শরীরী ভাষাতেই প্রকাশ পায় আত্মবিশ্বাস। ছবি: ফ্রি পিক।
অফিসের মিটিং হোক বা কোনও শিক্ষকের পড়ানো। কোনও কোনও মানুষ কথা বললে সকলেই তা মন দিয়ে শোনেন। বলা চলে, মনের সংযোগ নিজে থেকেই সে দিকে যায়। তা কি শুধুই গুছিয়ে কথা বলা বা বক্তার চেহারা আকর্ষণীয় বলেই?
যে মানুষ মিনমিন করে কথা বলেন, চোখে চোখে রেখে কথা বলতে পারেন না, তাঁদের কথাও কি আমরা ততটাই মন দিয়ে শুনি? প্রশ্নের মধ্যেই লুকিয়ে উত্তর। আসলে যিনি যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে, চোখে চোখ রেখে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলেন, তাঁর কথাই কিন্তু সকলে শুনতে চায়। কোনও রুদ্ধদ্বার মিটিং হোক বা জনসভায় বক্তৃতা, কিংবা একক ভাবে কারও সঙ্গে কথোপকথন, সমস্ত ক্ষেত্রেই শরীরী ভাষা খুব গুরুত্বপূর্ণ। চাকরির প্রয়োজনে সাক্ষাৎকার হোক বা কর্মক্ষেত্রে একটি দল পরিচালনা, কী ভাবে নিজেকে আরও ভাল ভাবে উপস্থাপন করা যেতে পারে, তা শিখে নেওয়া জরুরি।
ভঙ্গিমা
চাকরি হোক বা শিক্ষাক্ষেত্রে ভর্তি কিংবা দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য জরুরি কথা বলা, শরীরের ভঙ্গি খুব জরুরি। সোজা হয়ে দাঁড়ানো, চোখে চোখ রেখে কথা বলা, সঠিক পদ্ধতিতে করমর্দন আপনার আত্মবিশ্বাসকে ফুটিয়ে তোলে। সাক্ষাৎকারের সময় অপর ব্যক্তি যতই ব্যক্তিত্বপূর্ণ হোন না কেন, বুকের ভিতর যে ভয় করছে, তা প্রকাশ্যে আসতে দেওয়া চলবে না। বরং যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে গুছিয়ে কথা বলতে হবে। কোনও বিষয় না জানলে না-ই বলতে হবে। চাকরি বা শিক্ষাক্ষেত্রে সাক্ষাৎকারের জন্য চেয়ারে বসার সময় দু’পা যেন মাটিতে থাকে। পায়ের উপর পা তুলে বসাটা সঠিক নয়।
চোখ কোন দিকে
অন্য প্রান্তে যদি একজন বসে থাকেন, কথা বলার সময় তাঁর চোখের দিকে তাকানোর পাশাপাশি মুখের প্রতিও দৃষ্টি দিন। তবে কোনও ভাবেই মাথা নিচু করে কথা বলবেন না। গলার স্বর যে উচ্চগ্রামে থাকতে হবে, এমন নয়। তবে তা যেন অন্য পক্ষ স্পষ্ট ভাবে শুনতে পান।
আঙুলের ভঙ্গিমা
কথা বলার সময় হাত ও আঙুলও উঠে আসে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে। কারও বার বার কাঁধ ঝাঁকানোর অভ্যাস থাকে। কারও আবার দাড়িতে হাত দেওয়ার। এগুলো বৈঠকের সময় না থাকাই বাঞ্ছনীয়। বরং কোনও কিছু বোঝানোর সময়, একটি হাতের তালুতে অন্য হাতের আঙুল ছোঁয়ালে চারিত্রিক দৃঢ়তা ফুটে ওঠে।
হাতের তালুর ভঙ্গি
কথা বলার সময় দুই হাত ব্যবহার করেন অনেকেই। হাতের আঙুল খুলে কথা বললে, তালু দেখা যায়। এতেও আত্নবিশ্বাস, দৃঢ়তা ফুটে ওঠে।
মাথা হেলানো
অন্যের সঙ্গে কথা বলা মানে, শুধু বলা নয়, শোনাও। হালকা ঘাড় হেলিয়ে কথা শুনলে অন্য মানুষটির মনে হবে, গুরুত্ব দিয়ে তা শোনা হচ্ছে। জ্ঞাপনের ক্ষেত্রে এটাও গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক ভাষা হয়ে উঠতে পারে।
গলার স্বর
অন্যেরা যে স্বরে কথা বলছেন, সেই স্বরে কথা বললে, জনসংযোগ ভাল হবে। উচ্চগ্রামে যেমন নয়, তেমন খুব নিচু গলায় কথা বলাও খুব একটা কাঙ্ক্ষিত নয়।