দৈনন্দিন চাপ সামলে শান্তিতে থাকবেন কী ভাবে?
অফিস থেকে বাড়ি— কাজ নিয়ে উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু ব্যস্ততা, দায়-দায়িত্ব, পরিবার, বাড়ির ছোট সদস্যকে সামলানোর পাশাপাশি নিজের ভাল থাকাটা খুব জরুরি। কিন্তু কী ভাবে? ঘরে-বাইরে কাজ সামলাতে গিয়ে নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা। তার জেরেই শরীর-মন ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। মেজাজ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। অনেকেরই প্রশ্ন, এমন অবস্থায় মন শান্ত হবে কী করে?
কখনও ভেবে দেখেছেন, মন আপনাকে চালনা করছে, না আপনি মনকে? আসলে মনের উপর রাজত্ব করতে গেলে দীর্ঘ অভ্যাস, ধ্যানের প্রয়োজন হয়। তবে বেশ কয়েকটি চেষ্টায় কিছুটা হলেও, ভাল থাকতে পারেন। শান্ত রাখতে পারেন নিজের মনকে।
ভাল লাগাকে গুরুত্ব দিন
দিনভর কাজের চাপে অনেকেরই নিজের মতো করে বসে শান্তিতে চা বা কফিটাও খাওয়া হয় না। বিশেষত বাড়ির বউদের। তাঁরা যদি বাইরে কর্মরতা হন, বিশ্রামের সময়ই থাকে না। তার জের পড়ে শরীর ও মনে। তাই দিনের শুরু হোক বা শেষ, অন্তত আধ ঘণ্টা সময় যা ভাল লাগছে তাই করাটা দরকার।
গভীর শ্বাস
হয়তো পরিবার বা অফিসে কারও ব্যবহারে আচমকা মেজাজটা খাপ্পা হয়ে গিয়েছে, রেগে কিছু একটা বলে দিতে যাচ্ছেন, সেই সময়ে নিজেকে সামলে নিন। এ ক্ষেত্রে গভীর ভাবে শ্বাস নেওয়া ও শ্বাস ছাড়ার কৌশল সাহায্য করতে পারে। আচমকা মাথা গরম হয়ে গেলে মনকে শান্ত করার জন্য এই পদ্ধতি বেশ কার্যকর।
শরীরচর্চা
সহজ ব্যায়াম দিয়ে শুরু করতে পারেন। সকালে যদি মিনিট ১৫ সময় পান, রাস্তায় না হলেও ছাদে হেঁটে নিতে পারেন। ভোরের এক অদ্ভুত মাধুর্য থাকে। সূর্যের নরম আলো, ঘুম ভাঙা শহরের জেগে ওঠা ব্যস্ত জীবনে দেখতেই পান না অসংখ্য মানুষ। কিন্তু কোনও একটা ভোরে যদি আলস্য কাটিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়তে পারেন বা অন্তত ছাদেও যান, দেখবেন মন ভাল লাগায় ভরে যাচ্ছে। যোগব্যায়ামের পাশাপাশি কিছু ক্ষণ প্রাণায়াম করলে শরীর ও মন শান্ত হয়। দিনভর কাজ করার শক্তি মেলে।
সঠিক খাবার
শরীর-স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পুষ্টিকর খাবার খুব জরুরি। প্রাথমিক ভাবে মনে হতে পারে এর সঙ্গে মনের কী সম্পর্ক? আসলে হালকা ব্যায়াম, ফলের রস, পুষ্টিকর খাবারেরও মস্তিষ্কে প্রভাব পড়ে। শরীর ভাল না থাকলে দেখবেন, মেজাজও নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। তার উপর কাজের চাপ পড়লে, মন শান্ত রাখা সম্ভব হবে না।
রুটিন
অনেক সময় উদ্বেগের কারণ হয়ে ওঠে সময় অনুযায়ী কাজ করতে না পারা। সবচেয়ে ভাল হয় নিজের সুবিধামতো রুটিন করে নিলে। ঘড়ি ধরে কাজ করলে আগাম কিছু কাজ গুছিয়ে রাখলে বা কাজ কিছুটা ভাগ করে নিলেও সুবিধা হতে পারে।
ভাল ভাবুন
ভাবনাচিন্তাও কিছুটা অভ্যাস। খারাপ চিন্তা ভিড় করলে মনের উপর জোর প্রয়োগ করেও মনকে ব্যস্ত করে তুলুন। কাজে ব্যস্ত থাকলে সাধারণত খারাপ চিন্তা ভিড় করতে পারে না। খারাপ চিন্তা এলে চেষ্টা করুন সেই ভাবনা বদলে তার ইতিবাচক দিকটা খোঁজার।
অন্যের সঙ্গে কথা বলুন
মন শান্ত ও ভাল করার উপায় পছন্দের মানুষের সান্নিধ্য। তাঁদের সঙ্গে মন খুলে কথা বলা। যদি মনে হয় জীবনটা কঠিন হয়ে উঠছে, কী করবেন বুঝতে পারছেন না, তা হলে ভরসা করা যায় এমন মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিন।