কোন সিরাপে খাওয়ানো যাবে না শিশুকে? ছবি: সংগৃহীত।
চার বছরের কমবয়সি শিশুদের জন্য সর্দি-কাশি কমাতে এক বিশেষ ধরনের সিরাপ নিষিদ্ধ করল ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সম্প্রতি একটি বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। কাশির সিরাপের কারণে বিশ্বব্যাপী ১৪১জন শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনার যাতে আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাজারে কাশির সিরাপের অভাব নেই। ঠান্ডা লাগার সমস্যা কমাতেও ভুরি ভুরি ওষুধ রয়েছে। তবে সবগুলিই যে ব্যবহারের অযোগ্য এমন নয়। এ ক্ষেত্রে চার বছরের নীচের সারিতে থাকা শিশুদের জন্য ‘ফিক্সড ড্রাগ কম্বিনেশন’ অর্থাৎ ‘এফডিসি’-অন্তর্ভুক্ত কোনও সিরাপ কিংবা ঠান্ডা লাগার ওষুধের ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে। ক্লোরোফেনিরামাইন ম্যালেট এবং ফেনাইলেফ্রাইন— এই দুই ধরনের উপাদান মিশ্রিত যে কোনও ওষুধ, সিরাপ চার বছরের কমবয়সি কোনও শিশুকে খাওয়ানো যাবে না। কিন্তু কোন ওষুধে কী উপাদান মেশানো আছে, তা সকলের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। ওষুধ এবং সিরাপের বোতলের গায়ে উপাদানের তালিকা উল্লেখ করে দেওয়ার জন্য ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কিছু দিন আগেই ভারতের প্রায় ৫০টিরও বেশি সংস্থা কর্তৃক তৈরি কাশির সিরাপ সরকারের গুণমানগত পরীক্ষায় ফেল করেছে, এমনটাই জানানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অরগানাইজ়েসন জানিয়েছে, ২১০৪ টি পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে ১২৮ টি সংস্থার মধ্যে ৫৪ টি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা কাশির ওষুধের গুণমান পরীক্ষায় সফল হয়নি। দেশের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে কাশির ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। ভারতে তৈরি নিম্নমানের কাশির সিরাপই গাম্বিয়ায় ৬৬টি শিশুমৃত্যুর কারণ— আমেরিকার শীর্ষ স্বাস্থ্য সংস্থা, সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এবং গাম্বিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যৌথ তদন্তে এই রিপোর্ট উঠে আসার পরেই দেশ জুড়ে কাশির সিরাপের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। তার পর থেকেই ওষুধ সংক্রান্ত যে কোনও বিষয় নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে ভারত সরকার।