শ্রীলেদার্স - নামটি বলে দিলেই অতিরিক্ত আর কিছু বলার প্রয়োজন হয় না। প্রোডাক্টের কম দাম এবং গুণমানের কারণে আজ এই ব্র্যান্ড প্রত্যেকের ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে। প্রায় ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে শ্রীলেদার্সের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন জ্ঞানেন্দ্র কুমার বেহেরা। কেমন ছিল তাঁর সেই অভিজ্ঞতা?
১. বাজারে এত গুলো ব্র্যান্ড থাকতেও আপনি শ্রীলেদার্সের ডিলারশিপই নিলেন কেন?
শ্রীলেদার্স পূর্ব ভারতের অন্যতম স্বীকৃত ব্র্যান্ড। এখানকার টেকসই প্রোডাক্টগুলির জন্য এটি ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা প্রথমে কলকাতার দোকান থেকে অনেকগুলি আইটেম কিনেছিলাম। এগুলির গুণমান অত্যন্ত ভাল ছিল। প্রথমে যখন আমরা পণ্যগুলি দেখি, তখনই আমরা শ্রীলেদার্সের জনপ্রিয়তার কারণ বুঝতে পারি। এছাড়া দুর্গাপুজোর সময়ে শ্রীলেদার্স কলকাতা ফ্ল্যাগশিপ স্টোরের বাইরে লম্বা লাইনও এই ফ্যামিলির অংশ হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ।
শ্রীলেদার্সের প্রোডাক্টগুলির দাম এবং তার গুণমানের কারণেই এটি অন্যান্য ফুটওয়্যার ব্র্যান্ডের থেকে এগিয়ে রয়েছে। সমাজের সব স্তরের মানুষের জন্যই জুতো পাওয়া যায় এখানে। বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট এবং তার দামের কারণেই এই ব্র্যান্ডটি আজ এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
২. শ্রীলেদার্স ডিলারশিপ পাওয়ার সিলেকশন প্রসেস কী ছিল?
প্রথমত, ম্যানেজমেন্টের প্রতিনিধিরা একটি মার্কেট সার্ভে করে গিয়েছিলেন। তারপর একাধিক স্ক্রিনিং মিটিং হয়েছিল। ম্যানেজমেন্ট বুঝতে চাইছিল যে ডিলার এই ব্র্যান্ডের প্রতি কতটা আনুগত্য। এবং কতটা দক্ষ ভাবে এই প্রোজেক্টের দেখভাল করতে পারবে।
এই মিটিংয়ের প্রসেসটি একটু দীর্ঘই ছিল কারণ এই সম্পর্কের গাঁটছড়া বাধা থাকবে জীবনভর। শুধু ডিলারই নন, ব্র্যান্ডের নেপথ্যে থাকা প্রত্যেক ব্যক্তির মনোভাব বোঝা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
চুড়ান্ত বৈঠকে সংস্থার এমডি এস.বি. দে নিজে উপস্থিত ছিলেন এবং তাঁর হাত ধরেই ডিলারশিপটি চূড়ান্ত হয়। প্রতি মূহূর্তেই সংস্থা, কর্মীদের প্রশিক্ষণ, বিপণন ধারণা, স্টক ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্নভাবে সাহায্য করে গিয়েছে।
গৌরব বেহেরা, আকাঙ্খা বেহেরা, পাপিয়া বেহেরা, জ্ঞানেন্দ্র কুমার বেহেরা (বাঁ দিক থেকে)
৩. শ্রীলেদার্সের বেস্ট ম্যানেজড স্টোরগুলির মধ্যে ভুবনেশ্বর একটি। সেই সঙ্গে গ্রাহক পরিষেবাতেও ত্রুটি নেই। রহস্যটা কী?
ভারতের একটি অন্যতম স্বীকৃত ব্র্যান্ড হওয়া সত্ত্বেও আমরা পারিবারিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই আমাদের ব্যবসাকে দেখাশোনা করি। কর্মচারীদের সমস্ত চাহিদা থেকে শুরু করে ব্যবসার উন্নতি সাধনের ক্ষেত্রে আমার স্ত্রীর অসাধারণ অবদান রয়েছে।
এ কথা সত্যি যে, আমাদের স্টোরের সাফল্যের মূল উপাদানই ছিল আমাদের গ্রাহক পরিষেবা এবং সন্তুষ্টি। আমরা প্রতিটি গ্রাহককে ব্যক্তিগত স্তরে গিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করি। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমরা দ্রুততার সঙ্গে তাঁদের সমস্যাগুলির সমাধান করি। আমরা বিশ্বাস করি যে গ্রাহকরা শ্রীলেদার্স পরিবারের সবচেয়ে মূল্যবান অংশ এবং সেই কারণেই আমরা সর্বদা আমাদের কাস্টমারদের অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকি। তাঁদের প্রতিটি প্রশ্ন এবং তাঁদের অভিযোগগুলিকে শীঘ্রই সমাধান করার চেষ্টা করি। স্টোরের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল এর পরিচালকেরা। কারণ দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ব্র্যান্ডের প্রতি তাঁদের আনুগত্য এবং নিবেদিত প্রচেষ্টার দ্বারাই এটি সম্ভবপর হয়েছে। সেই সঙ্গে কলকাতা শ্রীলেদার্সের হেড কোয়ার্টারের সার্বিক সহযোগীতার কারণেই আমাদের স্টোর আজ এতটা সফল হতে পেরেছে।
৪. শ্রীলেদার্স পরিবারের অংশ হওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন?
১৯৯৩ থেকে আমরা শ্রীলেদার্স পরিবারের অংশ। ১৯৯৯ তে ভুবনেশ্বরের ডিলারশিপ খোলা হয়। এঁদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা এক কথা দূর্দান্ত। সেই সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে ম্যানেজমেন্টের সহায়তা তো রয়েছেই।
দাদা (এমডি) এবং তাঁর গোটা পরিবারের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থান রয়েছে। এবং সত্যি বলতে তাঁরা তাঁদের প্রত্যেক বিজনেস অ্যাসোসিয়েটসকেই পরিবারের অংশ মনে করে।
৫. ২০২০ সকল ব্যবসায়ীদের জন্যই বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল. আপনি কী মনে করেন ২০২১ সালটা শ্রীলেদার্সের জন্যই বরাদ্দ থাকবে?
হ্যাঁ, অবশ্যই! ২০২০ প্রত্যেকের জন্যই একটি কঠিন বছর ছিল। আমরা আশা করছি যে শ্রীলেদার্সের বর্তমান ব্র্যান্ড ভ্যালু এবং বাজারে তাদের বিস্তৃত প্রোডাক্টের সম্ভার অবশ্যই ব্যবসার বৃদ্ধি ঘটাবে।
আমাদের ভুললে চলবে না যে, গ্রাহকরাই কিন্তু এই ব্র্যান্ডটি তৈরি করেছেন এবং তাঁরাই এটিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।