কোন কোন সংস্থার মশলায় মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত সীসা? ছবি: শাটারস্টক।
ভারতের ১২ টি সংস্থার প্যাকেটজাত দারচিনি গুঁড়ো ও গরমমশলায় মিলেছে অতিরিক্ত মাত্রায় সীসা। সম্প্রতি এক রিপোর্টে এমনই তথ্য প্রকাশের পর থেকে চিন্তা বেড়েছে চিকিৎসক মহলে। উচ্চ মাত্রায় সীসা শরীরে গেলে কিডনির অসুখের ঝুঁকি বাড়ে, হার্ট ও লিভারের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায় কয়েক গুণ।
ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ থেকে হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে অনেকেই নিয়ম করে ডায়েটে এই মশলা রাখেন। অ্যালঝাইমার্স রোগের ঝুঁকি কমাতেও এই মশলা কাজে আসে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর এই মশলা শরীরে ফ্রি র্যাডিকালের প্রভাব কমিয়ে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। ঋতুস্রাবকালীন যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতেও এই মশলার উপর নির্ভর করেন অনেকে। ত্বকের নানা সমস্যার সমাধানেও দারচিনি গুঁড়ো খান অনেকে।
কনজ়িউমার রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘পারস’, ‘ইজিএন’, ‘মিমি’জ় প্রোডাক্ট’, ‘বোল অ্যান্ড বাস্কেট’, ‘রানি ব্র্যান্ড’, ‘জ়ারা ফুডস্’, ‘থ্রি রিভার্স’, ‘ইউ ই ব্র্যান্ড’, ‘বেইলিফেং’, ‘স্পাইসি কিং’, ‘বড়িয়া অ্যান্ড ডিপ’— এই সব সংস্থার দারচিনি গুঁড়ো ও গরমমশলায় উচ্চ মাত্রায় সীসা পাওয়া গিয়েছে। এদের মধ্যে ‘পারস’-এর মশলায় সবচেয়ে বেশি সীসা (৩.৫২ পার্টস পার মিলিয়ান বা পিপিএম) পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। ‘ফুড সেফটি রিসার্চ অ্যান্ড টেস্টিং’-এর ডিরেক্টর জেমস রজার্স জানিয়েছেন, এই সব সংস্থার আধ চা চামচেরও অর্ধেক মাত্রায় মশলায় যে পরিমাণ সীসা পাওয়া গিয়েছে তা এক জন ব্যক্তির শরীরে সারা দিনে যে মাত্রায় সীসা যাওয়া উচিত, তার থেকে বেশি। দ্য ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এর মতে, প্রাপ্তবয়স্কদের শরীরে প্রতি দিন ১২.৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি সীসা প্রবেশ করলে তা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। শিশুদের ক্ষেত্রে সারা দিনে ০.৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি সীসা প্রবেশ যেন না করে, সে দিকেও নজর রাখা জরুরি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (‘হু’)-এর মতে শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় সীসা প্রবেশ করলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে হার্ট, স্নায়ুতন্ত্র ও কিডনির অসুখের ঝুঁকি বাড়ে। অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের শরীরে অতি মাত্রায় সীসা প্রবেশ করলে গর্ভপাতেরও আশঙ্কা তৈরি হয়।