(বাঁ দিকে) শ্রীময়ী পিউ কুন্ডু এবং (ডান দিকে) স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
স্টেটাস সিঙ্গল! আক্ষরিক অর্থেই এই অবস্থান কোনও ব্যক্তির নির্দিষ্ট একটি পরিচয়ের ইঙ্গিত বহন করে। সমাজমাধ্যমে অনেকেই নিজের পরিচয় দেন এমন ভাবে স্টেটাস লিখে। তবে সেখানেই আটকে থাকে না এই পরিচয়। আশপাশের সকলে সেই পরিচয়ের নিরিখে কাউকে কী ভাবে দেখেন, তা-ও তো ভাবনার বিষয়।
শ্রীময়ী পিউ কুন্ডু এ বিষয়ে শুধু বই লেখেননি, সঙ্গে ফেসবুকের পাতায় একটি গোষ্ঠীও তৈরি করেছেন। যে মেয়েরা একাই থাকেন, তাঁরাই সেখানে সদস্য। কখনও স্বেচ্ছায়, কখনও বা পারিপার্শ্বিক চাপে পড়ে যে মেয়েরা একা চলার সিদ্ধান্ত নেন, তাঁদের একত্রিত করে সুখ-দুঃখ আদানপ্রদান করা, জীবনকে উদ্যাপন করার জোর দেওয়াই এই দলের কাজ। শ্রীময়ীর কথায়, “২০১৮ সালে অনলাইনে পথচলা শুরু করে স্টেটাস সিঙ্গল। বছর দুয়েকের মধ্যেই তার এমন বিস্তার হয় যে, আমরা অফলাইনেও কাজ করতে শুরু করি। শুধু কলকাতা নয়, আমাদের এই দল কাজ করে দেশ জুড়ে।”
সম্প্রতি নিজের ষষ্ঠ বই ‘এভরিথিং চেঞ্জেস’ প্রকাশ করেছেন শ্রীময়ী। মূলত নিজের জীবনের কথাই আছে তাতে। পুতুলখেলার বয়সে বাবার অস্বাভাবিক মৃত্যু বদলে দিয়েছিল শ্রীময়ীর জীবন। স্কুল থেকে শুরু করে আত্মীয়— সকলের চোখে নিজেকে হেরে যেতে, হারিয়ে যেতে দেখা সেই মেয়েই নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে বড় হয়ে ওঠে। একা মাকে লড়াই করতে দেখে তাঁর দ্বিতীয় বিয়ের জন্য। এমন ঘটনা যে শুধু শ্রীময়ীর জীবনে ঘটছে, তা কিন্তু নয়। তবে সকলে শ্রীময়ীর মতো সাহস করে এগিয়ে এসে বাবার আত্মহননের কথা তুলে ধরতে পারেন না। কিন্তু কোনও সমস্যাতেই একা যাতে বোধ না করেন কোনও মেয়ে, সে কথাই প্রচার করেন শ্রীময়ী। শহরের এক হোটেলে নিজের বই প্রকাশ অনুষ্ঠানেও সে কথা প্রকাশ করলেন লেখিকা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় এবং প্রবীণ সাংবাদিক মণিদীপা বন্দোপাধ্যায়। সে অর্থে ‘সিঙ্গল’ না হলেও জীবনে অনেকটা পথ একা চলতে হয়েছে স্বস্তিকাকে। নিজের মতো একা থাকতে শিখেছেন অনেকটা পরিস্থিতির শিকার হয়ে। তাঁর কথায়, “নিজের বাবার আত্মহত্যা নিয়ে কথা বলার সাহস দেখিয়েছেন শ্রীময়ী। এই সাহস কত জনের থাকে? শ্রীময়ীর লেখা একটা বই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একা পথ চলা এমন মেয়েদের একত্রিত করতে পেরেছে। এটাই তো অনেক। আমাদের সকলেরই উচিত ওঁর পাশে থাকা।”