work from home

ওয়ার্ক ফ্রম হোম? কী ভাবে ভারসাম্য রাখবেন বাড়ি ও অফিসে?

মেনে চলুন কয়েকটা কৌশল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২০ ১৯:০৮
Share:

ঘর-অফিস ভারসাম্য করতে না পারলে ওয়ার্ক ফ্রম হোম খুব সুখের হবে না। ছবি: আইস্টক।

করোনার জেরে ঘরে বসে কাজ করার ব্যবস্থা কার্যকরী হয়েছে। বাড়িতেই তুলে আনতে হয়েছে গোটা অফিস, এ দিকে বাড়িতে আছেন বলে, সংসারেও একটু বেশি সময় দেওয়ার ফুরসত পাচ্ছেন। এমন অবস্থায় ঘর-অফিস ভারসাম্য করতে না পারলে ওয়ার্ক ফ্রম হোম খুব সুখের হবে না। বসের হুকুম, সংসারের কাজ, নিজের শখ, সব কিছুই সুন্দর করে সারতে পারেন যদি মেনে চলেন কয়েকটা কৌশল।

Advertisement

দরকার পরিকল্পনা

• যাতায়াতের সময় বেঁচেছে। তাই সেটা কাজে লাগান। যে সময়টা যাতায়াত করতেই কেটে যেত সেটায় কিছু দরকারি কাজ সেরে ফেলুন। সংসারের কাজের বোঝাগুলো সেখানে রাখতে পারেন।

Advertisement

• দিনটাকে কয়েকটা ভাগে ভাগ করে নিন। জেগে থাকার সময়ে অফিসের বরাদ্দ সময় বাদ দিয়ে আর কী কী কাজ কখন করবেন, সেটা ঠিক করে নিন।

• যে কাজে হাত দিচ্ছেন, তা অফিসের হোক বা ব্যক্তিগত, শেষ না করে অন্য কাজ ধরবেন না। এতে কাজ সারা যাবে দ্রুত।

• কাজ সারতে নিজেকে বেঁধে দিন সময়। চেষ্টা করুন তার মাঝেই কাজটা শেষ করতে।

• এই সময় অনেকের বাড়িতেই গৃহপরিচারিকারা আসছেন না। তাই সংসারের কাজ কোনও এক জনের ঘাড়ে পুরোটা না চাপিয়ে নিজেও তাতে যোগ দিন। যে সময়টা অফিসে থাকাকালীন ব্রেক নিতেন, সেই ফাঁকে কয়েকটা জলের বোতল ভরা বা ঘরটা ঝাঁট দিয়ে নেওয়া যায় কিন্তু!

• ছুটির দিন ছাড়া অন্য দিন বাড়িতে থেকে দুপুরের খাবার খাওয়ার সুযোগ খুব বেশি হয় না। বাড়ির সকলের সঙ্গে পরিপাটি করে খাওয়াদাওয়া-আড্ডা সবটাই লোভনীয়। তা বলে অনেকটা সময় তাতেই ব্যয় করে ফেলবেন না। এতে কিন্তু নিজেরই কাজ শেষ করতে দেরি হবে। বরং অফিস মিটিয়ে সন্ধের টিফিন বা রাতের খাওয়ায় ওই ঘরোয়া আবহ ফিরিয়ে আনুন।

কথা চলুক

কাজ নিয়ে কোনও জটিলতা এলে বা কোনও বিষয়ে অসুবিধা হলে বাড়িতে বসেই বস ও সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলুন। জটিলতা পুষে রেখে কাজের দেরি করলে আপনার ব্যক্তিগত কাজের সময় কমবে।

আরও পড়ুন: হার্টের অসুখ রয়েছে? করোনা ঠেকাতে এই সব মেনে চলুন

সময় দিতে হবে পরিবারকেও। অফিসের দিনগুলো যাতায়াতের ক্লান্তিতে বাড়ি ফিরে আর কথা বলার অবকাশ হয় না ভাল ভাবে? এই ক’দিন সেগুলোই বেশি করে করুন। একসঙ্গে বসে সিনেমা দেখুন, নতুন নতুন রেসিপি রাঁধুন। খেতে ভাল হলে তো কথাই নেই, তেমন জুতের না হলে কোথায় ভুল হল বুঝে, ফের এক দিন একই রেসিপি তৈরি করুন। রান্নাবান্না মনও ভাল রাখে।

