কুশন কভারে উজ্জ্বল রঙের ছোঁয়ায় অনেকটাই বদলে যাবে অন্দরমহলের চেহারা। ছবি: সংগৃহীত
পুজো এসে পড়ল। মনের মধ্যে যেন খুশির আমেজ। নিজেদের এবং নিজের চারপাশকে সাজিয়ে তুলতে মন চায়। বাড়ি তো শুধু ইট-কাঠ-পাথরের অবয়ব নয়, বাড়ি একটা আবেগ। মনের শান্তি, প্রাণের আরাম। তাই সাজগোজ থেকে যেন বাড়িও বঞ্চিত না হয়, সে দিকে নজর রাখতেই হবে। এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা পুজোর ক’দিন ঘরের অন্দরেই খুঁজে নিতে চান শরীর-মন ভাল রাখার রসদ।
বাড়ি-ঘর পরিষ্কার করা অনেকের কাছেই ঝক্কির মনে হয়। পুজোর আগে বাড়ি সুন্দর করে গুছিয়ে রাখতে একটু সময় আর একটু বুদ্ধি খরচ করলেই চলবে। ঘেমেনেয়ে একসা না হয়ে, পকেটের দিকেও যথাসাধ্য খেয়াল রেখে কী ভাবে নতুন আঙ্গিকে সাজিয়ে তুলবেন আপনার ঘর?
১) পুরনো খবরের কাগজ, কাজে না লাগা টুকরোটাকরা জিনিস, খুদের বাতিল বই-খাতা, ছেড়া জামাকাপড়— এমন নানা জিনিসপত্র ঘরের অনেকটা জায়গা দখল করে থাকে। এই বাড়তি সামগ্রী থেকে মুক্ত হতে পারলেই ঘর অনেক পরিচ্ছন্ন দেখাবে। কিছু বাড়তি জামাকাপড় কোনও সংস্থায় পাঠিয়ে দিতে পারলে কয়েক জন মানুষের মুখে হাসি ফোটে। সেটাই বা কম কী!
২) সুন্দর করে গুছিয়ে নিন আলমারি। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী থাকে থাকে ভাগ করে পোশাক সাজিয়ে রাখুন, খুঁজতে সুবিধা হবে। দৈনন্দিন ব্যবহারের ও উৎসব-অনুষ্ঠান কিংবা পার্টিতে পরার জামাকাপড় আলাদা রাখুন। ড্রেসিং টেবিলে খুব বেশি জিনিস দিয়ে ভরে রাখবেন না! রোজের আবশ্যিক জিনিসগুলি টেবিলে সাজিয়ে রেখে বাকি সব চালান করে দিন ড্রয়ারে।
পুজোর ক’দিন ঘরের অন্দরেই খুঁজে নিন শরীর-মন ভাল রাখার রসদ। ছবি: সংগৃহীত
৩) ভুলেও অবহেলা করবেন না রান্নাঘরকে। হেঁশেলের দেওয়ালের হুক লাগিয়ে বড় তাওয়া, সসপ্যান, হাতা ঝুলিয়ে রাখুন। ক্যাবিনেটে কিছুটা জায়গা ফাঁকা হবে। মশলার কৌটোগুলি পরিষ্কার করে গায়ে লেবেল সেঁটে ফেলতে পারলে ভাল। রান্নাঘরে রাখুন ঢাকনা দেওয়া ডাস্টবিন। বেকিং সোডা, লেবু ও তরল সাবানের মিশ্রণ বানিয়ে তেলচিটে জায়গাগুলি পরিষ্কার করে নিন। এখন বেশকিছু বাড়ি বা ফ্ল্যাটে হেঁশেলের জায়গাটি খোলাই থাকে। তাই রান্নাঘর চকচকে না থাকলে আপনার ঘর গোছানো মাটি।
৪) শৌচালয় থেকে অনেক সময়েই পুরনো তেলের বোতল, প্রায় শেষ হয়ে আসা সাবান সরাতে ভুলে যাই আমরা। সে সব সরিয়ে ফেলে আপনার ‘টয়লেট বক্স’ গুছিয়ে ফেলুন এ বার। স্নানঘরের জন্য ব্যবহার করুন বিশেষ সুগন্ধি।
৫) আসবাবের সামান্য স্থান পরিবর্তনও এনে দিতে পারে নতুনত্বের আমেজ। শুধু খেয়াল রাখতে হবে এই বদল যেন দৈনন্দিন কাজে অসুবিধা না ঘটায়। জানলা-দরজার পর্দা, বিছানার চাদর, টেবিলের ঢাকা, কুশন কভারে উজ্জ্বল রঙের ছোঁয়া আনলে অনেকটাই বদলে যাবে অন্দরমহলের চেহারা। তৈরি হবে উৎসবের মেজাজ।
৬) অর্কিড, পাতাবাহার, ক্যাকটাস, পিস লিলি, অ্যালো ভেরা স্নেক প্ল্যান্ট, আজেলা—হরেক প্রজাতির গাছ বারান্দায়, ঘরের কোণে সাজিয়ে রাখা যায় অনায়াসে। এমন গাছ ঠাঁই হতে পারে সেন্টার টেবিল বা রান্নাঘরেও। বারান্দার দেওয়ালে রংবেরঙের পাত্রে ঝুলিয়ে রাখা যায় ছোট ছোট গাছ। এতে আপনার চোখ ও মন দুইয়েরই আরাম হবে। এ ছাড়া, উৎসবের মরসুমে ঘরের ভোল বদলাতে টাটকা ফুলও ব্যবহার করতে পারেন।