রাতের শোয়ার আগে ব্যায়াম! ছবি: সংগৃহীত।
সময়ের অভাবে কিছুতেই সকালে ব্যায়াম করতে পারেন না। রাতে বাড়ি ফিরে কাজকর্ম সেরে একটু ওয়েব সিরিজ়ও দেখেন। রাতে ঘুম কম হয় বলে সকালে উঠতেও কষ্ট হয়। ক্লান্তি গ্রাস করে। কাজে মন বসাতেও বেশ সমস্যা হয়। অভিজ্ঞরা বলছেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে অন্তত পক্ষে আধঘণ্টা শরীরচর্চা করলে মনমেজাজ একেবারে তরতাজা হয়ে ওঠে ঠিকই। কিন্তু হাতে যদি একেবারেই সময় না থাকে, সে ক্ষেত্রে ব্যায়াম না করাটা একেবারেই কাজের কথা নয়। তাই খাওয়াদাওয়ার এক ঘণ্টা পর কয়েকটি আসন অভ্যাস করতেই পারেন।
১) বালাসন
হামাগুড়ি দেওয়ার ভঙ্গিতে মেঝেতে বসুন। এ বার আস্তে আস্তে সারা শরীর পিছনে নিয়ে গিয়ে নিতম্ব পায়ের গোড়ালির উপর রাখুন। কপাল মাটিতে ঠেকান। হাত দুটো পিছনে নিয়ে গিয়ে তালু উল্টো করে পায়ের কাছে রাখুন। মানসিক চাপ ও ক্লান্তি কমাতে সহায়তা করে এই যোগাসন। দেহে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়াকেও স্বাভাবিক রাখে।
২) বদ্ধকোণাসন
প্রথমে কোমর-পিঠ টান টান করে মাটিতে বা ম্যাটের উপর বসুন। এ বার দুই হাঁটু ভাঁজ করে যোনির কাছে টেনে আনুন। পায়ের পাতা মুখোমুখি প্রণামের ভঙ্গিতে রাখুন। হাত দিয়ে টেনে ধরে রাখতে হবে। এ বার লম্বা শ্বাস নিয়ে কোমরের পেশি থেকে টেনে সামনের দিকে ঝুঁকতে থাকুন। পেট মুড়ে মাথা দিয়ে মাটি স্পর্শ করুন। খেয়াল রাখতে হবে, কোনও ভাবেই যেন মেরুদণ্ড ভাঁজ হয়ে বেঁকে না যায়। এই অবস্থায় থাকুন মিনিট দুয়েক। তার পর আবার আগের অবস্থানে ফিরে যান।
৩) পবনমুক্তাসন
প্রথমে সোজা হয়ে মাটিতে শুয়ে পড়ুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে প্রথমে ডান পায়ের হাঁটু ভাঁজ করে বুকের কাছে এনে দু’হাত দিয়ে চেপে ধরুন। হাঁটু বুক ও পেটের সংস্পর্শে থাকবে। এ ভাবে কিছু ক্ষণ থাকার পর ডান হাঁটু ধীরে ধীরে নামিয়ে বাঁ হাঁটু বুকের কাছে একই ভাবে তুলে আনুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে এ অবস্থায় কিছু ক্ষণ থাকার পর বাম হাঁটু নামিয়ে নিন। প্রতি দিন নিয়ম করে ৪-৫ মিনিট এই অনুশীলনটি করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা নিরাময় হবে।
বজ্রাসন। ছবি: সংগৃহীত।
৪) বজ্রাসন
এই আসনটি করতে প্রথমে সোজা হয়ে বসুন। সামনের দিকে পা ছড়িয়ে দিন। এ বার একটি করে পায়ে হাঁটু মুড়ে তার উপর বসুন। গোড়ালি জোড়া করে রাখুন। শিরদাঁড়া সোজা করে বসুন। হাত দুটো ঊরুর উপর টান টান করে রাখুন। কিছু ক্ষণ এই ভঙ্গিতে বসুন। এই আসনটি শরীরে অতিরিক্ত মেদের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। পেটের তলদেশে রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। সেই সঙ্গে গ্যাসের সমস্যা থেকে দূরে রাখে।
৫) নাড়িশোধন প্রাণায়াম
মুখের সামনে ডান হাতের আঙুলগুলিকে আনুন, এর পর তর্জনী ও মধ্যমাকে হালকা ভাবে দুই ভুরুর মাঝে রাখুন। বুড়ো আঙুলকে ডান নাকের ছিদ্রে ও অনামিকাকে বাঁ নাকের ছিদ্রে রাখুন। এ বার বুড়ো আঙুলের চাপে নাকের ডান দিকের ছিদ্র বন্ধ করে বাঁ দিকের নাকের ছিদ্র দিয়ে যতটা পারেন শ্বাস নিন। এ বার অনামিকা দিয়ে চেপে ডান দিকের নাকের ছিদ্র বন্ধ করে শ্বাস ছাড়ুন বাঁ নাক দিয়ে। আবার একই ভাবে এক বার বাঁ দিকের নাকের ছিদ্র চেপে ডান দিকের ছিদ্র দিয়ে শ্বাস নিন ও ডান দিক চেপে বাঁ দিক দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি নাসারন্ধ্রে ১৫ বার অভ্যাস করতে হবে এই প্রাণায়াম।