাচিন্তা হয়। ক্রেতার পছন্দমতো কেক তৈরিও করে দেওয়া হয়। যাকে বলে ‘কাস্টমাইজ়ড কেক’।
কী এর বিশেষত্ব?
কাস্টমাইজ়ড কেক, নিছক ‘কেক’ নয়। এর পিছনে থাকে সৃজনশীল ভাবনা। থাকে প্রচুর পরিশ্রম। থাকে নির্দিষ্ট বার্তাও। ‘কাস্টমাইজ়ড’ কেক হল থিম ও স্বাদের যুগলবন্দি।
আপনার মনে হল, সন্তানের অন্নপ্রাশনে একটি কেক তৈরি করাবেন, যা বাজারচলতি কেকের থেকে আলাদা। হতে পারে, সেই কেকে সন্তানের হাসিমুখের ছবি চাইছেন, কিংবা কেক সাজানো হচ্ছে দুধের বোতল, ন্যাপি, খেলনার ছবি দিয়ে। সে দিক থেকে দেখলে, ক্রেতার ভাবনা ও ইচ্ছার প্রতিফলনে তৈরি হয় কাস্টমাইজ়ড কেক। স্বাদেও নিজের পছন্দ জানিয়ে দেওয়া যায়।
লোকজনের চাহিদামতো কেক বানিয়ে দেয় দক্ষিণ কলকাতার ‘কেকেশ্বরী’। সংস্থার কর্ণধার মৌমিতা গুপ্ত শর্মা জানালেন, কেউ থিমে জোর দেন, কেউ ফ্লেভারে। জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী ছাড়াও, ব্যাচেলর্স পার্টি, আইবুড়োভাতের জন্য লোকজন বিভিন্ন ধরনের থিম চান। যেমন এক বার এক জন ক্রেতা তাঁর বয়স্ক বাবা-মায়ের বিবাহবার্ষিকীতে তাঁদের মতো দেখতে মডেল বানিয়ে দিতে বলেছিলেন।
জনপ্রিয় থিম
বিভিন্ন কেক প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, স্কুলপড়ুয়াদের ক্ষেত্রে নানা রকম কার্টুন চরিত্র, কমিকসের সুপারহিরোদের ছবি দিয়ে ‘কাস্টমাইজ়ড’ কেক বানানোর চল রয়েছে। এ ছাড়া ফুটবল, ক্রিকেট ব্যাটও থাকে। কেউ কেউ কেকের উপর নিজস্ব ছবি ব্যবহার করেন।
মেয়েদের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে টেডি বা বার্বির আদলে কেক হয়। আবার কেক-এ ‘ফ্রোজ়েন’ চলচ্চিত্রের মুখ্য চরিত্রের ছবিও চান অনেকে।
স্বাদে বৈচিত্র
শুধু থিম নয়, স্বাদেও বৈচিত্র থাকে। মৌমিতা বলছেন, ‘‘যেমন রাবড়ি, গুলোবো-সিতাবো, গুলাবজামুন রাবড়ি— নানা স্বাদের কেক পাওয়া যায়। শীতের দিনে তালিকায় জুড়ে যায় নলেন গুড়ের কেক। এ ছাড়া, বয়স্কদের জন্য সুগার ফ্রি, গ্লুটেন ফ্রি কেকও পাওয়া যায়।”
কেক্স-এর নিউ আলিপুর শাখার কর্মী অরুণ ছেত্রী জানাচ্ছেন, ক্রেতারা পছন্দের ছবি দেখালে, তাঁরা সেই অনুযায়ী বানিয়ে দেন। তবে ফ্লেভারে সাধারণত চকোলেট, ট্রাফল, বাটারস্কচ, ডাবল ট্রাফল ইত্যাদি পাওয়া যায়। টাটকা ফল দিয়েও কেক তৈরি হয় বিভিন্ন জায়গায়। জাস্ট বেক্ড-এর এক কর্মী মৃ্ন্ময় দাস জানালেন, তাঁদের সংস্থার তালিকা দেখেও কেউ কেক পছন্দ করতে পারেন। এর বাইরে ক্রেতার ব্যক্তিগত চাহিদা অনুযায়ী কেক তৈরি করা হয়। তাঁদের কাছে, মিক্সড ফ্রুট ও টাটকা ফলের ফ্লেভারের কেক থাকে। এ ছাড়াও কলকাতার প্রায় সমস্ত কেকবিক্রেতা সংস্থাই ক্রেতার চাহিদামতো কেক বানায়।
খরচ
কেকের দাম হয় তার ওজন অনুযায়ী। ‘কাস্টমাইজ়ড’ কেক সাধারণত এক পাউন্ডের কম হয় না। মোটামুটি ৮০০ টাকা থেকে দাম শুরু হয়।
কাস্টমাইজ়ড কেক তৈরির জন্য কত দিনে আগে অর্ডার?
কেক তৈরির জন্য অন্তত এক দিন আগে জানাতে হয়। তবে কোনও কোনও সংস্থায় অন্তত ৩-৪ দিন আগে বরাত না দিলে কেক পাওয়া যায় না।