বাড়িতে কেউ অসুস্থ থাকলে তাঁকে সময় দিন। সারা বছর অফিসের চাপে যতটা দিতে পারেন, তার চেয়ে বেশি।

যোগাযোগ রাখুন

এই অবস্থায় বাড়ির মধ্যে লোকজন ডেকে আনন্দ করবেন না একেবারেই। কোনও আত্মীয়ের বাড়ি যেতে পারছেন না ঠিকই। তাঁদেরও আসার উপায় নেই। কিন্তু ফোন রয়েছে তো? এক দিন কনট্যাক্ট লিস্ট খুলে দেখে নিন, কার কার সঙ্গে আর সে ভাবে কথা হয়ে ওঠে না, কোন কোন আত্মীয়ের সঙ্গে যোগাযোগ ফিকে হয়েছে। এই ক’দিন দিনের একটা ঘণ্টা বরাদ্দ রাখুন তাঁদের সঙ্গে কথা বলার জন্য। এতে তাঁরাও খুশি হবেন। দীর্ঘ যোগাযোগহীনতার আগলও ভেঙে যেতে পারে।

সোশ্যাল সাইটেও চোখ রাখতে হবে বইকি! তবে অফিসের কাজের ফাঁকে নয় একেবারেই। বরং কাজ সেরে কিছুটা সময় দিন এখানে। কিন্তু বাড়ির লোককে দেওয়া সময়ের চেয়ে তা যেন বেড়ে না যায়। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, সবেতেই সক্রিয় থাকুন সময় মেপে। অনেক সময় ফেসবুকে কোনও বিতর্কে অংশ নিতে গিয়ে কেউ কেউ সময়ের খেই হারিয়ে ফেলেন। এ দিকে খেয়াল রাখুন। প্রয়োজনে তেমন বিতর্ক এড়িয়ে চলুন।

আরও পড়ুন: হার্টের অসুখ রয়েছে? করোনা ঠেকাতে এই সব মেনে চলুন

পছন্দের রেসিপি বানিয়ে মনের চাপ হালকা করুন।

পরিবারকেও বোঝান

পেশাদারিত্বের প্রশ্নে যেন পিছিয়ে না পড়েন, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যে কাজটা করবেন, তাতে যেন একটুও ভুলভ্রান্তি না থাকে। পরিস্থিতির কারণেই আপনি বাড়িতে বসে কাজ করছেন, কিন্তু আসলে এটা অফিস টাইমই— পরিবারের সদস্যরা এ কথা বুঝতে না চাইলে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে, ঠান্ডা মাথায় বোঝাতে হবে। সমস্যা না মিটলে দরকার হলে প্রতি দিনই নানা কাজের ফাঁকেই এই প্রসঙ্গে আলোচনা করতে হবে।

নিজেকে ভালবাসুন

অফিসের কাজ আর সংসারের কাজ— এই দুইয়ের মাঝে নিজের জন্যও রাখতে হবে সময়। পুষ্টিকর খাবার, প্রচুর জল, ফল যেন পাতে থাকে। দরকারে যে সব পুষ্টিকর ব্রেকফাস্ট তাড়াহুড়োয় বেরনোর জন্য বানাতে পারেন না। এ বার সেগুলো বানিয়ে খান।

অফিস মিটলে হুড়োহুড়ি করে ফেরার তাড়া তো নেই? সেই সময়টা, মানে সন্ধের দিকে একটু ফ্রি-হ্যান্ড বা মেডিটেশন করুন। মন শান্ত থাকবে।

বই পড়ার বা গান শোনার নেশা থাকলে সে সবের জন্যও সময় রাখুন অফিস মিটে যাওয়ার পরে। এতে কাজে বসার তাড়া থাকবে না। নির্ভার হয়ে বই পড়তে পারবেন।

যে কাজ ঘন ঘন করতেই হবে

সব কাজের মাঝেই এক ঘণ্টা অন্তর সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে কচলে হাত ধুয়ে নিন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement