ফেস অ্যাপের ছোঁয়ায় বুড়ো হলেন ক্রিকেট তারকারা। ছবি- টুইটার থেকে সংগৃহীত।
ইচ্ছা মতো বয়স বদলানোর জাদুকাঠিকে নিয়ে প্রথম দু’দিন দারুণ হইচই হয়েছে। কিন্তু সময় এগনোর সঙ্গে সঙ্গে একটা আশঙ্কাও ক্রমেই বাসা বাঁধছে ‘ফেসঅ্যাপ’ ব্যবহারকারীদের মনে। আমার ফোনের সব ছবি চুরি হয়ে যাচ্ছে না তো! ভয় বলুন, আশঙ্কা বলুন আরও বেশি করে জেঁকে বসেছে কারণ, ফেসঅ্যাপ নির্মাতাদের ঠিকানা রাশিয়া বলে। বিশ্বের বৃহত্তম দেশটা বরাবরই রহস্যাবৃত। রুশ গোয়েন্দাদের সুখ্যাতি বা কুখ্যাতি বলুন, সর্বজনবিদিত। তাই গোটা বিশ্বে যখন প্রাইভেসি বা তথ্যের গোপনীয়তা একটা বড় আলোচনার বিষয়, তখন রমরম করে চলা এই অ্যাপটিও যে স্ক্যানারের তলার পড়বে, সেটাই স্বাভাবিক।
সবচেয়ে বেশি চিন্তার কারণটা কী?
অনেকেই যেটা আশঙ্কা করছেন, তা হল এই অ্যাপ ফোনের সমস্ত ছবি নিজের সার্ভারে আপলোড করছে না তো? এক মার্কিন সেনেটার তো মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এবং মার্কিন ক্রেতা সুরক্ষা সংস্থা এফটিসি-কে দিয়ে জাতীয় পর্যায়ের তদন্ত পর্যন্ত করতে বলেছেন। কিন্তু শুধুমাত্র রাশিয়ার নাম জড়িয়ে আছে বলেই কি আশঙ্কা করাটা ঠিক?
আরও পড়ুন: সত্যজিতের ভাবনাই কি ফলছে নেটের ‘বুড়োমি’তে
ঠিক কী ভাবে কাজ করছে এই অ্যাপ?
সংস্থার সিইও ইয়ারোসলাভ গোঞ্চারভ জানিয়েছেন, আপনি যে ছবিগুলি এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য বেছে নেন, সেগুলি আপলোড হয় সংস্থার সার্ভারে। তাঁর দাবি, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সার্ভার থেকে সেই ছবি মুছেও যায়। সংস্থার সার্ভারে ওই ৪৮ ঘণ্টার জন্যও যদি আপনি নিজের ছবি না রাখতে চান, তা হলেও উপায় আছে। অ্যাপ সেটিং-এর সাপোর্ট অপশনে গিয়ে সাবজেক্ট লাইনে ইংরেজিতে লিখুন ‘প্রাইভেসি’, তা হলেই সার্ভার থেকে আপনার ছবি মুছে ফেলার অনুরোধ জমা পড়বে সংস্থার কাছে।
খাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সাইবার বিশেষজ্ঞ নিজেরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, এই অ্যাপ শুধুমাত্র সেই ছবিগুলোই সার্ভারে আপলোড করে, যেগুলো আপনি বেছে দিচ্ছেন। তাই ফোনের সব ছবি চুরি হয়ে যাওয়ার কোনও সুযোগই নেই। এমনকি তাঁরা এও দেখেছেন যে ফেসঅ্যাপের সার্ভার রাশিয়ায় নয়, বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই অবস্থিত।
এই অ্যাপটি আর পাঁচটা অ্যাপের চেয়ে আলাদা?
আপনি আর পাঁচটা যে অ্যাপ ব্যবহার করেন, যেমন ধরুন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, সেগুলিতেও কোনও ছবি আপলোড করলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সার্ভারেই সেই ছবি সেভ হয়। আর এমন অনেক অ্যাপ আছে যেগুলি আপনার স্মার্টফোনটিতে ব্যবহার করতে গেলে ছবি, তথ্য, লোকেশন ব্যবহারের অনুমতি দিতেই হবে। ফেসঅ্যাপ তাই আর পাঁচটা অ্যাপের মতোই কাজ করে। চিন বা আমেরিকায় তৈরি অ্যাপের ক্ষেত্রে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি বা গোপনীয়তা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা যতটা, ফেসঅ্যাপের ক্ষেত্রেও ঠিক ততটাই। ফলে স্রেফ রাশিয়ায় তৈরি হয়েছে বলেই বাড়াবাড়ি রকমের আশঙ্কা করাটা অমূলক। তাই অত শত না ভেবে নিজের বয়স নিয়ে একটু না হয় মজাই করলেন।
আরও পড়ুন: আর ভয় নেই, বৃষ্টির জলে আপনার ফোনও এ বার সুরক্ষিত