বাড়ির নিরাপত্তা বাড়াতে খেয়াল রাখুন কিছু জরুরি দিকে। ছবি: শাটারস্টক।
অন্দরসজ্জায় আগ্রহ কমবেশি সব গৃহস্থেরই। নিজের বাসস্থানকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখার মধ্যে যেমন আনন্দ লুকিয়ে থাকে, তেমনই ছাপ থাকে রুচিরও। কিন্তু বাড়ির সাজসজ্জার বিষয়ে যতটা মাথা ঘামাচ্ছেন, ঘরের নিরাপত্তার খুঁটিনাটি নিয়েও ততটাই গুরুত্ব দিচ্ছেন কি? ফ্ল্যাট হোক বা বাড়ি— আজকাল কিছু ক্ষণের জন্য বাইরে গেলেও ঘরের নিরাপত্তা বাড়ানোর দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার পরামর্শ দেয় পুলিশ।
পছন্দসই আসবাবের জায়গা বা জানলা-দরজার ফ্রেম বাছার সময় অনেক সময় নিরাপত্তার ঘাটতি লক্ষ্য করা যায় অনেক বাড়িতেই। গ্রিল ছাড়া কাচ দেওয়া জানলার যে চল আজকাল হয়েছে, তা আদৌ ঘরের কোনখানে ব্যবহার করলে ঘরের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে না, তাও ভেবে দেখতে হবে।
সাধারণত বাড়ির অলঙ্কার বা প্রয়োজনীয় নথি ব্যাঙ্কের লকারেই রাখা হয়। তবু লকারের বাইরেও এমন অনেক কিছুই থেকে যায়, যার প্রতি বাড়তি নজর দিলে ঘরবাড়ি অনেক সুরক্ষিত থাকবে। এমনকি বাড়িতে রাখা কিছু গয়না বা টাকাপয়সার ক্ষেত্রেও বাড়তি সতর্কতা বজায় রাখা দরকার। কোন কোন ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে?
আরও পড়ুন: মেদ ঝরাতে চান? বিপাকক্রিয়ার হার বাড়িয়ে তুলুন এই সব উপায়ে
সচেতনতার অন্যতম ধাপ হিসেবে বাড়িতে ভাল মানের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসিয়ে নিতে পারেন। আজকাল মেমরি স্টোর করে রাখার জন্য মেমরি কার্ড মেলে। সঙ্গে চালু রাখুন বা়ড়ির ইন্টারনেট। ফলে আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, বাড়ির ভিতরে কী ঘটছে, সে দিকে নজর রাখতে পারবেন ইন্টারনেট পরিষেবাযুক্ত মোবাইলের মাধ্যমেই। লকারে রাখার পরেও বাড়িতে কিছু অতিরিক্ত হালকা অলঙ্কার ও নথি থেকেই যায়। সে ক্ষেত্রে সেফটি বক্সের শরণ নিতে পারেন। মেটালিক ভারী চেহারার এবং নম্বর লক করা সেফটি বক্স বাজারে সহজেই মেলে। সেফটি বক্সের মধ্যে সে সব রেখে বাড়ির কোনও গোপন জায়গায় রেখে দিন বক্সটি। আই কনট্যাক্টে খুলবে দরজা— আধুনিক প্রযুক্তির এমন ব্যবহার, আজকাল এই রাজ্যেও চলে এসেছে। তাই দরজার তালা ভেঙে কারও প্রবেশ করা প্রায় অসম্ভব। অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ ঘরে প্রবেশ করতে চাইলে সে ক্ষেত্রে তার দরজা ভাঙা ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না। তালা ভাঙার চেয়ে দরজা ভাঙা অধিক শ্রমের, তাতে শব্দও হবে অনেক বেশি। তাই এমন প্রযুক্তির শরণ নিতেই পারেন।
আরও পড়ুন: এই সব নিয়ম মেনে চললে দশ-বারো ঘণ্টা পরেও আইলাইনার-কাজল স্মাজ করবে না!
সিসিটিভি থাকলে বাইরে থেকেও নজর রাখতে পারবেন বাড়ির অন্দরে।
বাড়ির দরজা-জানলা নির্মাণের সময় মোটা ও ভারী কাঠ ব্যবহার করুন। আগুন লেগে গিয়ে দুর্ঘটনার শঙ্কা উড়িয়ে দেবেন না। তাই ঘরের ফায়ার সেফটি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করুন। বাড়ির আর্থিং ঠিক আছে কি না যেমন দেখতে হবে, তেমনই শর্ট সার্কিট এড়াতেও করতে হবে জরুরি পদক্ষেপ। আজকাল খুব সামান্য শর্ট সার্কিটেই বাড়ির বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাবে, এমন সার্কিট আজকাল সহজেই মেলে বাজারে। গ্যাসের বার্নার, সিলিন্ডার এগুলো প্রতি দিন রান্না ঘর থেকে বেরনোর আগে দেখে যান। গ্যাস ও সিলিন্ডার ব্যবহারের ভুলে অনেক সময় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। মেন সুইচ এমন জায়গায় করুন যেখানে সহজেই পৌঁছনো যায় ও নাগাল পাওয়া যায়। দরকারে মেন সুইচ বন্ধ করতে যেন দেরি না হয়। বাড়ি থেকে বেরনোর আগে প্রতি দরজায় একটু ভারী ও দামি তালা ব্যবহার করুন। দরজায় লাগান ইন্টারলক। রাজ্য প্রশাসনের মতে, বাড়ির কোনও কাজে কাউকে নিয়োগ করলে তাঁর বিস্তারিত খোঁজখবর নিন ও প্রয়োজন বুঝলে পুলিশের কাছে জমা দিন তাঁর পরিচয়পত্র। কয়েক দিনের জন্য কোথাও বেড়াতে গেলে চেষ্টা করুন ঘর বন্ধ না রেখে কোনও আত্মীয় বা খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে রাখতে। একান্ত তা সম্ভব না হলে স্থানীয় নিরাপত্তাকর্মীদের সংস্থা থেকে কাউকে নিয়োগ করে যান ও স্থানীয় থানায় জানিয়ে যান বিস্তারিত।