মাছ, মাংস, দুধ কিংবা মাল্টিভিটামিন ক্যাপসুল তো খাচ্ছেন। কিন্তু জানেন কি পুষ্টির বিচারে এসবের চেয়ে সজনে ডাঁটা বেশ কয়েক কদম এগিয়ে। সজনে ডাঁটা বাঙালির পাতে সুক্তো, ঝোল আর চচ্চড়ির অন্যতম উপাদান। বাঙালির রান্নার সঙ্গে সজনের সম্পর্ক বেশ প্রাচীন। ৫০০০ বছর ধরে বাঙালি এবং ভারতীয়দের খাবারের তালিকায় রয়েছে এই আনাজটি।
হালে বিদেশের পুষ্টি বিজ্ঞানীরা একে সুপার ফুডের তকমা দিয়েছেন। তার পরে এর কদর সারা পৃথিবীতে আরও বেড়েছে বলে মত পুষ্টিবিদ ইন্দ্রাণী ঘোষ। তাঁর মতে, সজনে গাছের পাতাও সমান পুষ্টিকর। ইদানীং প্যাকেট-বন্দি সজনে পাতার গুঁড়ো বা মরিঙ্গা পাউডার অনেকেই স্যুপ, শরবৎ-সহ নানা খাবারে মিশিয়ে খাচ্ছেন।
এক নজরে জেনে নেওয়া যাক সজনে ডাঁটা ও পাতায় কী কী গুণ আছে।
- অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও নানা খনিজ যুক্ত সজনে ডাঁটা ফুসফুসকে সুস্থ রাখে। হাঁপানি, যক্ষার মতো ফুসফুসের অসুখের রোগীদের খাবারে সজনে ডাঁটা, পাতা বা ফুল থাকলে রোগের কষ্ট অনেক কমবে। সজনে ফুল সিদ্ধ করে খেলে হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- এক বাটি সজনে ডাঁটার টুকরো বা এক কাপ সজনে পাতায় সমপরিমাণ দুধের চেয়ে ৪ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম থাকে। প্রোটিন থাকে দ্বিগুণেরও বেশি। ফলে এতে হাড় মজবুত হয়। বাতের ব্যথা কমে।
- সজনে পাতা, ডাঁটা ও ফুলে আইসোথিয়ো কাইনেটস নামের উচ্চমাত্রার অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট থাকে। এটি ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। হজমের সমস্যা কমাতে সাহায্যে করে।
- উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সজনে ফুল ও ডাঁটা। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম আছে।
- পুরুষত্বহীনতা দূর করতে সজনে ডাঁটা ও পাতার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় নেয়।
- সমপরিমাণ গাজরের থেকে ৪ গুণ বেশি ভিটামিন-এ আছে সজনে পাতায়। দৃষ্টি শক্তি উজ্জ্বল করতে ও চোখের অসুখ প্রতিরোধ করতে পারে সজনে পাতা ও ডাঁটা।
- জরায়ুর ফাইব্রয়েড কমাতে, ঋতু শুরুর আগে পেটের পেশির টান ধরা কমাতে ডায়েটে রাখুন অল্প সজনে ডাঁটা।
- ক্যানসার যুক্ত টিউমারের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে পারে এটি।
সজনে ডাঁটা সব সময় পাওয়া না গেলেও পাতা পাওয়া যায়। কিন্তু এই পাতা ততটাও জনপ্রিয় নয়। ডাল, ঝোল কিংবা স্যুপ— সব রান্নাতেই অল্প সজনে পাতা যোগ করলে, সামগ্রিক ভাবে ভাল থাকতে পারবেন।