Wallpaper to Prevent Damp

বর্ষায় ড্যাম্প ধরা দেওয়ালে রং করাতে পারছেন না? সমাধান দিতে পারে ‘ওয়ালপেপার’

বছরের পর বছর ড্যাম্প ধরা দেওয়ালের টাইল্‌স বদলে চলেছেন। কিন্তু ড্যাম্প তো আটকাতে পারছেন না। উল্টে খরচ বে়ড়েই চলেছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তির পথ দেখাচ্ছে হালফ্যাশনের ওয়ালপেপার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৩ ১৯:৩৭
Share:

ছবি: প্রতীকী

বর্ষা আসতে না আসতে পুরনো বাড়ির দেওয়াল আবার ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। সেই দেওয়ালে লাগানো টাইল্‌সও ঝুলে খুলে পড়ার উপক্রম হয়েছে। ড্যাম্প ধরা দেওয়াল পুরো না ভেঙে, কম খরচে সমস্যা সমাধানে এক সময়ে রাজমিস্ত্রীরাই এই নিদান দিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু বছর যেতে না যেতে ড্যাম্প আবার স্বমহিমায় ফিরে এসেছে। পুরনো বাড়ির লাল মেঝে বা মোজ়ায়েক এবড়ো-খেবড়ো হয়ে যাওয়ায় তা প্লাস্টিকের এক রকম শক্ত চাদরে ঢেকে দেওয়ার রেওয়াজ ছিল এক সময়ে। কিন্তু দেওয়ালের ড্যাম্প যে কে সেই। তবে ইদানীং বিভিন্ন জায়গায় দেওয়ালে শৌখিন ‘ওয়ালপেপার’ লাগানোর চল হয়েছে। কিন্তু জিনিসটি কতটা টেঁকসই, তা নিয়ে দোলাচল কাটেনি বাঙালির।

Advertisement

বর্ষাকাল এলেই প্রতি বছর দেওয়াল ফুলে-ফেঁপে একাকার অবস্থা। প্রতি বছর ঘরে ‘চুনকাম’ আর হেঁশেলে এলা রং। এই ছিল নিয়ম। নব্বইয়ের দশকে সেই বাড়ির ড্যাম্প ধরা মেঝেতে বসল টাইল্‌স। রান্নাঘরের তেল, কালি, মশলার দাগ সহজেই পরিষ্কার করা যাবে বলে গ্যাস যেখানে থাকে, সেই দেওয়ালে লাগানো হল টাইল্‌স। আর বাকি অংশটুকুতে ‘অয়েল বা ‘ওয়াশেব্‌ল পেন্ট’। এই টোটকায় কয়েক বছর দিব্যি সুন্দর কাটে। কিন্তু বর্ষাকাল আসতেই আবার সেই দেওয়াল ফুলে-ফেঁপে উঠে ঝরঝর করে খুলে পড়ে টাইল্‌স। চারু মার্কেট এলাকায় প্রায় ৮০ বছরের পুরনো বাড়িতে থাকেন মিত্র দম্পতি। যা-ই হয়ে যাক না কেন, পৈতৃক ভিটে তাঁরা ছাড়তে পারবেন না। সেই বাড়ির গৃহকর্তা স্বপন মৈত্র বলেন, “প্রতি বছর একটা বাজেট ধরেই রাখতে হয় মেরামতির জন্য। অন্যান্য খরচ থাকলেও ড্যাম্প ধরা দেওয়াল থেকে টাইল্‌স ভেঙে ওয়ালপেপার লাগানোর পর খরচ কিছুটা হলেও কমেছে। পাঁচ বছর তো হল। এখনও তেমন কিছু হয়নি।”

ছবি: প্রতীকী

পুরনো বাড়ি হোক কিংবা ফ্ল্যাট, এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। বেশির ভাগেরই ধারণা, খুলে যাওয়া টাইল্‌স বদলে ফেললেই বোধ হয় সমস্যা মিটে যাবে। টাইল্‌স পাল্টানোর ঝক্কি নিতে পারলেও দেওয়ালে ওয়ালপেপার ব্যবহার করা নিয়ে সংশয় রয়ে গিয়েছে মানুষের মনে। কিছু দিন আগে পর্যন্ত বড় বড় হোটেল, রিসর্ট, বহুজাতিক সংস্থার অফিসের দেওয়ালে মেঝে বা সেখানকার অন্দরসজ্জা অনুযায়ী, এই ওয়ালপেপারের ব্যবহার দেখা যেত। তবে শুধু যে ড্যাম্পের কারণেই মানুষ ওয়ালপেপাপের দিকে ঝুঁকছেন, এমনটা নয়। এখন অনেকেই বাড়িতে নিজের রুচি-পছন্দ অনুযায়ী ওয়ালপেপার কিনে দেওয়াল সাজিয়ে নেন। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত রিয়া দেবনাথ ভাড়া থাকেন দমদম এলাকার একটি বাড়িতে। তিনি বলেন, “বাড়ির মালিক দেওয়াল ভেঙে কিছু করতে দেবেন না। এ দিকে বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় থেকেই বেসিনের দেওয়ালে গাঢ় সবুজ রঙের টাইল্‌স বসানো। ওই জিনিসটি আমার একেবারেই পছন্দ ছিল না। তাই অনলাইনে কেনা জয়পুর প্রিন্টের একটি ওয়ালপেপার আমি টাইলসের উপর আঠা দিয়ে আটকে দিয়েছিলাম। এখনও দিব্যি রয়েছে।” রিয়ার মতো ঘরের দেওয়ালের ছোট্ট একটি অংশ সাজিয়ে তুলতে খুব বেশি কষ্ট করতে হয় না। তবে গোটা দেওয়াল জুড়ে ওয়ালপেপার লাগাতে গেলে পেশাদার শিল্পীর পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

Advertisement

ছবি: প্রতীকী

কেমন দামে, কোথায় পাবেন এই ওয়ালপেপার?

বিভিন্ন দামের, বিভিন্ন মানের এই ওয়ালপেপারগুলি সাধারণত স্কোয়্যার ফুট হিসাবে কিনতে পাওয়া যায়। ৯৯ টাকা থেকে শুরু করে ৮,০০০ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন দামের ওয়ালপেপার রোল পাবেন। কলকাতার এক্সাইড মোড়ের কাছে হোমল্যান্ড মলে গিয়ে নিজের চোখে দেখে, ঘুরে আসতেই পারেন। বিভিন্ন রঙের, বিভিন্ন দামের ওয়ালপেপার দেওয়ালে সাঁটিয়ে রাখা থাকে। এই ওয়ালপেপার ঘরের দেওয়ালে রাখলে কেমন দেখাতে পারে, সে সম্পর্কে ক্রেতাদের সম্ভাব্য ধারণা দেওয়ার জন্য অস্থায়ী ভাবে বিভিন্ন আসবাব দিয়ে সাজানো ঘর রয়েছে। তবে বাজেট যদি সমস্যা হয়, হাতের কাছেই রয়েছে চাঁদনি মার্কেট। সাধ্যের মধ্যে সাধপূরণ করতে সেখানেও যেতে পারেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement