ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে শখের বাগান বাঁচাবেন কী ভাবে? ছবি: ফ্রিপিক।
আয়লায় ঘূর্ণিঝড়ের দাপট টের পেয়েছিল কলকাতা। ২০২২ সালে বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল আমপান। তার আগে কোনও ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি এতটা ধ্বংসলীলা কলকাতাবাসী দেখেননি। তার পর একে একে ইয়াস, রেমাল আছড়ে পড়েছে। এ বার প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে স্থলের দিকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’।
এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়তে চলেছে ওড়িশায়। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, পশ্চিমবঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকায় ঝড়ের দাপট থাকবে বেশি, ঘণ্টায় ১১০-১১০ কিলোমিটার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই কলকাতাতেও ঘণ্টায় ৬০-৭০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে।
এমন সময় সতর্ক থাকতে বলছে প্রশাসন। জরুরি জিনিসপত্র হাতের কাছে রাখার পাশাপাশি বিপদ এড়াতে ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের পাশাপাশি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাড়ির বাগানটিকে কী ভাবে বাঁচাবেন?
১. বারান্দায়, ছাদের পাঁচিল টবে গাছ সাজিয়েছেন? প্রথমেই সেগুলি নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে দিন। দমকা হাওয়ায় টব উড়ে কারও গায়ে আঘাত লাগতে পারে, আবার সেই টব ছিটকে পড়ে কোনও কিছু ভেঙেও যেতে পারে।
২. অনেকেই ছাদবাগানে ছাউনি ব্যবহার করেন। সেই ছাউনি শক্তপোক্ত তো! যে এলাকায় রয়েছেন, সেই এলাকায় ঝড়ের দাপট কতটা হতে পারে তা নিশ্চই জেনেছেন। যদি উপকূল এলাকায় বাড়ি হয় বা কোনও নদীর ধারে, যেখানে হাওয়ার বেগ বেশি হতে পারে, তা হলে আলগা ছাউনি খুলে ফেলার ব্যবস্থা করুন।
৩. চারা গাছ বা যে গাছগুলি ঝড়ের দাপট একেবারে সহ্য করতে পারবে না, সেগুলি যতটা সম্ভব ঘরের মধ্যে কোনও একটি জায়গায় এনে রাখতে হবে। তবে বাগান বড় হলে সমস্ত টব একেবারে সরিয়ে ফেলা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে টব-সহ গাছগুলি শুইয়ে রাখলে একদিকে ঝড়ের দাপটে টব ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি কমবে, তেমনই প্রবল বৃষ্টিতে গোড়ায় জল জমবে না। তা ছাড়া গাছগুলি পাঁচিলের গায়ে ঘেঁষাঘেষি করে রাখলেও কিছুটা সমস্যা এড়ানো যেতে পারে। এতে একটি গাছ আর একটি গাছের গায়ে পড়বে, ফলে চট করে টব ভাঙবে না।
৪. লতানে গাছের জন্য কঞ্চি বেঁধেছেন? সেগুলি কিন্তু মজবুত করে বাঁধতে হবে। আবার গাছ একটু বড় হলে, যেগুলি ভিতরে নিয়ে যাওয়া যাবে না, সেগুলি হেলে যাওয়া থেকে বাঁচাতে কিন্তু কঞ্চি বা বাঁশই কাজে আসবে। তবে সেগুলি এমন ভাবে ব্যবহার করতে হবে, যাতে ঝড়ে না উড়ে যায়। না হলে এ থেকেও বিপদ হতে পারে।
ঝড়বৃষ্টির পর
দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পরে গাছপালার বাড়তি যত্ন নিতে হবে। বিশেষত যে গাছগুলি বাইরে ছিল, অতিরিক্ত জলের কারণে তার গোড়া পচে যাতে পারে। ছত্রাকের আক্রমণও হতে পারে। প্রথমেই গাছের গোড়ায় জল জমলে তা পরিষ্কার করে দেওয়া দরকার। তার পর কোন গাছে, কী ধরনের সমস্যা হয়েছে বুঝে সেই মতো ওষুধপত্র দেওয়া দরকার।