রোজ একই খাবার খেলে শরীর ভাল থাকবে কি? ছবি: সংগৃহীত
ভাত-ডাল-আলুভাজা-তরকারি-মাছভাজা-দই-চাটনি। এই খাবার খেতে বেশির ভাগ বাঙালিরই ভাল লাগে। কিন্তু এই খাবারটাই যদি রোজ খেতে হয়? রোজ মানে, প্রত্যেক দিন। হুবহু একই খাবার। কোনও পরিবর্তন নেই। এমনকি ডাল-তরকারিটাও একই।
সপ্তাহ খানেক এক খাবার খেতে হলে নিশ্চয়ই যে কেউ খুব বিরক্ত হয়ে উঠবেন। যতই সুস্বাদু কিছু দেওয়া হোক না, এক সময় চাইবেন স্বাদ বদলাতে। কিন্তু সকলে তা চান না। যেমন ভিক্টোরিয়া বেকহ্যাম। তিনি মাসের পর মাস, বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ একই খাবার খেয়ে যান। আর সেটাই নাকি তাঁর নির্মেদ স্বাস্থ্যের রহস্য। কিন্তু একই খাবার রোজ খাওয়া কি ঠিক?
দেখে নেওয়া যাক রোজ একই খাবার খাওয়ার সুবিধা-অসুবিধা:
সুবিধা
• ক্যালোরির হিসেব: রোজ কতটা ক্যালোরি শরীরে যাচ্ছে, তার একটা স্পষ্ট হিসেব থাকে। ফলে যাঁরা স্বাস্থ্য সচেতন, তাঁদের জন্য সুবিধাজনক।
• পরিকল্পনার ব্যাপার নেই: আগে থেকে ঠিক করে রাখতে হবে না, এর পরে কী খাবেন। বাজার নিয়েও মাথাব্যথা নেই। গোটাটাই যেহেতু জানা, ফলে আলাদা করে পরিকল্পনার ব্যাপার নেই।
• অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে দূরে: অতিরিক্ত তেলের ভাজাভুজি নিয়ে মাথাব্যথা নেই। একই খাবার খেলে স্বাদ বদলের জন্য নতুন কিছু খাবার প্রশ্নই উঠছে না। ফলে ভুল করে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ফেলার আশঙ্কা নেই।
• ওজন কম: যাঁরা নিজেদের ওজন নিয়ে চিন্তিত, তাঁদের এই ধরনের খাদ্যাভ্যাসে সুবিধা হয়। ওজন বেড়ে যাবে, এমন কিছু কখনও খাবেন না তাঁরা। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
এখই খাবার রোজ খেলে ক্ষতি হতে পারে কি?
অসুবিধা
• একঘেয়ে লাগতে থাকে: এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। একই খাবার রোজ খেলে সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতে অসহ্য লাগতে বাধ্য।
• পুষ্টির অভাব: হয়তো রোজ যে খাবার খাচ্ছেন, তা যথেষ্ট পুষ্টিকর নয়। সেই খাবার মাসের পর মাস খেতে থাকলে এক সময় পুষ্টির অভাবে শরীর খারাপ হতে পারে।
• ওজন বেড়েই যাচ্ছে: আগের বিষয়টির ঠিক উল্টো এটি। হয়তো এমন খাবার বেছে নিলেন, যাতে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পুষ্টিগুণ রয়েছে। সেই খাবার মাসের পর মাস খেয়ে গেলে ওজন বেড়েই যাবে।
• হজমের সমস্যা: কোনও কোনও মানুষের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, তাঁরা যদি রোজ একই খাবার খান, তা হলে হজমের সমস্যা হয়।
• অনেক কিছু বাদ: নানা ধরনের খাবার খেলে, তার থেকে নানা প্রয়োজনীয় উপাদান শরীরে আসে। একই খাবার খেলে সেই পথ বন্ধ হয়ে যায়।
• ভাল ব্যাকটিরিয়ার অভাব: আলাদা আলাদা খাবার থেকে আলাদা ধরনের ব্যাকটিরিয়া আমাদের শরীরে আসে। যা আমাদের শরীরের জন্য দরকারি। এক খাবার খেলে সেই পথও বন্ধ হয়ে যায়।
শেষ কথা: রোজ এক খাবার খেয়ে ওজন কমানো সহজ। কিন্তু তার আগে অবশ্যই পুষ্টিবিদ এবং চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নিতে হবে। তাঁদের পরামর্শেই খাদ্যতালিকা তৈরি করতে হবে। না হলে লাভের চেয়ে ক্ষতিই হতে পারে বেশি।