বর্ষায় ভয় নয়, ভরসা থাকুক। নিজস্ব ছবি।
গরমকে হঠিয়ে রাজ্যে পুরোদমে ঢুকে পড়েছে বর্ষা। কমেছে গরম। মিলেছে স্বস্তি। তবে এত আরামের মধ্যেও অসুখ-খোঁচা কিন্তু থেকেই যায়। প্রকৃতি ঠান্ডা হলেও বৃষ্টির প্রকোপে জনজীবনে এসেছে নানা পরিবর্তন। মরসুমি অসুখ ও হাঁচি-কাশির সমস্যা শুরু হল বলে। তাই, এই বর্ষায় সার্বিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় মেনে চললে কিন্তু আখেরে আপনারই লাভ।
ঋতু পরিবর্তনকে নিজের শারীরবৃত্তীয় চক্রে খাপ খাইয়ে নিতে একটু সময় লাগে। তাই এই সময়েই অসুখ ঢুকে পড়ে ঢিলেঢালা সুরক্ষার ফাঁক গলে। তাই সচেতন হওয়ার সেরা সময় এটাই।
বর্ষাকে কবজা করতে কিছু সাধারণ নিয়ম মানাই যথেষ্ট বলে মনে করছেন মেডিক্যাল বায়োকেমিস্ট্রি বিশেষজ্ঞ জি. গুপ্ত। তাঁর মতে, বর্ষায় শরীরের ‘প্রোটেকটিভ মেকানিজম’ অর্থাৎ শরীরের নিজস্ব সুরক্ষা ব্যবস্থাকে ঠিক রাখতে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি।
আরও পড়ুন: মা হতে চলেছেন? এ নিয়মগুলো মানছেন তো?
শ্বেতী নিয়ে চিন্তা? নিয়ন্ত্রণে মেনে চলুন এ সব
বৃষ্টিতে বেরতে হলে হালকা গরম জলে স্নান সেরে ধুয়ে ফেলুন ক্ষতিকারক ব্যাকটিরিয়া। নিজস্ব ছবি।
চিকিৎসকের মতে:
বর্ষায় অনেক সময়েই ইচ্ছে না থাকলেও ভিজতেই হয়। তাই খাবারের মেনুতে রাখুন প্রচুর ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার, মরসুমি ফল, বিশেষত আমলকী। ঠান্ডা লাগার প্রবণতা কমাতে এর বিকল্প নেই। অনেকেরই প্রায় সারা বছর ঠান্ডা লাগার প্রবণতা থাকে। হাঁচি-কাশির তেমন প্রভাব থাকলে অ্যান্টিঅ্যালার্জিক ওষুধ, বাড়িতে তৈরি তুলসিপাতার রস-বাসক পাতার রস-আমলকী মেশানো পানীয়ের উপর আস্থা রাখুন। অ্যান্টিঅ্যালার্জির ওষুধ খেলে তা অবশ্যই পরামর্শ নিন নিজস্ব চিকিৎসকের। অনেক সময় অন্য কোনও অসুখের জন্য বাদ দিতেই হয় কিছু অ্যান্টিঅ্যালার্জিক পিল। দেখে নিতে হবে সেটাও। বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি এলে একটু গরম জলে সেরে ফেলুন স্নান। সতেজ হওয়ার পাশাপাশি বৃষ্টির জলের ক্ষতিকারক ব্যাক্টিরিয়াও ধুয়ে ফেলা যাবে। নইলে এই বিপজ্জনক ব্যাক্টিরিয়া নষ্ট করে দেবে চুল। চুল পড়ার মতো সমস্যা বাড়বে বই কমবে না। তেল-মশলার খাবার থেকে দূরে থাকুন। বর্ষায় পরিবর্তিত আবহাওয়ায় খানিক হজমের সমস্যা দেখা যায়। সহজপাচ্য খাদ্য থাকুক তালিকায়। এই সময় কিছু কিছু মাছের শরীরে একরকম ঘা হয়। তাই মাছ কেনা ও বাছার সময় সতর্ক থাকুন।
কিন্তু এ তো গেল সাধারণ কিছু সাবধানতা। বর্ষার মূল সমস্যা ডেঙ্গি? তা এড়ানো যাবে কী করে?
চিকিৎসক জি. গুপ্ত জানালেন, ডেঙ্গি এড়ানোর মূল উপায় দু’টি।
মশারি টাঙান অবশ্যই। মশা নিরোধক ক্রিম বা তেল ব্যবহার করুন চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে। চারপাশ পরিষ্কার রাখুন, জল জমতে দেবেন না এলাকায়। বাড়িতে অ্যাকোরিয়াম থাকলে জল রোজ পরিষ্কার রাখুন ও পুরনো জল সরিয়ে দিন। জ্বর এলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। দরকারে রক্ত পরীক্ষা করান।
সুতরাং ঋতু পরিবর্তনে সুস্থ থাকুন এ ভাবেই। বর্ষা উপভোগে যেন বাধা হয়ে না দাঁড়ায় শরীর।