রাস্তায় বিক্রি হওয়া শরবত বা লস্যি খেলে কী বিপদ হতে পারে, সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরা। ছবি: ফ্রিপিক।
রাস্তার ধারে বিক্রি হওয়া লাল-নীল শরবত খেলেই তা থেকে টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। এমনই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। বিশেষ করে শরবতে যে বরফ মেশানো হয়, তা আসলে বাণিজ্যিক বরফ। এতে এত বেশি রাসায়নিক থাকে যে, তা থেকে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। শিশু বা বয়স্কদের এই ধরনের শরবত বা ঠান্ডা পানীয় খেতে বারণ করা হচ্ছে। এই জাতীয় পানীয় থেকে বিষক্রিয়াও হতে পারে বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরা।
রাস্তার ধারে বিক্রি হওয়া রং মেশানো শরবত অথবা লস্যি বা যে কোনও ঠান্ডা পানীয়েই বাণিজ্যিক বরফ মেশানো হয় অনেক জায়গাতেই। বাণিজ্যিক বরফ যে জল দিয়ে তৈরি, তা পানযোগ্য নয়। ওই বরফ দিয়ে তৈরি পানীয় খেলে জন্ডিস, টাইফয়েড, পেটের রোগ তো বটেই, নার্ভের অসুখ, কোলন ক্যানসারেরও ঝুঁকি বাড়তে পারে। মাছ, মাংস বা শবদেহ সংরক্ষণে যে বরফ ব্যবহার করা হয়, সেগুলি অনেক সময়ে বাড়তি হলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী তা ফেলে দেন। ওই বরফের একটা অংশ বাজারে চলে আসে। এমন বরফের দামও কম। এই বিষয়ে শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পালের বক্তব্য, বাণিজ্যিক বরফ দিয়ে তৈরি শরবত পেটে গেলে টাইফয়েডের ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ ঘটতে পারে। বিষক্রিয়াও হতে পারে। শিশুদের এমন ধরনের পানীয় না খাওয়ানোই ভাল।
মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মতে, ভারী ধাতু, দূষিত পদার্থ ছাড়াও থাকে বিসফেনল (এক ধরনের রাসায়নিক, যা প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়)। এই বিসফেনল শরীরের জন্য বিষ। যাবতীয় বিধিনিষেধ অগ্রাহ্য করে রাস্তার দোকানে বিক্রি হওয়া শরবত, পানীয়েই অবাধে মেশানো হচ্ছে বাণিজ্যিক বরফ। কারণ, এগুলির দাম কম। আর অপরিশোধিত জল থেকে যে হেতু বরফ তৈরি হচ্ছে, তাই এর থেকে লিভারের রোগ, কিডনির জটিল অসুখও হতে পারে।
বাণিজ্যিক বরফের ব্যবহার রুখতে পুরসভা বারে বারেই অভিযান চালায়। তবে এর সঙ্গে সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, গরমের দিনে স্কুল তেকে বেরিয়েই হত ছোটরা শরবত খেতে চাইবে বা রাস্তার লস্যি খাওয়ার বায়না করবে। সে সব কিনে না দিয়ে বরং বাড়ি থেকেই লেবুর শরবত বা টাটকা ফলের রস বানিয়ে নিয়ে যান। দই থেকে বাড়িতেই লস্যি বানিয়ে নিন। কোনও রকম ভাবেই যেন রাস্তায় বিক্রি হওয়া ঠান্ডা পানীয় এই সময়ে শিশুরা না খায়, সে বিষয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।