কোনও ভাজাভুজি হোক অথবা কষিয়ে রান্না, তাতে হলুদগুঁড়ো থাকবেই। আবার স্নানের আগে সামান্য একটু কাঁচা হলুদবাটা গায়ে ঘষে নিলে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়বেই। এ সব কথা তো আমাদের সকলেরই জানা। তবে হলুদের গুণাগুণ সীমাবদ্ধ নেই এই সামান্য বিষয়গুলোয়।
বিয়ের দিন সকালে হলুদ মাখানোর রীতি রয়েছে। শাস্ত্র বলছে শুভ, কিন্তু আয়ুর্বেদ বলছে অ্যান্টিসেপটিক। সরস্বতী পুজোতেও হলুদ ও নিমপাতা মাখার রীতি রয়েছে কারও কারও। সকালে উঠে অল্প মধু দিয়ে একটু কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খেলে শরীর ভাল থাকবে, এমনই জানালেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসক বাদল জানা।
রূপবিশারদ শর্মিলা সিংহ ফ্লোরা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ত্বকের যে কোনও দাগ-ছোপ দূর করতে হলুদের জুড়ি মেলা ভার। আবার অ্যান্টিসেপটিক হিসেবেও কাজ করে হলুদ। তবে কাঁচা হলুদ ত্বকে সরাসরি না লাগানোই ভাল। কারও অনেকের ক্ষেত্রে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা থাকে। বরং হলুদের সঙ্গে দুধের সর বাটা, দই বা মূলতানি মাটি, ময়দা বা যে কোনও ফলের রস মিশিয়ে ব্যবহার করলে সবথেকে বেশি উপকার মিলবে।’’
আরও পড়ুন:ইভেরমেক্টিন কি করোনা মোকাবিলার নয়া তুরুপের তাস? কী বলছেন চিকিৎসকরা
• অ্যান্টি-এজিং ফ্যাক্টর হিসেবেও হলুদ কাজ করে। এমনকি ডার্ক স্পট, ফাইন লাইনস বা বলিরেখা দূর করতে পারে হলুদের ব্যবহার।
অনেকেই গোড়ালি ফাটার সমস্যায় ভোগেন। নারকেল তেলের সঙ্গে হলুদগুঁড়ো মিশিয়ে গোড়ালিতে লাগালে চামড়া নরম হবে।
আরও পড়ুন:শুধুমাত্র অতিরিক্ত চিনি খেয়েই বিশ্বে মারা যান ৩.৫ কোটি মানুষ!
• রান্না করতে করতে হামেশাই তেল ছিটকে বা ঝোল চলকে পড়ে হাত পুড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। অল্প একটু দুধ কিংবা ঠান্ডা দইয়ে সামান্য হলুদ মিশিয়ে পোড়া জায়গায় লাগিয়ে নিতে পারেন। তার পর সেটা শুকিয়ে গেলে আলতো ভাবে ধুয়ে ফেলুন। এ ভাবে সপ্তাহ দু’য়েক হলুদ লাগাতে থাকলে পোড়া দাগ অনেকটাই হাল্কা হয়ে যাবে।
• স্ট্রেচ মার্কস দূর করার জন্য হলুদগুঁড়ো, কেশর ও লেবুর রস মিশিয়ে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। দাগ হাল্কা না হয়ে যাওয়া পর্যন্ত এটা ব্যবহার করলে অনেকাংশেই মুক্তি পাবেন।
হলুদের সঙ্গে দই মিশিয়ে ত্বকে জেল্লা ফেরান। ফাইল ছবি।
• ত্বকের স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে আনার জন্য অনেকে হলুদকে প্রাধান্য দেন। এক চামচ মধু, এক চামচ দুধ, আর এক চিমটি হলুদগুঁড়ো মিশিয়ে ফেস প্যাক তৈরি করতে পারেন। সপ্তাহে তিন-চার বার এই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
আরও পড়ুন:খাবারে এই মৌল না থাকলে হতে পারে মারাত্মক সব রোগ
• অ্যাকনে দূর করতেও হলুদের জুড়ি নেই। হলুদের মধ্যে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ থাকার দরুণ অ্যাকনের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া মারতে সাহায্য করে। এর জন্য দু’চামচ চন্দন কাঠের গুঁড়ো, আধ চামচ হলুদগুঁড়োর সঙ্গে সামান্য দুধ মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। সারা মুখে সেই মিশ্রণ লাগিয়ে নিন। পেস্ট শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন।
প্রাচীন টোটকা
এক চা চামচ বেসনের সঙ্গে এক চিমটি হলুদগুঁড়ো মিশিয়ে হালকা পেস্ট তৈরি করে নিন। ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় সেই পেস্ট লাগিয়ে অন্তত ২৫ মিনিট রাখুন। ঈষদুষ্ণ জলে ধুয়ে নিন।