ক্রমশ চড়ছে তাপমাত্রার পারদ। বাড়ছে অস্বস্তি। বৃষ্টির নামগন্ধ নেই। হাওয়া দফতর জানাচ্ছে, গরম বাড়বে বই কমবে না। গনগনে রোদে বাড়ি থেকে বেরোতেও মন চাইছে না। তাই বলে বাইরের তাপ কি গনগনে ভালবাসার উত্তাপ কমাতে পারে?
পারে না। বরং গ্রীষ্মের উত্তাপে সতেজ হয় প্রেম। সম্পর্ক। আরসুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে শরীর সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় করতে সুস্থ শারীরিক সম্পর্ক জরুরি।
কনকনে শীতে ভালবাসার এই শরীরী উদ্যাপন অনেকেরই বেশি প্রিয়। কিন্তু সমীক্ষা বলছে, শীতে নয়, গরমে এই উদ্যাপন আরও অনেক বেশি স্বচ্ছন্দময় হয়। গ্রীষ্মের উত্তাপে তার সব রকম উপাদান মজুত থাকে। অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন তো ঘেমেনেয়ে কাছের মানুষকে নিবিড় ভাবে পাওয়ার মধ্যে আদৌ কী আনন্দ থাকতে পারে?
সম্প্রতি এক বিদেশি কন্ডোম সংস্থা এই বিষয়টি নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছিল। সেই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মায়ামির মতো গরম আবহাওয়ার জলবায়ুতে বসবাসকারী মানুষরা ঠান্ডা জায়গার তুলনায় বেশি লিপ্ত হন যৌনতায়। আবার অন্য একটি সমীক্ষা বলছে, প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষ শুধুমাত্র গরমের কারণে যৌনতায় অনীহা প্রকাশ করেছেন।
গবেষণা বলছে,গরম আবহাওয়ায় শারীরিক ঘনিষ্ঠতার আলাদা তৃপ্তি পাওয়া যায়। এর পিছনে অবশ্য কিছু কারণ রয়েছে।
গ্রীষ্মকাল মানেই কড়া রোদ। ভিটামিন ডি-এর সমৃদ্ধ উৎস হল সূর্যের আলো। হাড় মজবুত করা, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি ভিটামিন ডি পুরুষের শরীরে যৌন হরমোন টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। ফলে গরমে ভিতর থেকেই প্রিয়জনকে নিবিড় ভাবে কাছে পাওয়ার ইচ্ছে তৈরি হয়।
শীতকালে সব সময় একটা মনখারাপ ঘিরে থাকে। অবসাদ সঙ্গী হয় নিত্যদিনের। এর কারণ লুকিয়ে আছে প্রকৃতিতেই। কারণ শীতে সূর্যের আলো কম সময় থাকে। তাড়াতাড়ি সূর্য ডুবে যায়। গ্রীষ্মে ঠিক উল্টোটা হয়। সূর্যের আলো বেশি ক্ষণ থাকে। সূর্যের আলোয় সেরাটোনিন হরমোন বেশি ক্ষরণ হয়।
মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তির বীজ লুকিয়ে থাকে সেরাটোনিন হরমোনে। ইংরেজিতে এই হরমোনকে ‘ফিল গুড’ হরমোন বলে। এই হরমোনের ক্ষরণে আনন্দে থাকে মন ও শরীর। গ্রীষ্মেও শারীরিক ঘনিষ্ঠতা মানসিক তৃপ্তি দেয়।
আসলে ভালবাসার কোনও মরসুম হয় না। শীত হোক বা গ্রীষ্ম, বর্ষা কিংবা বসন্ত-ভালবাসা উজাড় করে দেওয়ার কোনও সময় হয় না। তাই গরমেও মন খুলে ভালবাসুন প্রিয়জনকে।
গরমে অস্বস্তি থাকবে এটা খুব সাধারণ বিষয়। তাই বলে ভালবাসাতে তার প্রভাব পড়বে কেন? মনে রাখবেন, আবহাওয়া যেন শারীরিক ঘনিষ্ঠতার অন্তরায় হয়ে না দাঁড়ায়।