সন্তানকে কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে তার জন্য সুন্দর করে সাজিয়ে ফেলুন একটি ঘর। ছবি: সংগৃহীত
যুগের সঙ্গে সঙ্গে বদলায় শৈশবও। এখন বাইরের জগতের সঙ্গে তাদের যোগসূত্র তৈরি হয়ে যায় অল্প বয়সেই। বিশেষ করে কৈশোরে পৌঁছে গেলে তাদেরও কিছুটা একান্ত পরিসর দরকার। একটা সময়ের পর থেকে একা সময় কাটানো প্রতিটি মানুষেরই প্রয়োজন। এই একা কাটানো সময় এনে দিতে পারে সৃজনশীল চিন্তাভাবনার বিকাশ। তাই এখন অনেকেই কৈশোরে পা দেওয়া সন্তানের জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু কেবল আলাদা দুনিয়া গড়ে দিলেই তো হল না, সেটা সাজিয়ে দেওয়াও তো দরকার। সন্তানকে কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে ফেলুন একটি ঘর। তার পর সন্তান ফিরে এলে চমকে দিন তাকে।
ছোটদের ভাবনার দুনিয়ায় কল্পনার শেষ নেই। কেউ পছন্দ করে রূপকথার দত্যিদানো, কেউ ভালবাসে হ্যারি পটার। কেউ আবার মোবাইল গেম কিংবা কার্টুনে মত্ত। তাই তাদের ঘর সাজানোর সময় নজর রাখতে হয় ওদের পছন্দের দিকটা। সন্তানের প্রিয় রং লাগিয়ে দিতে পারেন ঘরের দেওয়ালগুলিতে। যদি একাধিক রং পছন্দ হয়ে থাকে তবে আলাদা আলাদা দেওয়ালে আলাদা রং করতে পারেন। ঘর খুব শিশুসুলভ করার দরকার নেই। বরং তার মানসিক পুষ্টি জোগাবে এমন ঘর তৈরি করুন। দেওয়ালে এঁকে দিতে পারেন তার প্রিয় চরিত্রের ছবি। বিষয়ভিত্তিক কোনও ভাবনা সন্তানের ঘরের দেওয়ালে ঠাঁই দিতে চাইলে শিল্পীকে দিয়ে আঁকিয়ে নিন দেওয়াল।
কৈশোরে সন্তান খুব তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যায়। তাই খাটের মাপ ছোট করে লাভ নেই। দুই সন্তান একসঙ্গে থাকলে এখন অনেকেই দোতলা খাট কেনেন। তবে ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে সন্তান যেন উপরের খাটটি থেকে পড়ে না যায়। খাটের কাছে অবশ্যই ড্রয়ার রাখুন। এতে সন্তান নিজের প্রয়োজন মতো জিনিসপত্র রাখতে পারবে। খাটের এক পাশে, কিংবা সুযোগ থাকলে দু’পাশে দুটি সাইড টেবিল রাখুন।
বিষয়ভিত্তিক কোনও ভাবনা সন্তানের ঘরের দেওয়ালে ঠাঁই দিতে চাইলে শিল্পীকে দিয়ে আঁকিয়ে নিন দেওয়াল। ছবি: সংগৃহীত
ঘরকে ভরিয়ে দিন বিষয়ভিত্তিক কিছু ভাবনায়। এমন কিছু ভাবনা, যাতে বয়স বাড়ার সঙ্গে সেই ভাবনাটা শিশুর কাছে একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক না হয়ে পড়ে। যেমন জলের নীচের জগৎ হতে পারে, কিংবা হতে পারে মহাকাশের অদ্ভুত রহস্য, হতে পারে গভীর জঙ্গল কিংবা এক নদী। হতে পারে পাহাড়। আসবাব কিংবা আলমারিতে ফুটে উঠুক সেই সাজ। যদি সন্তান বই পড়তে ভালবাসে তবে সুন্দর করে তাক করে দিন। কম্পিউটারে আগ্রহ থাকলে সাজিয়ে দিন কম্পিউটার টেবিল।
তবে আসবাবের ক্ষেত্রে খুব বড় মাপের ওয়ারড্রোবের দরকার নেই। ক্যাবিনেট তো একেবারেই নয়। শিশুর সুবিধার কথা মাথায় রেখে ওয়ারড্রোবের নীচে ড্রয়ার রাখাটা ভাল। দেওয়ালে জায়গা থাকলে সেখানে কিংবা আলমারির পাল্লাতেই একটা আয়না লাগিয়ে দিতে পারেন।
সন্তানের ঘরের পর্দা হবে খুব সহজ-সরল। পর্দায় প্রিয় চরিত্র, কিংবা কার্টুন আঁকিয়ে নেওয়া যেতে পারে। যেহেতু পর্দা কিছু দিন পর পাল্টে দেওয়া যায়, তাই সন্তানের যখন যেমন পছন্দ, তেমন পর্দা লাগান। তবে পর্দা যেন আলো হওয়া না আটকে দেয়। ঘরে আলো-বাতাস চলাচল করা প্রয়োজন। বিশেষত পড়ার টেবিলে, খাটের কাছে যেন আলোর-বাতাস খেলে। সম্ভব হলে যে ঘর থেকে বাইরের গাছপালা, পশুপাখি কিংবা আকাশ দেখা যায়, সেই ঘরটাই দিন সন্তানকে।