Coronavirus

একে বর্ষা, সঙ্গে করোনা, এই সময় চোখের যত্ন কীভাবে নেবেন?

করোনা আবহ এবং বর্ষাকাল এই দুটি কারণে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২০ ১৮:৩৮
Share:

করোনা আবহ-বৃষ্টি, চোখের যত্নে অবহেলা নয়। ছবি-শাটারস্টক থেকে নেওয়া।

একে করোনার ভয়। তায় দোসর বর্ষা। সংক্রমণের সময়। মিউকাস মেমব্রেনের মাধ্যমেই ভাইরাস সংক্রমণের কথা একাধিক গবেষণায় উঠে এসেছে। চোখেও মিউকাস মেমব্রেন। সবমিলিয়ে তাই এ সময় চোখের সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কা রয়েইছে।

Advertisement

করোনা শঙ্কায় ডাক্তারের কাছে যেতেও ভয় পাচ্ছেন কেউ কেউ। এই পরিস্থিতিতে চোখের যত্ন নেবেন কীভাবে। কী করবেন?

লকডাউন শিথিল হতেই অর্থাৎ আনলক পর্বে চোখের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি হাসপাতালেও চক্ষু রোগ চিকিৎসকরা সামাজিক দূরত্ব ও কোভিড-১৯ সংক্রমণ সংক্রান্ত যাবতীয় রীতি মেনেই রোগীও দেখছেন। বর্ষাকালে ভাইরাস ও ব্যাকটিরিয়ার প্রকোপ বেশি, তাই চোখের নানা রকম সমস্যাও এ সময় বেশি। এদিকে করোনা আশঙ্কাও রয়ে গিয়েছে মানুষের মধ্যে।

Advertisement

আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে বেরচ্ছেন? এ সব না মানলে কিন্তু বিপদে পড়বেন

এই প্রসঙ্গে চক্ষু রোগ চিকিৎসক অর্ণব পাল বলেন, ‘‘এ সময় কনজাংটিভাইটিস, চোখের পাতা জুড়ে যাওয়া, চোখে খচখচ করা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া ফরেন বডি সেনসেশন এ জাতীয় সমস্যা বেশি দেখা যায়।’’ এই সমস্যা ছাড়াও চোখের পাতার(আইল্যাশ বেস) মূলে কিছু তৈল গ্রন্থি থাকে। এই গ্রন্থিতে সংক্রমণের ফলে আঞ্জনি (স্টাই) সংক্রান্ত সমস্যাও দেখা যায়।

আরও পড়ুন: স্রেফ নুন-জল গার্গলেই জব্দ করোনা, বলছে গবেষণা​

চোখ ভাল রাখতে গেলে তাই এ সব নিয়ম মেনে চলতেই হবে-

১. চোখ-মুখে হাত দেওয়ার প্রবণতা করোনা আশঙ্কায় খানিকটা হলেও কমেছে। এটি একটি ইতিবাচক দিক। চোখে আঙুল দেওয়ার অভ্যাস বা চোখ চুলকানোর অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।

২. সর্দি-কাশি হলে চোখে জ্বালা করা বা চোখ লাল হওয়ার একটা প্রবণতা দেখা যায়। সে ক্ষেত্রেও চিকিৎসকের পরমার্শ নিতে হবে। কিছুতেই চোখে আঙুল দেওয়া যাবে না।

৩. কারও কনজাংটিভাইটিসের সমস্যা হলে আলাদা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে সেই চোখ মুছতে হবে। সমস্যা সেরে গেলেও কিছুদিন এটা মেনে চলতে হবে।

৪. কারও চোখে কোনও সমস্যা দেখা দিলেই সে ক্ষেত্রে বারবার বিছানার চাদর বদলানো, বালিশের কভার বারবার বদলানোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৫. আলাদা তোয়ালে ব্যবহার করতে হবে কোনও রকম সংক্রমণ দেখা দিলেই।

৬. চোখে ঠান্ডা সেঁক নিয়মিত দিতে হবে।

৭. আঞ্জনি সংক্রান্ত সমস্যার ক্ষেত্রে অনেক সময় গরম সেঁকে কাজ হয়। তবে জ্বর এলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

৮. চোখের মণিতে অনেক সময় ব্যথা করে। সে ক্ষেত্রে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে আসছে মনে হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

বাচ্চাদের ক্ষেত্রে করোনা আবহ এবং বর্ষাকাল এই দুটি কারণে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বাইরে বেরনো এখন কমলেও কাদা জলে খেলা এ সবের প্রবণতা রয়েছে। তাই তাদের ক্ষেত্রে বার বার হাত স্যানিটাইজার দিয়ে পরিস্কার করার বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

বর্ষাকালে করোনা আবহেও আশার আলো দেখিয়েছেন চিকিৎসক। অর্ণব বাবু বলেন, ‘‘বিশেষ করে এ সময় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অ্যালার্জির প্রভাব কোনও কোনও ক্ষেত্রে কমে আসে। বসন্ত কালে সাধারণত যে সমস্ত অ্যালার্জি হয়, সেগুলির প্রভাব বর্ষায় কমে।’’

কোভিড পরিস্থিতির পূর্বে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বে ছানির কারণে দৃষ্টিহীন হয়ে পড়া মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় দু’কোটি। ভারতে সেই সংখ্যা প্রায় ৮০ লক্ষ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একটা বিরাট সংখ্যক মানুষের চোখের সমস্যা রয়েছে এ দেশে। তাই চোখের অবহেলা করা যাবে না কোনওভাবেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement