‘ডিজিটাল ডিটক্স’ করবেন কী ভাবে? ছবি: শাটারস্টক।
ডিজিটাল দুনিয়ার কবলে পড়ার ক্ষেত্রে বয়স একেবারেই বাধা নয়। বাড়ির খুদে হোক কিংবা প্রৌঢ় সদস্য, এখন মোবাইলের নেশায় বুঁদ হচ্ছেন সকলেই। পড়াশোনার যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনই আবার কাজের প্রতিও মনোযোগ কমছে। কাছের সম্পর্কগুলিও ক্রমশ দূরে চলে যাচ্ছে এই কারণে। ডিজিটাল দুনিয়া কেড়ে নিচ্ছে মুখোমুখি আলাপ, আড্ডার অবসর। সতর্ক না হলেই কিন্তু বিপদ! শরীর ও মনের চাই ‘ডিজিটাল ডিটক্স’। জীবন থেকে ডিজিটাল দুনিয়ার প্রভাব সরিয়ে সুস্থ জীবনযাপন করার চাবিকাঠি কিন্তু আমাদেরই হাতে। তবে এই ডিজিটাল ডিটক্স অত সোজা নয়। শুরু করতে হবে ধীরে ধীরে। কী ভাবে শুরু করবেন ডায়েট?
ফোন ছাড়া ঘুরে আসুন: বেড়াতে গেলে এমনিই আমাদের মন ভাল হয়ে যায়। দু’দিন মোবাইল ফোন ছা়ড়া আশপাশের কোনও পাহাড়ি গ্রাম থেকে ঘুরে আসুন। খরস্রোতা নদীর বয়ে চলার দৃশ্য, পাহাড়ি গ্রামের মনোরম পরিবেশ মন খুলে উপভোগ করুন। কাল্পনিক বা ভার্চুয়াল জগতে নয়, প্রকৃতিকে উপভোগ করুন বাস্তবে। ফোন ছাড়া একটু অসুবিধা হবে ঠিকই, কিন্তু ফেরার পর মন অনেকটাই হালকা লাগবে।
বন্ধু খুঁজুন: ডায়েটের সময় আপনার একজন সঙ্গী দরকার। তাঁকে নিজের সমস্যার কথা খুলে বলুন। কোনও সময় ডিজিটাল দুনিয়ার প্রতি বেশি আসক্তি দেখালে তিনিই আপনাকে আটকাবেন। এই বন্ধু আপনার বাড়ির কোনও সদস্যও হতে পারেন। তাঁর সঙ্গে গল্প করে অনেকটাই সময় কাটাতে পারেন। সমাজমাধ্যমের বন্ধুদের তুলনায় বাস্তব জীবনের বন্ধুদের গুরুত্ব দিন। অজান্তেই আমরা কখনও কখনও কাছের মানুষজনকে অবহেলা করি ফেলি।
অ্যাপ ডিলিট করুন: দরকারি অ্যাপ ছাড়া বাকি অ্যাপগুলি ফোনে না রাখাই ভাল। মানে ধরুন, অ্যাপ ক্যাপ বুক করা, খাবার অর্ডার করার মতো দরকারি অ্যাপ রেখে সোশ্যাল নেটওয়র্কিং ও চ্যাট করার অ্যাপ ছাঁটাই করুন। দেখবেন, আর ফোনের দিকে তাকাতেও ইচ্ছে করবে না। কাজটা কঠিন হলেও করতে হবে। ডায়েট শুরু করার সময় একটু কড়া হতেই হবে।
ফোন হইতে সাবধান: মোবাইল ফোনই দিনের বেশির ভাগ সময় কেড়ে নেয়। হাতের কাছে ফোন থাকলেই, ফোন নাড়াচাড়া করতে ইচ্ছে করে। তাই বাড়িতে ফোনের জন্য একটা জায়গা নির্দিষ্ট করুন। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত চোখের সামনে ফোন নিয়ে খুটখুট করবেন না। ফোনের আলো কিন্তু ঘুমেও ব্যাঘাত ঘটায়। ঘুমোনোর অন্তত ঘণ্টা খানেক আগে থেকে ফোন থেকে দূরত্ব তৈরি করুন।
সময় স্থির করুন: কত ক্ষণ টিভি দেখবেন, কম্পিউটার চালাবেন আর ফোন ঘাঁটবেন, তার সময় বেঁধে নিন। চেষ্টা করুন ঘুম থেকে উঠেই ফোন থেকে অন্তত ঘণ্টাখানেক দূরে থাকার। চেষ্টা করুন অফিসের কাজ বাড়িতে নিয়ে না আসার। ঘুমোনোর অন্তত ঘণ্টাখানেক আগে ফোন রেখে দিন। অবসর সময়ে বই পড়ুন, পরিবারের সঙ্গে কাটান, গান শুনুন। নিজের পুরনো শখগুলি নিয়ে আবার ভাবনাচিন্তা শুরু করুন।