অ্য়াজমার সমস্য়াকে কব্জা করতে চাইলে যোগাসনে আস্থা রাখুন। ছবি : শাটারস্টক
পঞ্চম বার্ষিক আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালিত হচ্ছে গোটা দেশ জুড়ে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও রাঁচিতে এই বিশেষ দিনটি পালন করে সকল ভারতীয়কে যোগাসন অভ্যাস করার আহ্বান জানান। শরীরচর্চার এই দিকটির গুণ নতুন করে বলার কিছু নেই। শারীরিক বিভিন্ন জটিলতা কাটাতে ওষুধবিষুধের পাশাপাশি যোগব্যায়ামে আস্থা রাখতে বলেন ফিটনেস এক্সপার্ট থেকে চিকিৎসক সকলেই।
‘‘আমাদের চারপাশের দূষণ, অধিক কায়িক শ্রম, ধুলো এগুলোও আমাদের শরীরকে ভিতর থেকে নষ্ট করে। তাই নানা অসুখবিসুখ বাসা বাঁধে শরীরে। তাই যত বেশি টক্সিন শরীর থেকে সরাতে পারবেন, ততই লাভবান হবেন। আর এই ডিটক্সিফাই করার অন্যতম সেরা উপায় যোগাসন অভ্যাস করা।’’ আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে ‘আনন্দবাজার ডিজিটাল’-কে এমন কথাই জানালেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামী।
যোগের উপর ভরসা করেই কাটিয়ে ফেলতে পারেন শরীরের নানা অসুবিধা। নিত্য শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যার সঙ্গে অনেকটাই যুঝতে পারেন যদি ফিটনেস এক্সপার্টের কথা মতো তেমন কিছু ব্যায়াম অভ্যাস করতে পারেন। যোগাসন ট্রেনার সুকোমল সেন সন্ধান দিচ্ছেন এমন কিছু ব্যায়ামের, যা প্রতি দিন অভ্যাস করলে হজম ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমে যায় অনেকটাই।
আরও পড়ুন: মা হতে চলেছেন? শুয়েবসে থাকা নয়, ব্যায়ামেই খুলবে জটিলতার জট
শারীরিক বিভিন্ন জটিলতা কাটাতে ওষুধবিষুধের পাশাপাশি যোগব্যায়ামে আস্থা রাখতে বলেন ফিটনেস এক্সপার্ট থেকে চিকিৎসক সকলেই।
অনুলোম-বিলোম: অ্যাজমাকে দূরে সরানো থেকে শুরু করে দৈহিক কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি— অনুলোম বিলোমে আস্থা রাখতে পারেন সব সময়। শ্বাসকষ্ট ও স্নায়ুর সমস্যায় ভুগছেন এমন রোগীদের জন্য এই ব্যায়াম অত্যন্ত উপকারী।
পদ্ধতি: ম্যাটের উপর পদ্মাসনে শিরদাঁড়া সোজা করে বসুন। এ বার এক হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে বাঁ নাক চেপে ধরে ডান নাক দিয়ে বড় করে শ্বাস নিন। শ্বাস ধরে রেখে দশ গুনুন মনে মনে। ওই একই হাতের তর্জনী দিয়ে ডান নাক চেপে বাঁ নাক দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। এক এক নাকে ১০ বার নিয়ে এক একটা সেট হয়। এই সেট চার বার করুন।
ডিপ ব্রিদিং উইথ চেস্ট এক্সপ্যানশন: সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে প্রথমে। দুই হাত সোজা করে কনুই না ভাঁজ করে সামনের দিকে তুলুন। দুই হাত জোড়া দিন, হাতের পাতা যেন জোড়া হয়। এ বার বড় করে শ্বাস নিতে নিতে দুই হাত দু’পাশে ছড়িয়ে দিন। এই কাজের সঙ্গে সঙ্গে গোড়ালি উঁচু করুন। এ বার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে হাত ও পা-কে আগের অবস্থায় নিয়ে আসুন। এ ভাবে বার পাঁচেক করুন।
উত্তনাসন: শ্বাসকষ্টের সমস্যা মেটাতে এই আসন অত্যন্ত কার্যকর। এ ছাড়া অনিদ্রার অসুখ কাটাতেও এই আসনে বিশেষ ফল মেলে। মানসিক চাপ কমিয়ে শরীর ও মনকে আলাদা করে শিথিল করে। স্নায়ুর সমস্যার ক্ষেত্রেও এটি খুবই কার্যকর।
পদ্ধতি: দুই পায়ের মাঝে একটু ফাঁক রেখে সোজা হয়ে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়ান। এ বার হাঁটু একটুও না ভেঙে কোমর থেকে শরীরের নিচের অংশ ঝুঁকিয়ে দিন। ওই ভাবে ১০-১৫ সেকেণ্ড থাকুন। প্রথম দিকেই অনেকটা পারবেন না। শিরায় টান না ধরা পর্যন্ত ঝোঁকাতে থাকুন। অভ্যাসের ফলে সড়গড় হওয়ার পর দেখবেন এক বারে অনেকটাই ঝুঁকিয়ে দিতে পারছেন। বার পাঁচেক করুন।
আরও পড়ুন: অনিয়ম, অনিদ্রা, কোলেস্টেরল ডেকে আনছে অকালেই বাইপাস, সুস্থ থাকতে পাতে রাখুন এ সব খাবার
শ্বাসকষ্ট ও স্নায়ুর সমস্যায় ভুগছেন এমন রোগীদের জন্য অনুলোম-বিলোম বিশেষ কার্য়কর।
মৎস্যাসন: শ্বাসের জন্য প্রয়োজনীয় পেশিকে কার্যক্ষম করে তুলতে ও হার্টে বেশি করে অক্সিজেন পৌঁছতে এই ব্যায়াম বিশেষ উপযোগী। তবে পিঠে বা কোমরে ব্যথা থাকলে পিঠের নীচে বালিশ বা গদি নিয়েও এই ব্যায়াম করা যায়।
পদ্ধতি: পদ্মাসনে বসে ওই অবস্থাতেই শুয়ে পড়ুন। গলা ও মুখ উপরের দিকে তুলে ঘাড়কে হেলিয়ে দিন পিছনে। এই সময় পেট ও বুকও উপরের দিকে উঠবে। মাথার তালু যেন মাটি স্পর্শ করে।হাত দুটি শরীরের সমান্তরালে রাখুন।বার তিনেক অভ্যাস করুন। তবে সব ব্যায়ামের পরেই শবাসনে থেকে সাধারণ শ্বাস-প্রশ্বাস নিন।