প্রাতঃরাশে থাকা উচিত এই সব খাবার। ছবি- শাটারস্টকের সৌজন্যে।
লকডাউনের সময় এখন আমাদের গৃহবন্দি হয়েই থাকতে হচ্ছে। অনেক দিন ধরেই চলছে লকডাউন। কবে উঠবে, বলা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে বাইরে ছুটোছুটি কম হচ্ছে বলে শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একাকীত্ব ‘যা পাই তাই খাওয়া’র প্রবণতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। আবার বাজারে, দোকানে গিয়ে সব সময় সব কিছু পাওয়াও যাচ্ছে না। তাই যা পাচ্ছি, তা দিয়েই প্রাতঃরাশ আর সারা দিনের খাওয়াদায়ওয়া করতে হচ্ছে।
কিন্তু আমরা সারা দিন যা খাই, যত বার খাওয়াদাওয়া করি, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাতঃরাশ। কারণ, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত প্রাতঃরাশে আমরা কী কী খাব, তার উপরে আমাদের সুস্থ থাকাটা নির্ভর করছে অনেকটাই। আমাদের শরীরের বাড়তি ওজন কমাতেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে প্রাতঃরাশের। প্রাতঃরাশই আমাদের দিনভর কাজের মূল শক্তি জোগায়। হাতের কাছে যা পাচ্ছি, তা খাওয়ার বিপদ এড়াতেও সাহায্য করে প্রাতঃরাশের খাদ্যতালিকার সঠিক নির্বাচন।
সুস্থ থাকা আর শরীরের বাড়তি ওজন না হতে দেওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ প্রাতঃরাশ। যাতে দেহের প্রতি ক্যালোরি শক্তি তৈরি করতে আরও বেশি পুষ্টিগুণে ভরা প্রাতঃরাশে আমরা অভ্যস্ত হয়ে উঠি। আর তার জন্য প্রাতঃরাশে সব ধরনের ফল, আনাজপাতি, ডিম বা মুরগির মাংস যত বেশি থাকে, ততই ভাল।
যত ফাইবার তত ভাল
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাতঃরাশের খাদ্যতালিকায় পুষ্টিগুণ বাড়াতে এমন সব খাবারদাবার রাখতে হবে, যাতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ‘ফাইবার’ (তন্তু)। যাঁরা শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে চান, তাঁদের প্রাতঃরাশে ফাইবার আছে এমন খাবারদাবার যত থাকে, ততই ভাল। শুধু তাই নয়, দিনে তাঁরা যা কিছু খান, তাতেই প্রচুর পরিমাণে থাকা উচিত ফাইবার। বিভিন্ন গবেষণা দেখিয়েছে, ফাইবার আমাদের শরীরের বিপাক প্রক্রিয়াকে চাঙ্গা রাখে। বিপাক প্রক্রিয়ার গন্ডগোল হলেই ডায়াবিটিসের মতো রোগগুলি হয়। অল্পবয়সিদের ভিসেরায় যে মেদ জমে (‘ভিসেরাল ফ্যাট’) আর নানা ধরনের প্রদাহ (‘ইনফ্লেমেশন’) হয়, তা কমাতেও সাহায্য করে ফাইবারে ভরা খাবারদাবার। যে কোনও ধরনের ফলেই থাকে ফাইবার।
বেশি প্রোটিন কমায় দেহের বাড়তি ওজনের প্রবণতা
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, আমাদের শরীরের বাড়তি ওজনের বোঝা কমাতে বিভিন্ন ধরনের প্রোটিনের ভূমিকা যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন গবেষণা দেখিয়েছে, যত বেশি প্রোটিন খাওয়া যায়, ততই ভাল। প্রোটিন বেশি পরিমাণে শরীরে ঢুকলে তা আমাদের বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করে। শরীরে বেশি প্রোটিন ঢুকলে তা পুড়ে আরও বেশি ক্যালোরি উৎপন্ন হয়। ডিমে থাকে প্রোটিন।
আরও পড়ুন: রিপোর্টের ক্ষেত্রে আশা করি কেন্দ্রীয় দল নিরপেক্ষ হবে: মুখ্যসচিব
আরও পড়ুন: কিট দেওয়ার নাম নেই, বদনামের চক্রান্ত: মমতা
ক্যালোরি বেশি উৎপন্ন হলে আমাদের সারা দিনের কাজের শক্তি বেড়ে যায়। বাড়ে কর্মক্ষমতাও। প্রোটিনের আরও কিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে, যা আমাদের শরীরকে সুস্থ, সবল রাখে। একটা প্রোটিনের মধ্যে এত রকমের পুষ্টিগুণ থাকে যে, খুব বেশি ক্যালোরির খাবারদাবার না খেয়ে শুধু প্রোটিন খেয়েই আমাদের কাজ হয়ে যেতে পারে।
খুব বেশি ক্যালোরি আছে, এমন খাবার খাবেন না
খুব বেশি ক্যালোরি উৎপন্ন হয়, এমন খাবারদাবার প্রাতঃরাশে না রাখাটাই সবচেয়ে ভাল, জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। খুব বেশি ক্যালোরি তৈরি করতে পারে, এমন খাবারদাবার না খেলে প্রায় সারা জীবনই শরীরের ওজন-বৃদ্ধির সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়। প্রাতঃরাশের খাদ্যতালিকায় চিনির পরিমাণও যতটা সম্ভব কম রাখা যায়, ততই ভাল। খুব বেশি চিনি থাকলে স্বাস্থ্যকর খাবারদাবারও হয়ে পড়ে অস্বাস্থ্যকর। প্রাতঃরাশে প্যানকেক বা পেস্ট্রিও না থাকলেই ভাল।
পানীয়ের ব্যাপারেও সতর্ক হতে হবে
খুব বেশি পরিমাণে হেল্থ ড্রিঙ্ক বা নানা ধরনের পানীয় খাওয়াও উচিত নয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, সব ধরনের পানীয়ই আমাদের শরীরে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। এক গ্লাস প্রসেসড জুসে সর্বাধিক ১০০ ক্যালোরি শক্তি উৎপন্ন হতে পারে। যদিও তার কোনও পুষ্টিগুণ নেই বললেই চলে। এর পরিবর্তে প্রচুর পরিমাণে সব ধরনের ফল খাওয়া যেতে পারে। সেই ফল কেটে খেলে হবে না। আস্ত খেতে হবে। এতে শরীরে অতটা ক্যালোরি উৎপন্ন করে না।
পাউরুটি, পাস্তাও না খাওয়াই ভাল
প্রাতঃরাশে কাঁচা পাউরুটি, পাস্তাও না থাকলেই সবচেয়ে ভাল হয়। বরং গুঁড়ো কোনও খাবারদাবার খাওয়া উচিত। খুব বেশি কাঁচা পাউরুটি, পাস্তা খেলে হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ে। পাউরুটি সেঁকে খাবেন সব সময়।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)