বে ড সাইড টেবল, অফিস ডেস্কের ল্যাপটপ কর্নার, বসার ঘরের সেন্টার টেবল কিংবা বইয়ের তাকের এক পাশ সাজিয়ে তুলতে চাইলে সবুজের মতো ভাল অপশন দ্বিতীয়টি আর নেই। অফিসের টেবল-টপ হোক কিংবা ঘরের রিডিং টেবলের এক কোণ, ছোট ছোট টবে লাগানো মিনি প্লান্ট দিয়ে তা সাজিয়ে তোলা যায় অনায়াসেই। একে তো ছোট, ফলে জায়গা বেশি লাগে না। আবার দেখতেও সুন্দর হয়। সে সব টবে আবার একটু ডিআইওয়াই (ডু ইট ইয়োরসেলফ) টাচ থাকলে বা টবের বদলে কাচের বয়াম বা জার হলে তা আলাদা মাত্রাও পাবে। কম জায়গায় কী ধরনের গাছ লাগানো যেতে পারে, কী ভাবেই বা তা সাজিয়ে তুলবেন, জেনে নিন আগে।
প্রাথমিক গাছ বাছাই
এই ধরনের ডেকরের ক্ষেত্রে প্রথমেই মাথায় রাখা জরুরি, যে গাছই লাগাবেন, তা আকারে ছোট হওয়া প্রয়োজন। ছোট ছোট টবে পিস লিলি, লাকি ব্যাম্বু, স্নেক প্লান্ট, স্পাইডার প্লান্টের মতো গাছ রাখতে পারেন আপনার অফিস ডেস্কে। এই গাছগুলির বেশির ভাগই এয়ার পিউরিফায়ারও বটে। অ্যান্থেরিয়ামের মতো ইনডোর প্লান্ট সাদামাঠা অফিস কিউবিকলে ফ্রেশ লুক এনে দেয়। নির্দিষ্ট সময় অন্তর জল দেওয়া আর মাঝে মাঝে একটু আলো-বাতাসে রাখা... যত্ন বলতে এটুকুই। সরষের খোল জাতীয় অর্গ্যানিক সার সামান্য পরিমাণে ব্যবহার করতে পারেন। বিভিন্ন নার্সারি এবং গাছের বাজার যেমন গ্যালিফ স্ট্রিট, শিয়ালদহ, নিউ মার্কেট, গড়িয়াহাট, দমদম চত্বরে পেতে পারেন। এমনকি অনলাইনেও এই ধরনের মিনি ইনডোর প্লান্টের অনেক অপশন পেয়ে যাবেন।
গাছ অনুযায়ী টব
যে টবে গাছটি লাগানো হচ্ছে সেই টব হতে হবে বাহারি, গাছের পাতার মতোই। টেরা কোটা বা সেরামিকের ছোট পটে সাকিউলেন্ট জাতীয় গাছ লাগাতে পারেন। কাচের পটে করতে পারেন সুন্দর সুন্দর বনসাই। আবার জায়গা কম থাকলে হ্যাঙ্গিং কেজের ভিতরে গাছ লাগান। কেজগুলি হতে পারে সাদা অথবা রঙিন। দেওয়ালে অনেকটা ফাঁকা জায়গা থাকলে ওয়াল মাউন্টেড প্লান্টের কথাও ভাবতে পারেন। ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক জার, ওয়াটার বটল কিংবা কাচের বোতলেও গাছ করা যেতে পারে। তুলি বুলিয়ে নিলেই তা দেখতে সুন্দর লাগবে। একটু চওড়া ওয়াইন গ্লাস কিংবা গ্লাস বোলের ভিতরে নুড়ি, বালি ফেলে ছোট্ট ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা যায়। যে ডেস্কেই রাখা হবে, ভোল পাল্টে যাবে তার।
সাজিয়ে তোলার হরেক রকম
যে গাছই লাগান, যথাযথ ভাবে সাজিয়ে তুললে তবেই চোখ টানবে তা। বেসিল, থাইম, ল্যাভেন্ডার জাতীয় গাছ টবে লাগালে সাদা রং বা চক পেন্ট করে তার উপরে লেবেলিং করে নিতে পারেন। কুরুশের কাজ করা কভার দিয়ে মুড়ে দিতে পারেন ছোট টব। রাইস লাইট কিংবা রঙিন মোমবাতি দিয়ে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে তুলতে পারেন ভাস। হ্যাঙ্গিং অথবা স্টেয়ার শেলফে রাখা টবে ঝুলিয়ে দিতে পারেন মিনি লাইট চেন। ক্যাকটাস বা সাকিউলেন্টের টব ভরিয়ে তুলুন রঙিন নুড়ি দিয়ে। কাচের বোতলের একেবারে তলায় স্ট্রিং এলইডি লাইট ভরে উপরের অংশে গাছ করতে পারেন। আঁকার হাত ভাল হলে রাস্টি লুকের মাটির পটে ফুটিয়ে তুলুন পছন্দের ডিজ়াইন।
ক্রাফট গ্লু আর গ্লিটার দিয়েও একটি সাধারণ ফ্লাওয়ার ভাসকে সুন্দর করে তোলা যায়। দেওয়ালটিকে ব্যবহার করে জিয়োমেট্রিক প্যাটার্নের ভাস লাগাতে পারেন।
বাড়িতে ফেলে রাখা জিনিসপত্রই রিসাইকল করে ব্যবহার করতে পারেন গাছ করার পাত্র হিসেবে। রান্নাঘর থেকে জোগাড় করুন কাচের বয়াম, পুরনো কফিমাগ, কানা উঁচু ট্রে, আইসক্রিম জার, কুকিজ় বা কেকের টিনের রঙিন বাক্স। সেগুলি ব্যবহার করুন টব হিসেবে।
ফেলে দেওয়া মার্বেলের টুকরো জোড়া দিয়েও বানিয়ে ফেলা যায় গাছ রাখার আধার। ইদানীং অনলাইনে অন্য ধরনের টবের অপশন পাওয়া যায় দেদার। সেখান থেকেও বেছে নিতে পারেন।
টবের নুড়ির উপরে গাছের গোড়ায় দু’চারটে ফিগারিন বসিয়ে দিতে পারেন।
চোখের আরাম আর মন ভাল করে দিতে গাছের জুড়ি নেই। তাই বাড়ি হোক কিংবা অফিস, বাহারি ইনডোর প্লান্ট দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার সময় কাটানোর জায়গাটি।