ছবি: সংগৃহীত।
অসুস্থতার আসল কারণ ধরতে পারেননি চিকিৎসকেরা। ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হল অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা ৫ বছর বয়সি ক্যাথি কাসিসের। একরত্তি মেয়েকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন মৃত শিশুর বাবা-মা জ্যাজ এবং জাস্টিন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং যে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন তাঁরা।
ময়নাতদন্তের পর জানা গিয়েছে যে, ক্যাথির মৃত্যু হয়েছে ‘এ স্ট্র্যাপ’ নামক একটি ক্ষতিকারক জীবাণু সংক্রমণের কারণে। কিন্তু চিকিৎসকেরা ক্যাথির বাবা-মাকে জানিয়েছিলেন, সামান্য ঠান্ডা লেগেছে। নিয়ম করে ওষুধ খেলেই ঠিক হয়ে যাবে। স্থানীয় একটি রেডিয়ো চ্যানেলকে গোটা ঘটনাটি সবিস্তারে জানিয়েছেন তাঁরা।
সপ্তাহ দুয়েক আগে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে ক্যাথি। সর্দি-কাশি, গলাব্যথা, সেই সঙ্গে ধুম জ্বর। ক্যাথির ঠান্ডা লাগার ধাত রয়েছে। তাই বাবা-মায়ের মনে হয়েছিল হঠাৎ ঠান্ডা লেগেই এমন হচ্ছে। কিন্তু দু’দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও জ্বর না কমায় মেয়ের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। গলাতে এতই অসহনীয় ব্যথা ছিল যে ক্যাথির কথাও বলতেও পারছিল না। তাই আর দেরি না করে ক্যাথিকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে চিকিৎসকেরা ক্যাথির শারীরিক পরীক্ষার পর জানান যে সাধারণ সর্দি-কাশি হয়েছে। গলাব্যথার কারণও অত্যধিক ঠান্ডা লাগা। ওষুধ খেলে আর কয়েক দিন নজরদারিতে থাকলেই ঠিক হয়ে যাবে। পরের দিন হাসপাতাল থেকে এক প্রকার জোর করেই বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
বাড়িতে নিয়ে আসার পরের দিন থেকেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ক্যাথির বাবা-মা চিকিৎসককে ফোন করলে তিনি বলেন, ঠান্ডা লাগার ওষুধ খাওয়াতে। সেই মুহূর্তে পরিস্থিতি সামলে গেলেও দু’দিন পরেই এক সকালে জ্যাজ এবং জাস্টিন দেখেন ক্যাথির ঠোঁট নীল হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্সে করে কাছের একটি শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে ভর্তি করার ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে মৃত্যু হয় শিশুটির।
স্ট্রেপ এ ভাইরাসের প্রকোপ এখন সবচেয়ে বেশি অস্ট্রেলিয়াতেই। গোটা বিশ্বে ৫০ হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত। যে কোনও বয়সেই এই ভাইরাস হানা দিয়ে পারে শরীরে। তবে অস্ট্রেলিয়াতে মূলত শিশুরাই এই সংক্রমণের শিকার হচ্ছে। ‘ল্যানসেট’-এর গবেষণা সে কথাই বলছে। স্ট্রেপ এ ভাইরাসের উপসর্গ হল প্রচণ্ড গলাব্যথা, জ্বর সেই সঙ্গে গা, হাত-পায়ে ব্যথা, অনবরত বমি। ভারতে এই ভাইরাসের প্রকোপ এখনও পর্যন্ত অনেক কম। তবে এমন কোনও উপসর্গ শিশুর মধ্যে দেখা দিলে বাড়িতে ফেলে না রেখে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াই শ্রেয়।